Published : 11 May 2025, 11:51 PM
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প আগামী সপ্তাহেই মধ্যপ্রাচ্যের তিন ধনী উপসাগরীয় আরব দেশ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারে চার দিনের সফরে যাবেন।
এই সফরে থাকার সময় ট্রাম্প ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দিতে পারেন, শোনা যাচ্ছে এমন গুঞ্জন। অন্তত উপসাগরীয় কয়েকটি সূত্রে এমনটিই দাবি করা হচ্ছে।
‘দ্য জেরুজালেম পোস্ট’ পত্রিকা জানায়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনৈতিক সূত্র মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম 'মিডিয়া লাইন' কে বলেছেন, “ট্রাম্প ফিলিস্তিন রাষ্ট্র এবং এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে একটি ঘোষণা দেবেন।
“তার এ ঘোষণা অনুযায়ী, ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের উপস্থিতি ছাড়া একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পাবে।”
ট্রাম্প আগামী মঙ্গলবার সৌদি আরবে যাবেন। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠেয় উপসাগরীয়-মার্কিন শীর্ষ সম্মেলনে ট্রাম্প ফিলিস্তিনকে এই স্বীকৃতি দিতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।
গত ৬ মে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে বৈঠকের সময় ট্রাম্প ‘আগামী দিনগুলোতে বড় একটি ঘোষণা’ দেবেন বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার মধ্যে এ প্রতিবেদন প্রকাশ হল।
মধ্যপ্রাচ্য সফরকে সামনে রেখে ট্রাম্প একথা বলেছিলেন, যদিও সেই ঘোষণাটি কি হবে তা খোলাসা করেননি তিনি। তার সেই কথাকে ঘিরেই সৌদি আরব সফরের আগে দিয়ে এই জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে।
সৌদি আরব-ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ বিষয়ক‘আব্রাহাম চুক্তি’ সম্প্রসারণ করতে ট্রাম্প ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দিতে পারেন কিনা সামনে আসছে সে প্রশ্নও।
মধ্যপ্রাচ্যের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কূটনৈতিক সূত্র বলেছেন, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতির ঘোষণা যদি যুক্তরাষ্ট্র দেয়, তা হবে ট্রাম্পের নীতির একটি বড় পরিবর্তন। আব্রাহাম চুক্তি সম্প্রসারণের পথ প্রশস্ত করতেও এটি হবে একটি কৌশলগত পদক্ষেপ।
কারণ, ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত ওই ঘোষণা হবে মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য বদলে দেওয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এতে আরও অনেক বেশি দেশ আব্রাহাম চুক্তিতে সামিল হবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধবিরতি করতে আগ্রহ না দেখানোয় ট্রাম্প ক্রমেই হতাশ হয়ে পড়ছেন- এমন কিছু খবরের মাঝে ফিলিস্তিনকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার গুঞ্জন জোরাল হয়েছে।
তবে স্যোশাল মিডিয়া এক্সে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি এমন জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার খবর ‘বাজে কথা’।
সৌদি আরব-ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টারে কথা বহুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। তবে ২০২৩ সালে গাজায় যুদ্ধ শুরুর কারণে সে চেষ্টা থমকে গেছে। ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি না দেওয়া হলে সৌদি আরব ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে।
ট্রাম্পের সৌদি আরব সফরকালে কেবল ফিলিস্তিনই নয়,উপসাগরীয়-মার্কিন শীর্ষ সম্মেলনের আলোচ্যসূচি এবং যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি আরবের মধ্যে নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সামরিক ও প্রযুক্তিক্ষেত্রে কী কী চুক্তি ও সমঝোতা হতে পারে তা নিয়েও চলছে বিস্তর জল্পনা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প এই প্রথম সৌদি আরবে যাচ্ছেন। সেখানে সফর শেষের পর তিনি যাবেন কাতারে এবং তারপর যাবেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে।