Published : 11 Oct 2022, 06:23 PM
ঢাকার পল্লবীতে ব্যবসায়ী সাহিনুদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দিতে আরও সময় পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন।
মঙ্গলবার এই পুনঃতদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমার তারিখ থাকলেও তদন্ত কর্মকর্তা তা দিতে না পারায় ঢাকার মহানগর হাকিম মামুনুর রহমান ছিদ্দিকী ১৫ নভেম্বর নতুন তারিখ ঠিক করে দেন।
লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি এমএ আউয়ালসহ ১৫ জনকে আসামি করে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ ইফতেখার হোসেন।
কিন্তু সাহিনুদ্দিনের মা আকলিমা বেগমের আপত্তিতে ১২ মে পিবিআইকে মামলাটি পুনরায় তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয় আদালত।
প্রথম অভিযোগপত্রে আউয়াল ছাড়াও সুমন বেপারী, মোহাম্মদ তাহের, মো. গোলাম কিবরিয়া খান, মোহাম্মদ মুরাদ, টিটু শেখ ওরফে টিটু, মোহাম্মদ রকি তালুকদার, নূর মোহাম্মদ হাসান, মোহাম্মদ শরীফ, ইকবাল হোসেন, মো. তরিকুল ইসলাম ইমন, তুহিন মিয়া, মো. হারুনুর রশিদ, মো. শফিকুল ইসলাম শফিক ও ইব্রাহিম সুমনকে আসামি করা হয়।
এই আসামিদের মধ্যে সুমন ও শফিকুল ছাড়া বাকিরা কারাগারে; তাদের মধ্যে ৯ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০২১ সালের ১৬ মে সাহিনুদ্দিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে ওই দিন রাতেই সাহিনুদ্দিনের মা আকলিমা বেগম পল্লবী থানায় আউয়ালসহ ২০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এমএ আউয়ালকে সেখানে প্রধান আসামি করা হয়।
পল্লবীর উত্তর কালশীর সিরামিক এলাকার বাসিন্দা আকলিমার দুই ছেলের মধ্যে সাহিনুদ্দিন ছিলেন ছোট। বাউনিয়া মৌজার উত্তর কালশীর বুড়িরটেকের আলীনগর আবাসিক এলাকায় ১০ একর জমি রেখে যান আকলিমার প্রয়াত স্বামী। সেই জমি দখল করতেই তার সন্তানকে খুন করা হয়েছে বলে আকলিমা তখন অভিযোগ করেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, ওই জমি দখলের চেষ্টা করে আসছিলেন হাভেলি প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের মালিক, লক্ষ্মীপুরের সাবেক এমপি এমএ আউয়াল, যিনি ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান ও ত্বরীকত ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব।
মামলার পর আউয়ালকে ভৈরবের একটি মাজার থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পাশাপাশি আরও ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এছাড়া মামলার দুই আসামি কথিত বন্দুকযুদ্ধেও নিহত হন।
মামলার এজাহারে আকলিমা বেগম বলেন, ২০২১ সালের ১৬ মে বিকেল ৪টার দিকে সুমন ও টিটু নামের দুই যুবক সাহিনুদ্দিনকে জমির বিরোধ মেটানো হবে জানিয়ে ফোন করে ডেকে নেন। পল্লবীর ডি-ব্লকের ৩১ নম্বর সড়কের ৪০ নম্বর বাসার সামনে গেলে সুমন ও টিটুসহ ১৪ থেকে ১৫ জন মিলে তাকে টেনেহিঁচড়ে ওই বাড়ির গ্যারেজে নিয়ে যায়।
এ সময় তার ছয় বছরের ছেলে মাশরাফি গেটের বাইরে ছিল। গ্যারেজে ঢুকিয়ে সন্ত্রাসীরা চাপাতি, চায়নিজ কুড়াল, রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এরপর তাকে ওই গ্যারেজ থেকে বের করে ৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে আবারও কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে গেলে ওখানেই তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন:
সাহিনুদ্দিন হত্যার অভিযোগপত্রে আউয়ালসহ ১৫ জন আসামি
সাহিনুদ্দিন হত্যার আসামি মনিরও ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত
সাহিনুদ্দিন খুনের আসামি মানিক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত
গত বছর ছিল হত্যার চেষ্টা, এ বছর হত্যা
পল্লবীর হত্যা মামলায় সাবেক এমপি এম এ আউয়াল গ্রেপ্তার
পল্লবীতে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা