Published : 04 Dec 2024, 12:36 AM
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে ভারতের শাসক গোষ্ঠী ‘সংখ্যালঘুর বিষয়টিকে’ সামনে এনে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেছেন, “ভারতের শাসকগোষ্ঠী বিভাজনের রাজনীতি ও বাংলাদেশবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত। অথচ জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় কলকাতা ও দিল্লির ছাত্ররা আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনার নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। ভারতের এই গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ আমাদের বন্ধু।
“তবে ভারতের শাসকগোষ্ঠী এবং হিন্দুত্ববাদী শক্তিরা এ ধরনের গণতান্ত্রিক সম্পর্ক ও সম্প্রীতি চায় না। তারা বাংলাদেশের অভ্যুত্থান এবং এর ছাত্রদের রাজনৈতিক জাগরণকে হুমকি হিসেবে দেখে। ফলে তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে।”
বাংলাদেশে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার ও সহিংসতা এবং আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে হামলার ঘটনায় উত্তেজনার পরিস্থিতির মধ্যে মঙ্গলবার নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন নাহিদ।
পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসামের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “তবে ‘সংখ্যালঘু নিপীড়ন’ গল্প সাজিয়ে দিল্লি ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও জাতি-পুনর্নির্মাণ প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।
“শুরু থেকেই আমরা জোর দিয়ে আসছি যে, ভারত সরকারকে বিতাড়িত আওয়ামী লীগের চোখে বাংলাদেশ দেখা বন্ধ করতে হবে। ন্যায়, ন্যায্যতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে একটি নতুন সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে।”
বাংলাদেশ হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য পূর্ণ নাগরিকত্বের অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জানিয়ে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের আমলেই সংখ্যালঘুরা সর্বোচ্চ নিপীড়নের সম্মুখীন হয়েছিল, তবুও দিল্লি নিঃশর্তভাবে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিল। যদিও ভারত তার নিজ দেশের সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিপীড়নকারী দল আওয়ামী লীগকে আশ্রয় ও সমর্থন দিয়েছে।
“গণহত্যা ও শিশু হত্যার জন্য দায়ী পলাতক শেখ হাসিনাকে আশ্রয় ও ধারাবাহিক সহায়তা অব্যাহত রেখে ভারত সরকার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ক্ষুণ্ন করার ঝুঁকিতে রয়েছে। ভারতের স্থিতিশীলতা ও অখণ্ডতা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও অখণ্ডতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তা ভুলে গেলে চলবে না।”
ক্ষমতাসীন বিজেপি বাংলাদেশকে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করার চেষ্টা করছে- এমন অভিযোগ করা হয়েছে তথ্য উপদেষ্টার বিবৃতিতে।
আরও বলা হয়, “এমনটা হলে তা ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্য ক্ষতিকর হবে। বাংলাদেশবিরোধী ও মুসলিমবিরোধী রাজনীতি ভারতের জাতীয় স্বার্থে কাজ করবে না। তাই আমরা ভারতকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা, অপপ্রচার বন্ধ করে গণতন্ত্রের প্রতি সম্প্রীতি ও সম্মান বজায় রাখার আহ্বান জানাই।”