Published : 26 Nov 2024, 05:16 PM
দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে চলা অবস্থা রাতারাতি পাল্টে স্থিতিশীল জায়গায় আনা কঠিন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ অবশ্যই কঠোর হবে, তবে সেটা যেন নিপীড়কের ভূমিকায় না যায়, সেই প্রত্যাশাও করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে কথা বলছিলেন নাহিদ।
গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকদেরকে সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশ সদস্যদের অনুপস্থিতিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কার্যত ভেঙ্গে পড়ে। পরে অন্তর্বর্তী সরকারের নানা উদ্যোগে পুলিশ সদস্যরা কাজে ফিরলেও অবস্থার খুব একটা উন্নতি না হওয়ায় সমালোচনা উঠছে বিভিন্ন মহলে।
অস্থির এই সময়ে বিভিন্ন পক্ষ নানা দাবি নিয়ে রাস্তা অবরোধ, আন্দোলন, হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটালেও পুলিশকে খুব বেশি সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি।
সবশেষ ঢাকার কয়েকটি কলেজে হামলার ঘটনায় পুলিশের ‘নিষ্ক্রিয়’ ভূমিকার বিষয়ে সরকারের দুই উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, এসব ঘটনায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি হলে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারত। তাই বাধা দিলেও সংঘর্ষে জড়ায়নি তারা।
রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে উপদেষ্টা নাহিদ এ প্রসঙ্গে বলেন, “গত ১৬ বছরে একটা প্রশাসনিক ব্যবস্থা ছিল। সেটাকে রাতারাতি বদল করে একটা স্থিতিশীল জায়গায় নিয়ে আসা কঠিন। তবে মেট্রোপলিটন পুলিশকে গ্রামে ট্রান্সফার করা হয়েছে, মফস্বলের পুলিশ ঢাকায় আনা হয়েছে। তাদের গুছিয়ে উঠতে একটু সময় লাগবে।”
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে৷ আমরা পুলিশ ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে চাচ্ছি। আমরা বিপ্লব পরবর্তী অবস্থার মধ্যে আছি, এটা সবাইকে বুঝতে হবে। বিপ্লবের মধ্যেই ল অ্যান্ড অর্ডারের পরিবর্তন হয়। তবে সেটা তৈরি করতে কিছু দিন সময় লাগবে।
“পুলিশ অবশ্যই কঠোর হবে, তবে সেটা যেন নিপীড়কের ভূমিকায় না যায় সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
বিগত সময়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা কী ছিল, কারা জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েচিল, তা সুস্পষ্ট থাকা উচিত বলে মনে করেন তথ্য উপদেষ্টা।
“যদি কেউ ভুল করে থাকে কিংবা পরিস্থিতির শিকার হয় তাহলে তাকে ভুল স্বীকার করে মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। ৫ অগাস্টের পর কেউ যদি ভোল্ট পাল্টে ফেলে, এটাতো হওয়া উচিত নয়, তাকে সত্যটা স্বীকার করা উচিত। সত্যের মধ্যে দিয়ে আসলেই রিকনসিলিয়েশন সম্ভব।”
গণমাধ্যমের কাছ থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা সরকারকে অনেক তথ্য নিয়ে সহায়তাও করে।
সাংবাদিকদের ওয়েজবোর্ড প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “সাংবাদিকতা কিংবা সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন অংশীজন একসাথে ক্রিয়াশীল। এখানে অনেক পরস্পরবিরোধী অংশীজন থাকে। ওয়েজবোর্ডের কথা যদি বলি, তাহলে সম্পাদক, মালিক এবং রিপোর্টাররা একেক জন একেকটা পক্ষ নেবেন, সবাই মিলে এক জায়গায় আসতে হবে।”