Published : 24 Jun 2025, 12:48 AM
রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে এবার নির্বাচন কমিশনে ১৪৭টি আবেদন জমা পড়েছে।
আবেদন করা এসব দলের নামে ‘জনতা’, ‘জনগণ’, ‘নাগরিক’, ‘বাংলাদেশ’— এসব শব্দের আধিক্য পাওয়া গেছে। আবেদন জমা পড়েছে ‘ভোটার পার্টি’ ও ‘সলুশন পার্টির’ মতো নামেও।
ইসির হালনাগাদ তালিকা অনুযায়ী, ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ৬৫টি আবেদন জমা পড়ে। আর ২১ এপ্রিল থেকে ২২ জুন পর্যন্ত জমা পড়ে ৮২টি।
নিবন্ধনের আবেদন করা দলগুলোর তালিকায় রয়েছে—বাংলাদেশ সংগ্রামী ভোটার পার্টি, মুসলিম জনতা পার্টি, নতুন প্রজন্ম পার্টি, ওয়ার্ল্ড মুসলিম কমিউনিটি, বাংলাদেশ নাগরিক দল-বিএনডি, ন্যাশনাল ফ্রিডম পার্টি, নতুন বাংলাদেশ পার্টি (এনবিপি), জাতীয় জনতা পার্টি, বাংলাদেশ সর্ব-স্বেচ্ছা উন্নয়ন দল, কোয়্যালিশন-ন্যাশন্যাল পার্টি (সিএনপি), জাস্টিস ফর হিউমিনিটি পার্টি ও বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ।
রাজনৈতিক নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করেছে বাংলাদেশ-তিসারী-ইনসাফ দল, বাংলাদেশ জনকল্যাণ পার্টি (বাজপা), বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি (বাজপ), বাংলাদেশ জনতা পার্টি-বিজেপি, বাংলাদেশ সোশাল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ আজাদী পার্টি-বিএপি, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ ইসলামিক জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট পার্টি (বিডিএম), বাংলাদেশ বেস্ট পলিটিক্যাল পার্টি (বিবিপিপি), মানবিক বাংলাদেশ পার্টি ও বাংলাদেশ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টিও (বিএসডিপি)।
১৪৭টি দলের মধ্যে বাংলাদেশ আজাদী পার্টি (বিএপি), বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি), গণদল, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা জনতা পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (বিএনডিপি), ডেমোক্রেটিক পার্টি (ডিপি), বাংলাদেশ গণবিপ্লবী পার্টি, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), জনতা পার্টি বাংলাদেশ (জেপিবি), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী ন্যাপ), বাংলাদেশ জনজোট পার্টি (বাজপা), জনতার দল, জাতীয় ন্যায় বিচার পার্টি, বাংলাদেশ সমতা পার্টি, বাংলাদেশ সিটিজেন পার্টি (বিসিপি), বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি (বিসিপি), বাংলাদেশ ইউনাইটেড পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-বিএনডিপি, বাংলাদেশ ইসলামী ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিআইডিপি), ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টি (আইজিপি), জাতীয় মুক্তি ফ্রন্ট দল-এনএফএফ ও বাংলাদেশ নাগরিক কমান্ডের নামও রয়েছে।
নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করেছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ফেডারেশন, নৈতিক সমাজ, বাংলাদেশ জাতীয় দল (বিজেডি), জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, বাংলাদেশ জাতীয় কৃষক শ্রমিক পার্টি, জনতা পার্টি বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বেকার সমাজ, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টি, ন্যাশনাল লেবার পার্টি, বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন, বাংলাদেশ জনগণের দল, বাংলাদেশ গ্রিন পার্টি, বাংলাদেশ পাবলিক এ্যাকশন পার্টি, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি, নাকফুল বাংলাদেশ, বাংলাদেশ গণঅধিকার পার্টি, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি, ভাষানী জনশক্তি পার্টি, নতুন ধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জনতা পার্টি ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টিও।
বাংলাদেশ সর্বজনীন দল, বাংলাদেশ একাত্তর পার্টি, স্বাধীন বাংলা পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস মুভমেন্ট, জাগ্রত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ দেশপ্রেমিক প্রজন্ম, বাংলাদেশ ডেমোক্রেসি মুভমেন্ট, বাংলাদেশ ছাত্রজনতা পার্টি, খেলাফত ইসলাম, বাংলাদেশ সংখ্যালঘু অধিকার, বাংলাদেশ সলুশন পার্টি, বাংলাদেশ সংগ্রামী ভোটার পার্টি, মুসলিম জনতা পার্টি, নতুন প্রজন্ম পার্টি, ওয়ার্ল্ড মুসলিম কমিউনিটি, বাংলাদেশ নাগরিক দল-বিএনডি, ন্যাশনাল ফ্রিডম পার্টি, জনতার বাংলাদেশ পার্টি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা পার্টি ও বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টিও নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করেছে।
