Published : 19 Mar 2025, 06:22 PM
মার্কিন এক ফেডারেল বিচারক যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বৈদেশিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধে ধনকুবের ইলন মাস্ক ও তার নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির (ডিওজিই) নতুন যে কোনো পদক্ষেপ আটকানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
বিদেশে সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে থাকা এ সংস্থা বন্ধে মাস্ক ও ডিওজিই-র প্রচেষ্টা খুব সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানও লঙ্ঘন করেছে, মঙ্গলবার দেওয়া আদেশে মেরিল্যান্ডের ডিস্ট্রিক্ট বিচারক থিওডর চুয়াং এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রাথমিক আদেশে তিনি বাধ্যতামূলক ছুটিতে থাকা হাজারো কর্মীসহ সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত ও চুক্তিভিত্তিক সব কর্মীকে ইউএসএআইডির কম্পিউটার সিস্টেমে ঢুকতে দিতে টেসলাপ্রধান ও তার নেতৃত্বাধীন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সিকে (ডিওজিই) নির্দেশও দিয়েছেন।
ইউএসএআইডির কার্যক্রম গুটিয়ে আনতে ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলছে। তার মধ্যে একটিতে বাদী সংস্থাটির সাবেক-বর্তমান অনেক কর্মী, মঙ্গলবার সেই মামলায় প্রাথমিক আদেশে চুয়াং ইউএসএআইডিতে মাস্ক ও ডিওজিই-র খবরদারি নিয়ন্ত্রণে এ নির্দেশ দেন।
“আজকের সিদ্ধান্ত ইউএসএআইডি, মার্কিন সরকার ও সংবিধানের ওপর ইলন মাস্ক ও ডিওজিইর আক্রমণের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ এক বিজয়,” বলেছেন মামলায় নামপরিচয় গোপন রাখা ২৬ বিবাদীর প্রতিনিধিত্ব করা আইনজীবী, স্টেট ডেমোক্রেসি ডিফেন্ডারস ফান্ডের প্রধান নির্বাহী নর্ম আইজেন।
পরে এক প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বলেছেন, তার প্রশাসন চুয়াংয়ের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবে।
দ্য ইনগ্রাহাম এঙ্গেল অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমরা যে এর বিরুদ্ধে আপিল করবো আপনাদের সেই নিশ্চয়তা দিচ্ছি। আমাদের কিছু বদমাশ বিচারক আছে যারা দেশকে ধ্বংস করছেন।”
হোয়াইট হাউজে ফেরার প্রথম দিনই রিপাবলিকান ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব সহায়তা স্থগিত ঘোষণা করেন এবং এসব সহায়তা কর্মসূচির কোনগুলো তার প্রশাসনের ‘আমেরিকা নীতির’ সঙ্গে যায় তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন।
এর কিছুদিন পরেই মাস্ক ও ডিওজিই ইউএসএআইডির পেমেন্ট ও ইমেইল ব্যবস্থাপনায় প্রবেশাধিকার পায়। পরে তারা সংস্থাটির বেশিরভাগ বিল পরিশোধ স্থগিত ঘোষণা করে, অধিকাংশ কর্মীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায়।
এর প্রতিক্রিয়ায় ১৩ ফেব্রুয়ারি করা মামলায় বাদীরা অভিযোগ করেন, মাস্ক ইউএসএআইডি কার্যত দখল নিয়েছেন এবং তিনি এমন এক কর্মকর্তার মতো দায়িত্ব পালন করছেন, যিনি কিনা প্রেসিডেন্টের মনোনয়নপ্রাপ্ত এবং সেনেট সেই মনোনয়নে সম্মতি দিয়েছে।
কিন্তু মাস্কের নিয়োগের ক্ষেত্রে সেনেটের কোনো ভূমিকা না থাকায় টেসলাপ্রধান তাকে দেওয়া কর্তৃত্বের বাইরে ক্ষমতার চর্চা করছেন এবং কংগ্রেসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত একটি প্রতিষ্ঠান কার্যত বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টার মাধ্যমে সংবিধান লঙ্ঘন করছেন, ভাষ্য বাদীপক্ষের।
ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারক চুয়াংও প্রাথমিকভাবে এই ভাষ্যকে সমর্থন করে বলেছেন, “মাস্ক ও ডিওজিই সম্ভবত নানাভাবে মার্কিন সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন, তাদের পদক্ষেপ কেবল বাদীদেরই ক্ষতি করেনি, জনসাধারণের স্বার্থহানিও হয়েছে।”
অন্যদিকে মাস্ক ও ডিওজিই বলছে, মাস্ক মূলত ট্রাম্পের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন, আর বাদীরা যেসব পদক্ষেপের কথা বলছেন, সেগুলো নিয়েছে ইউএসএআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাই, ডিওজিই-র কর্মকর্তারা নন।