Published : 12 May 2024, 08:58 PM
বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন ও পুষ্টি নিরাপত্তা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত এবার যুক্ত হল আন্তজার্তিক তথ্যভাণ্ডার ‘ফুড সিস্টেম ড্যাশবোর্ডে’।
এর মাধ্যমে দেশের খাদ্যশস্য উৎপাদন, মজুদ, আমদানি, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মূল্য, মুদ্রাস্ফীতি, অপুষ্টির হার, স্থূলতা এবং অসংক্রামক রোগসহ বিশদ তথ্য মিলবে সহজেই। বিশ্বের অন্যান্য দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে তুলনমূলক চিত্রও পাওয়া যাবে, যা খাদ্য ও পুষ্টি সংক্রান্ত গবেষণায় কাজে আসবে।
ঢাকার একটি হোটেলে রোববার ফুড সিস্টেম ড্যাশবোর্ডে বাংলাদেশের তথ্যভাণ্ডার উদ্বোধন করা হয়। কেনিয়া, নাইজেরিয়া, মোজাম্বিক, পাকিস্তান এবং ইন্দোনেশিয়ার মত বাংলাদেশও এই ড্যাশবোর্ডে যুক্ত হল। তথ্যভাণ্ডার যুক্ত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে ভারত ও রুয়ান্ডাও।
তথ্যভাণ্ডার উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ড্যাশবোর্ডের উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা সম্পর্কিত সকল তথ্য ডিজিটাইজ করা এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা, যাতে সবার তথ্য-উপাত্তের অধিকার নিশ্চিত করা যায়।
“ফুড ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে দেশের যে কোনো স্থান থেকে খাদ্য ব্যবস্থাপনার চিত্র সহজেই জানা যাবে। পাশাপাশি বিভাগ ও জেলার চিত্রও আলাদা করে জানা যাবে, যা খাদ্য গবেষণা এবং খাদ্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে কাজে লাগবে। ড্যাশবোর্ডে খাদ্যের প্রাপ্যতা এবং পুষ্টি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য রয়েছে, যা দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন এবং গবেষণা কার্যক্রমকে সহজ করবে।”
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি ও ‘গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন’ এর নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক ছয়টি অংশী সংগঠন তৈরি করেছে ফুড সিস্টেম ড্যাশবোর্ড’। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন, ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান, মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি এর সঙ্গে রয়েছে সহযোগী হিসেবে।
ফুড ড্যাশবোর্ডে বিশ্বের ২৩০টি দেশ ও অঞ্চলের আলাদা প্রোফাইল রয়েছে। তবে এতে সবগুলোর দেশের অভ্যন্তরীণ বা আঞ্চলিক খাদ্য উৎপাদন সংক্রান্ত তথ্যভাণ্ডার এখনো যুক্ত হয়নি। প্রথম পর্যায়ে ড্যাশবোর্ডে ইন্দোনেশিয়া, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, মোজাম্বিক ও পাকিস্তানের স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত খাদ্য ও পুষ্টি সংক্রান্ত বিশদ তথ্যভাণ্ডারের মত বাংলাদেশের তথ্যভাণ্ডারও যুক্ত করা হল।
যেমন- ড্যাশবোর্ডে ইন্দোনেশিয়ায় ৯৮টি শহর ও ৪১৬টি আঞ্চলিক অফিসের ডেটা সন্নিবেশিত হয়েছে। ইথিওপিয়া ও ভারতের কান্ট্রি ড্যাশবোর্ড চালুর কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য দেশগুলোর তথ্যভাণ্ডার এতে যুক্ত হবে।
দ্য গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন (জিএআইএন) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডক্টর রুদাবা খন্দকার বলেন, “নীতি প্রণয়ন ও খাদ্য ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন শাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তথ্য-উপাত্ত গুরুত্বপূর্ণ। টেকসই, ন্যায়সঙ্গত এবং স্থিতিস্থাপক খাদ্য ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অগ্রগতি তুলে ধরতে ফুড সিস্টেম ড্যাশবোর্ড কার্যকরী হাতিয়ার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তথ্য-উপাত্ত নির্ভর সিদ্ধান্তকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং অংশীদারদের সাধুবাদ জানাই।”
বাংলাদেশের ড্যাশবোর্ডটি জাতীয় ও স্থানীয় স্তরের খাদ্য ব্যবস্থার সূচকসমূহও তুলে ধরছে। https://www.foodsystemsdashboard.org/countries/bgd/subnational-data লিংকের মাধ্যমে তথ্যভাণ্ডারে প্রবেশ করা যায়। এর মাধ্যমে খাদ্য ব্যবস্থাপনার ইতিবাচক পরিবর্তন এবং এসডিজির লক্ষ্য সমূহকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।
ড্যাশবোর্ডে উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য-উপাত্ত ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ ও সকলের ব্যবহারের সুযোগ নিশ্চিতে এটি তৈরি করা হয়েছে। এটি সরকারের নীতি বা পরিকল্পনা গ্রহণ এবং গবেষণার কাজে লাগবে। অন্যান্য দেশ বা অঞ্চলের সঙ্গে খাদ্য ব্যবস্থাপনার তুলনামূলক চিত্রও পাওয়া যাবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালনা করছে বাংলাদেশের ড্যাশবোর্ড।
এটি তৈরিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্যপরিকল্পনা ও মনিটরিং ইউনিট (এফপিএমইউ), বিবিএস এবং গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন যৌথভাবে কাজ করেছে।