Published : 13 May 2025, 07:20 PM
নিম্ন আদালতে সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের রিমান্ড শুনানির পর ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের ওপর আইনজীবীদের চড়াও হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতের সামনে মঙ্গলবার বিকালে বিএনপিপন্থি কয়েকজন আইনজীবী সাংবাদিকদের ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকিও দেন।
এদিন দুপুর ২ টা ২০ মিনিটের দিকে মমতাজকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। বেলা ৩টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে ঢাকার মহানগর হাকিম জুয়েল রানার আদালতে তোলা হয়।
এসময় আদালতে অন্য মামলার শুনানি চলছিল। তবে মমতাজকে আদালতে নেওয়া হলে পুরো এজলাস কক্ষ পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এসময় কিছুটা হট্টগোলের তৈরি হয়।
মমতাজ বেগমকে যখন এজলাসকক্ষে নেওয়া হয় তখন সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহের জন্য সেখানে যান। সে সময় আইনজীবী মাহবুব আলম, আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এজলাস কক্ষ থেকে বের করে দিতে বলায় কিছু কথা কাটাকাটি হয় দুই পক্ষের। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
শুনানি নিয়ে বিচারক মমতাজের চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেওয়ার পর তাকে হাজতখানায় নেওয়া হয়।
পরে আইনজীবীরা ব্রিফ করতে ডায়াসে সামনে দাঁড়ান। তখন ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে আইনজীবীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। সে সময় ‘এখন’ টেলিভিশনের রাব্বি হোসেন, ‘সময়’ টেলিভিশনের আসিফ মাহমুদ সিয়াম আইনজীবীদের শান্ত হয়ে ধস্তাধ্বস্তি না করে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দুই আইনজীবী মাহবুব আলম, আক্তার হোসেন।
উপস্থিত সাংবাদিকরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও তারা আরও চড়াও হন এবং কে কোথায় কাজ করেন তা দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। অকথ্য ভাষায় সাংবাদিকদের গালিগালাজ করেন তারা। কয়েকজন আইনজীবী সাংবাদিকদের হেনস্থাও।
এসময় বিএনপিপন্থী কয়েকজন আইনজীবী তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। হট্টগোলের মধ্যে পরে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী আইনজীবী মাহবুব আলম, আক্তার হোসেনকে নিয়ে সেখান থেকে চলে যান।
ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিক রাব্বি হোসেন বলেন, “এজলাসে আমরা কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত হলে আইনজীবীরা আমাদের বলেন এখানে সাংবাদিকদের কী কাজ। আমি বলেছি নিউজের জন্যই এসেছি।
“পরে শুনানি শেষ হলে আমরা বিনয়ের সাথে আইনজীবীদের ডায়াসের সামনে দাঁড়াতে বলি। তারপরই আমিসহ একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে যান আইনজীবীরা। এক পর্যায়ে আমাদের ধাক্কা দিতে থাকেন। ১৭ বছর কই ছিলাম, বিএনপিপন্থি আইনজীবী পরিচয় দিয়ে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।”
আরেক সাংবাদিক সিয়াম বলেন, “মাহবুব আলী, আক্তার হোসেন বারবার সাংবাদিকদের বলছিলেন, ‘আদালত আমার, এখানে আমরা যা বলব তাই হবে’। এতে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা বাড়ে। পরে তিনি আমাকে দালাল সাংবাদিক, ধান্দাবাজ বলে গালি দেন। তিনিসহ আরো কয়েকজন আইনজীবী গায়ে হাত তোলার জন্য তেড়ে আসেন।”
ঘটনার বিষয়ে জানতে দুই আইনজীবীর সঙ্গে পরে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য জানা যায়নি। পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকীকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি লিটন মাহমুদ এবং সাধারণ সম্পাদক মামুন খান। দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।