Published : 29 Mar 2025, 08:08 PM
নেপালের সাবেক রাজার সমর্থকদের এক সমাবেশে প্রাণঘাতী সহিংসতার ঘটনা ঘটার পর তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে দেশটির সরকার, শনিবার জানিয়েছেন এক মন্ত্রী। সমাবেশকারীরা দেশটিতে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চায়।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবারের ওই সহিংসতায় দুইজন নিহত ও ৭৭ জন নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ ১১২ জন আহত হয়েছেন।
সমাবেশ শেষে রাজতন্ত্রপন্থিরা পার্লামেন্ট ভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় মিছিলকারীরা পাথর নিক্ষেপ করতে শুরু করলে টিয়াস গ্যাস ও জলকামানা ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে, এরপর লাঠি চার্জ করে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, ক্ষুব্ধ মিছিলকারীরা ঘরবাড়ি, দোকান, হাসপাতাল, রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, গাড়ি ও বিপণীবিতানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে এবং পুলিশের একটি অস্ত্র ছিনিয়ে নেয়।
নেপালের যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী পৃথবী সুব্বা গুরুং রয়টার্সকে বলেন, “এটা নিছক ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও নৈরাজ্য। এটা কোনো প্রতিবাদ হতে পারে না।”
কাঠমাণ্ডুর প্রধান জেলা কর্মকর্তা ঋষিরাম তিওয়ারি জানান, কিছু রাজতন্ত্রপন্থি নেতাসহ ১০৫ জনকে আটক করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
সাবেক বামপন্থি মাওবাদী বিদ্রোহীদের সঙ্গে একটি চুক্তির অংশ হিসেবে ২০০৮ সালে বিশেষভাবে নির্বাচিত আইনসভা নেপালের ২৩৯ বছরের পুরনো রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে। ওই চুক্তির মাধ্যমে মাওবাদী বিদ্রোহেরও অবসান ঘটে। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চলা মাওবাদীদের লড়াইয়ে দেশটিতে ১৭ হাজার মানুষ নিহত হয়।
নেপালের শেষ রাজা জ্ঞানেন্দ্র বীর বিক্রম শাহ দেব (৭৭) একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে কাঠমাণ্ডুতে একটি বেসরকারি বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।
রাজতন্ত্রের অবসানের পর থেকে বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ নেপালে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। এ পর্যন্ত ১৪বার সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এতে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে আর বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত হচ্ছে।
একের পর এক সরকার পরিবর্তন হলেও প্রতিশ্রুতিমতো অর্থনৈতিক উন্নয়ন না হওয়ায় জনগণের হতাশা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নেপালের দুই প্রতিবেশী চীন ও ভারত, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ।