Published : 08 May 2025, 02:43 PM
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহতের বদলায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একাধিক জায়গায় ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরদিনও বৈরি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সীমান্ত থাকা রাজ্য রাজস্থান ও পাঞ্জাবে সতর্ক অবস্থা বিরাজ করছে।
ইসলামাবাদের দিকে থেকে প্রত্যাঘাতের আশঙ্কায় রাজ্যদুটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নানান প্রস্তুতি নিয়েছে; সকল পুলিশ সদস্যের ছুটি বাতিলের পাশাপাশি জনসমাগমেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
এর মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে এক হাজার ৩৭ কিলোমিটার সীমান্ত থাকা রাজস্থান আছে সর্বোচ্চ সতর্কবস্থায়।
ভারতের উত্তরের এ রাজ্যটি তাদের সীমান্ত পুরোপুরি সিল করে দিয়েছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের সদস্যদেরকে সন্দেহজনক যে কোনো কর্মকাণ্ডে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা বাদে সীমান্ত এলাকার আশেপাশে লোকজনের চলাচলেও কর্তৃপক্ষ বিধিনিষেধ জারি করেছে।
ভারতের বিমানবাহিনী রয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কবস্থায়। পশ্চিমাঞ্চলের আকাশে যুদ্ধবিমান টহল দেওয়ায় যোধপুর, কিশানগড় ও বিকানের বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট চলাচল ৯ মে পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনাও সক্রিয় করা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।
গঙ্গানগর থেকে রান অব কচ্ছ পর্যন্ত আকাশে টহল দিচ্ছে সুখোই-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান। বিকানের, শ্রী গঙ্গানগর, জয়সালমির ও বারমের জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পুলিশ ও রেলওয়ে কর্মীদের ছুটি বাতিল হয়েছে।
সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে জারি রয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা, যে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে।
সীমান্তের কাছে ড্রোন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনাও সক্রিয় করা হয়েছে। জয়সালমির ও যোধপুরে মধ্যরাত থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত ব্ল্যাকআউট বা বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ব্ল্যাকআউট অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উচ্চ-গতির যুদ্ধবিমানের জন্য সমস্য সৃষ্টি করে, বিমানগুলোর চালকদের পক্ষে লক্ষ্যে আঘাত হানা কঠিন হয়ে যায়।
পাঞ্জাবেও সব পুলিশ সদস্যের ছুটি বাতিল হয়েছে, জনসমাগমে দেওয়া হয়েছে বিধিনিষেধ।
সীমান্তে উত্তেজনা বজায় থাকায় রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান সকল সরকারি কর্মসূচি বাতিল ঘোষণা করেছেন।
গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বেসামরিক পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার বদলা নিতে ভারত বুধবার প্রথম প্রহরে পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একাধিক স্থানে তাদের ভাষায় ‘সন্ত্রাসী আস্তানায়’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনায় কোনো হামলা চালানো হয়নি দাবি করে নয়া দিল্লি বলছে, ‘অপারেশন সিঁদুরে’ যে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে সবই পড়েছে সন্ত্রাসীদের রিক্রুটিং সেন্টার, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও অস্ত্র ভাণ্ডারে, যা ভারতে তাদের পরবর্তী হামলার সক্ষমতা কমিয়ে দেবে।
তবে ইসলামাবাদ এ ভাষ্য মানতে নারাজ। ভারতের হামলাকে তারা ‘সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত’ অ্যাখ্যা দিয়েছে, এর ‘সমুচিত জবাব’ দেওয়ারও হুঁশিয়ারি এসেছে তাদের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের মুখ থেকে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত তাদের ভূখণ্ডে আসা ভারতের ১২টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে; তবে অন্য একটি ড্রোনের বিস্ফোরণে ৪ সেনা আহত হয়েছে।