Published : 19 May 2025, 11:45 AM
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফুটবলবিষয়ক অনুষ্ঠান ম্যাচ অব দ্য ডে-র উপস্থাপক, সাবেক ইংলিশ ফুটবলার গ্যারি লিনেকার বিবিসি ছাড়ছেন বলে খবর বেরিয়েছে।
সোমবার এ সংক্রান্ত ঘোষণা আসতে পারে বলে বিবিসিরই এক প্রতিবেদনে ধারণা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার রাতে শেষবার ম্যাচ অব দ্য ডে-র উপস্থাপনা করবেন এবং এর পরই ৬৪ বছর বয়সী সাবেক এ স্ট্রাইকারের সঙ্গে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে বলে গুঞ্জন রয়েছে।
এ বছরের শেষে ম্যাচ অব দ্য ডে ছাড়বেন বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন বিবিসির সর্বোচ্চ বেতনভুক্ত উপস্থাপকের তালিকায় থাকা লিনেকার। তা সত্ত্বেও সামনের মৌসুমের এফএ কাপ এবং ২০২৬ এর বিশ্বকাপে সংবাদমাধ্যমটির কভারেজের প্রধান মুখ হিসেবে তারই থাকার কথা ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জায়নবাদ সংক্রান্ত এক পোস্ট শেয়ার করার জন্য দিনকয়েক আগেই তিনি ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়েছিলেন। ওই পোস্টটিতে ইঁদুরের ইলাস্ট্রেশন ছিল, অতীতে এই ধরনের ছবি ‘ইহুদিবিদ্বেষী প্রচারণায়’ ব্যবহৃত হতো।
লিনেকার পরে বলেন, জেনেশুনে তিনি কখনোই ইহুদিবিদ্বেষী কোনো কিছু শেয়ার করতেন না, আর ছবির প্রতীকী অর্থ সম্বন্ধে জানতে পারার পরপরই তিনি ওই পোস্ট ডিলিট করে দেন।
এ নিয়ে বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি বলেন, “বিবিসির সুনাম রক্ষার দায়িত্ব সবার, যখনই কেউ ভুল করে, তার খেসারত আমাদের সবাইকে দিতে হয়।”
বিবিসি লিখেছে, লিনেকারকে ধরে রাখা যে যাচ্ছে না, বিবিসির কর্তারা সেটা বুঝতে পেরেছিলেন বলেই মনে হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টের জন্য আগেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের হয়ে ৮০টি ম্যাচ খেলা লিনেকারকে।
‘পক্ষপাত’ সংক্রান্ত এক বিতর্কের রেশ ধরে ২০২৩ সালের মার্চে বিবিসি থেকে সাময়িক বহিস্কারও হয়ছিলেন তিনি।
সেবার টুইটারে তিনি লিখেছিলেন, সরকারের এক নীতিতে আশ্রয়প্রার্থীদের নিয়ে যে ভাষা ব্যবহার হয়েছে তার সঙ্গে ‘১৯৩০ এর দিকে জার্মানির ব্যবহৃত ভাষার খুব একটা পার্থক্য নেই’।
পরে বিবিসির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নীতি পুনরায় লেখা হয়, এবং ‘বিবিসির নিরপেক্ষতা’ নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা অনুষ্ঠান উপস্থাপকদেরও যে দায়িত্ব রয়েছে তা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।
গত বছরের নভেম্বরে লিনেকার চলতি মৌসুম শেষে ম্যাচ অব দ্য ডে ছেড়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। ফুটবলবিষয়ক জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠান ছাড়লেও এফএ কাপ এবং বিশ্বকাপের কভারেজে থাকবেন বলে তিনি ভক্তদের আশ্বস্তও করেন।
চলতি বছরের শুরুর দিকে এক সাক্ষাৎকার সাবেক এ ইংলিশ ফুটবলার বলেন, গত বছর নতুন চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার সময় তার মনে হয়েছিল, বিবিসিই চায় তিনি যেন ম্যাচ অব দ্য ডে থেকে সরে দাঁড়ান।
এই ব্যাপারে তখন বিবিসি কোনো মন্তব্য না করে লিনেকারকে ‘বিশ্বখ্যাত উপস্থাপক’ হিসেবে অভিহিত করেছিল এবং বলেছিল, দর্শকের পরিবর্তিত অভ্যাসের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে ম্যাচ অব দ্য ডে-ও ক্রমাগত রূপ বদলাচ্ছে।
লিনেকার এখন পর্যন্ত তার বিবিসি ছেড়ে যাওয়া নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি।
গত মাসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ২০২৩ সালের ওই টুইটের জন্য তিনি মোটেও অনুতপ্ত নন।
“পেছনে তাকিয়ে ভাবলে, আমি কী ফের একই কাজ করতাম? না, করতাম না, কারণ এর ফলে নানান উল্টোপাল্টা জিনিস হয়েছিল,” বলেছেন তিনি।
বিবিসির অমল রাজনের সঙ্গে আলাপচারিতায় ক্যারিয়ারে পরবর্তীতে ‘টেলিভিশন থেকে খানিকটা দূরে থাকারও’ ইঙ্গিত দিয়েছেন লিনেকার।
“আমার মনে হয়, আমি খানিকটা দূরে থাকবো। সম্ভবত পডকাস্ট জগতে বেশি মনোযোগী হবো,” বলেছিলেন তিনি।