Published : 29 May 2025, 03:47 PM
যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলে জোরাল পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
তাদের নিশানায় থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, এবং সংবেদনশীল বিষয়ে পড়ুয়ারাও আছেন, বুধবার বলেছেন তিনি।
তার এ সিদ্ধান্ত যদি যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত লাখ লাখ চীনা শিক্ষার্থীর বৃহত্তর অংশের ওপর কার্যকর হয়, তাহলে তা একদিকে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আয়ের উৎসে বড় ধাক্কা দেবে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও প্রতিভাবান কর্মীর পাইপলাইন হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে, বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তাদের কট্টর অভিবাসন এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিস্তৃত প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার ও শিক্ষার্থী ভিসা বাতিলের মতো পদক্ষেপগুলোতে গতি আনার চেষ্টা করছে। তার অংশ হিসেবে এবার চীনা শিক্ষার্থীদের নিশানা বানানোর এই পরিকল্পনা।
এক বিবৃতিতে রুবিও বলেছেন, ভবিষ্যতে চীন ও হংকং থেকে সকল ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাই জোরদারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিসার মানদণ্ডেও পরিবর্তন আনবে।
“চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলে জোরাল পদক্ষেপ নিতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়,” বলেছেন তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ ঘোষণার বিষয়ে ওয়াশিংটনের চীন দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি ক্ষমতা বাতিলে পদক্ষেপ নেওয়ার পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘বিদেশে অধ্যয়নরত চীনা শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ়ভাবে কাজ করার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। হার্ভার্ডের বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই চীনের নাগরিক।
রুবিওর এই সিদ্ধান্ত কী আকারে কার্যকর হবে তা স্পষ্ট নয়। যদি ক্ষুদ্র আকারেও বাস্তবায়িত হয়, তাও তা যুক্তরাষ্ট্রে চীনা শিক্ষার্থীদের প্রবাহে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৭০ হাজার, ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়ায় ২ লাখ ৭৭ হাজারে। যুক্তরাষ্ট্র-চীন বৈরিতা, মার্কিন ভিসার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি এবং কোভিড মহামারীর কারণেই সংখ্যার এই ক্রমাবনতি বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
রুবিওর ঘোষণার পর সামনের বছরগুলোতে এই সংখ্যা আরও কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
ট্রাম্প এখন যে বাণিজ্য যুদ্ধ উসকে দিচ্ছেন, তার কেন্দ্রেও রয়েছে চীন। বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ বিশ্ব বাণিজ্যকে ওলট-পালট করে দিয়েছিল। তবে দুই দেশ আপাতত তাদের বাণিজ্য যুদ্ধে খানিক বিরতি দিয়ে রেখেছে। তার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা নিয়ে এ সিদ্ধান্ত জানালো।
যুক্তরাষ্ট্রে যত বিদেশি শিক্ষার্থী আছে তার ৫৪ শতাংশই ভারত ও চীনের নাগরিক। ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের অবদান ৫ হাজার কোটি ডলারের বেশি ছিল বলে জানাচ্ছে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।