Published : 26 Jun 2025, 11:45 AM
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের ঘটনাবহুল ৫ অগাস্টকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সেইসঙ্গে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের যাত্রা শুরুর দিন ৮ অগাস্টকে ঘোষণা করা হয়েছে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’।
আর জুলাইয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদের মৃত্যুর দিন ১৬ জুলাইকে ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বুধবার আলাদা পরিপত্রে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। প্রতিবছর যথাযথ মর্যাদায় দিবসগুলো পালন করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে সেখানে।
এর মধ্যে ৫ অগাস্টকে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত এবং বাকি দুটি তারিখকে ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর মধ্যে ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানের দিনটি সাধারণ ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত সরকার আগেই জানিয়েছিল।
২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া ছাত্রদের আন্দোলন শেষমেশ সরকার উৎখাতের ইতিহাস পড়ে।
৩৬ দিনের সেই আন্দোলনে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন সাড়ে ১৫ বছর দোর্দণ্ড প্রতাপে দেশ চালিয়ে আসা শেখ হাসিনা।
শুরুতে এই আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পরে তা দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
সরকারের তরফে জবাব ছিল- গুলি, টিয়ারশেল আর লাঠি; এককথায় কেবলই বলপ্রয়োগ। প্রথমে ফেইসবুক, পরে ইন্টারনেট বন্ধ করে পরিস্থিতি সামাল দিতে চায় সরকার। তাতে হিতে বিপরীত হয়।
১৬ জুলাই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তাকেই এ আন্দোলনের ‘প্রথম শহীদ’ হিসেবে সম্মান জানানো হয়।
আন্দোলনে রক্তপাত শুরু হওয়ার ২০ দিনের মধ্যেই লাশ আর রক্তের বোঝা মাথায় নিয়ে পতন হয় দেড় দশকের আওয়ামী লীগ সরকারের। পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা আর তার অমাত্যরা।
জুলাই অভ্যুত্থানে নিহতদের যে তালিকা সরকার গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে, সেখানে শহীদের সংখ্যা ৮৩৪। তবে অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘ যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, সেখানে ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হতে পারে বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে।