Published : 11 Jun 2025, 07:48 PM
ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহরকে বিক্ষোভকারীদের সহিংসতা থেকে মুক্ত করতে ন্যাশনাল গার্ড ও মেরিন সেনা পাঠিয়েছেন বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
কিন্তু শহরের সবচেয়ে বেশি বিক্ষোভ-সহিংসতা বিক্ষুব্ধ এলাকা লিটল টোকিওর বাসিন্দারা বলছেন, “দরকার নেই, ধন্যবাদ মিস্টার প্রেসিডেন্ট।”
জাপানি রেস্তোরাঁ আর দোকানে ইংরেজির মতোই জাপানি ভাষা শোনা যায় লিটল টোকিওতে।
সেখানকার এক ডজন বাসিন্দা, কর্মী এবং নিয়মিত যাতায়াতকারীরা মঙ্গলবার রয়টার্সকে বলেছেন,অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক অভিযান ঘিরে বিক্ষোভ আরও তীব্র করেছে ট্রাম্পের এই সেনা মোতায়েন।
“ন্যাশনাল গার্ড ও মেরিন সেনা পাঠানো পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করেছে। এতে বিক্ষোভকারীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে,” বলেন ২৫ বছর বয়সী সুলিয়েতি হাভিলি।
তিনি লিটল টোকিওর কাছাকাছি থাকেন এবং ৬ হাজার সদস্যের একটি পোকেমন ক্লাব চালান। হাভিলি বলেন, সেনা মোতায়েন যে কেবল বিক্ষোভকারীদের আরও উত্তেজিত করেছে, তা পরিষ্কার।
তার সহকর্মী, ৪২ বছর বয়সী নলবার্তো আগুইলারও বলেন, “ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ লস অ্যাঞ্জেলেসের সাধারণ মানুষ এবং স্থানীয় নেতৃত্বের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গেছে।”
তিনি বলেন, “সেনা মোতায়েন আসলে আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করেছে।” ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, অবৈধভাবে বাস করা ব্যক্তিদের ধরতেই এই অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম সতর্ক করে বলেছেন, “এই পদক্ষেপ একটি বিস্ফোরণোন্মুখ পরিস্থিতিকে আরও জ্বালিয়ে দিয়েছে। গণতন্ত্র এখন আক্রমণের মুখে।”
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র ক্যারেন বাস বলেছেন, “ট্রাম্পের উদ্দেশ্য বিশৃঙ্খলা তৈরি করা।” ট্রাম্প প্রশাসন অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের ভাষ্য, স্থানীয় ও রাজ্য সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়াতেই তারা হস্তক্ষেপ করেছে।
জাপানি পণ্য ও সুশির জন্য পরিচিত লিটল টোকিও লাগোয়া ফেডারেল ভবনগুলোতেই পাঁচ রাত ধরে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হচ্ছেন।
গত দুই রাতে পুলিশ ও ন্যাশনাল গার্ড তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার পর ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বিক্ষোভকারীরা আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছেন। লিটল টোকিওজুড়ে দেখা যাচ্ছে মার্কিন অভিবাসন ও শুল্ক দপ্তর ‘আইসিই’ ও ট্রাম্পবিরোধী গ্রাফিতি।
অনেকে রয়টার্সকে বলেন, তারা নাম প্রকাশ করতে চান না, কারণ তারা ফেডারেল প্রতিশোধের আশঙ্কা করছেন। অনেকেই অভিবাসী, বা তাদের পরিবারের সদস্যদের কেউ বিদেশে জন্মেছেন, ফলে তারা মনে করছেন প্রকাশ্যে কিছু বললে আইসিই-এর নজরে পড়ে যেতে পারেন।