এছাড়া বাংলাদেশ রক্ষণশীল সমাজ (বিসিপি), জনতা কংগ্রেস পার্টি, বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণময় পার্টি, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি (বাজাপা), বাংলাদেশ তৃণমূল জনতা পার্টি, বাংলাদেশ মুক্তি ঐক্যদল, বাংলাদেশ জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ নাগরিক আন্দোলন পার্টি, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা জনতা পার্টি, জাস্টিজ পার্টি বাংলাদেশ-জেপিবি, বাংলাদেশ জেনারেল পার্টি (বি. জি. পি), বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), বাংলাদেশ জনপ্রিয় পার্টি (বিপিপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-শাহজাহান সিরাজ), বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, বাংলাদেশ কৃষক পার্টি (কেএসপি), জনতার কথা বলে, ভাসানী শক্তি পার্টি, বাংলাদেশ ফরায়েজী আন্দোলন, বাংলাদেশ জনগণের দল (বাজদ), ফরোয়ার্ড পার্টি, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি ও স্বাধীন জনতা পার্টিও আবেদন করেছে।
আমজনতার দল, বাংলাদেশ শান্তির দল, সংবিধান বিষয়ক জনস্বার্থ পার্টি সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল), বাংলাদেশ গণঅভিযাত্রা দল, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি, ন্যাশনাল লেবার পার্টি (এনএলপি), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী ন্যাপ), জনতা মহাজোট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জনতার ঐক্য, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, নিউক্লিয়াস পার্টি, ইউনাইটেড বাংলাদেশ পার্টি ও বাংলাদেশ জাতীয় ভূমিহীন পার্টিও (বিএনএলপি) ইসির নিবন্ধন চেয়ে আবেদন করেছে।
বাংলাদেশ মাতৃভূমি দল, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-সিপিবি (এম), বাংলাদেশ পাক পাঞ্জাতন পার্টি (বিপিপি), সাধারণ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), ন্যাপ ভাসানী, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন, বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি), জাতীয় পেশাজীবী দল (এসপিপি), বাংলাদেশ জনতা ফ্রন্ট (বি. জে. এফ.), বাংলাদেশ জাতীয় ইনসাফ পার্টি, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি-ডিসিপি, ন্যাশনাল রিপাবলিকান পার্টি, বাংলাদেশ জনজোট পার্টি (বাজপা), বাংলাদেশ জনমত পার্টি, বাংলাদেশী জনগনের পার্টি, অহিংস গণ আন্দোলন, মুক্ত রাজনৈতিক আন্দোলন, জনতার বাংলাদেশ পার্টি, মৌলিক বাংলা, বাংলাদেশ জাস্টিস এন্ড ডেভোলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি ও মুসলিম সেভ ইউনিয়ন নামও আছে তালিকায়।
১০ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি দেয় ইসি। তাতে নতুন দল নিবন্ধনে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আবেদনের সময়সীমা ঠিক করে দেওয়া হয়। ওই সময়ের মধ্যে নিবন্ধন চেয়েছিল ৬৫টি দল।
আর নতুন আত্মপ্রকাশ করা এনসিপিসহ অনেক দল সময় বাড়াতে আবেদন করে। পরে নিবন্ধন আবেদনের সময় আরও দুই মাস বাড়িয়ে ২২ জুন পর্যন্ত করা হয়।
নিবন্ধন যেভাবে
রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে ১০টি তথ্য আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হয়। নিবন্ধন ফি দিতে হয় ৫ হাজার টাকা, যা অফেরতযোগ্য।
দলীয় প্যাডে দরখাস্তের সঙ্গে দলের গঠনতন্ত্র, নির্বাচনী ইশতেহার (যদি থাকে), দলের বিধিমালা (যদি থাকে), দলের লোগো ও দলীয় পতাকার ছবি, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সব সদস্যের নামের তালিকা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সর্বশেষ স্থিতি, তহবিলের উৎস, দল নিবন্ধনের আবেদনকারীর ক্ষমতাপত্র, নিবন্ধন ফি বাবদ অফেরতযোগ্য ট্রেজারি চালানের কপি এবং নিবন্ধনের তিনটি শর্তের মধ্যে যে কোনো একটি পূরণের প্রমাণ জমার বিধান রয়েছে।
নতুন দলের নিবন্ধনের শর্ত হল– দলটির একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দেশের কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ [২১টি] প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি এবং সদস্য হিসেবে অন্তত ১০০টি উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানায় প্রত্যেকটিতে কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন সম্বলিত তালিকা লাগবে।
আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে টিকে থাকা দলগুলো নিবন্ধন শর্ত পূরণ করছে কিনা তা যাচাই করতে মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন নেবে কমিশন।
কোনো দলের নিবন্ধন নিয়ে কারও আপত্তি রয়েছে কি না তাও দেখা হবে।
বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর আপত্তি পেলে দুই পক্ষের শুনানি নিয়ে আবেদন মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করবে কমিশন।
প্রাথমিক বাছাইয়ে উৎরে গেলে এবং দাবি-আপত্তির নিষ্পত্তি হয়ে গেলে শেষধাপে নিবন্ধন সনদ পাবে সেই দল।
সবশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দুটি দল নিবন্ধন পায়। বর্তমানে ইসিতে ৫০টি দল নিবন্ধিত রয়েছে।
নতুন কোনো দল নিবন্ধন পেলে তাদের নিয়ে ত্রয়োদশ সংসদে নির্বাচন হবে।
দল নিবন্ধন: শেষ দিনে ইসিতে আবেদন জমার 'হিড়িক'
‘সংস্কারবাদী পার্টি’, ‘জনস্বার্থে বাংলাদেশ’, ‘বেকার সমাজ’ পেতে চায় দলের নিবন্ধন
নতুন দল নিবন্ধন: বিএনএম ও বিএসপির দাবি-আপত্তি শুনল ইসি
এনসিপি চায় 'শাপলা', চায় ইসির পুনর্গঠন
নতুন দল নিবন্ধনের আবেদন যাচাইয়ে কমিটি