Published : 19 Aug 2024, 11:37 PM
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে মিরপুরে এক শিক্ষার্থীকে হত্যার ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশাপাশি জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাতীয় পার্টি-জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা পড়েছে।
অভিযোগে মোট ২৭ জনের নাম রয়েছে। পাশাপাশি হত্যায় দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা তদন্তেরও আবেদন করা হয়।
নিহত শাহরিয়ার হাসান আলভীর পরিবারের পক্ষে আইনজীবী আসাদ উদ্দিন সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এ অভিযোগ জমা দেন।
আলভী মিরপুরের দেশ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র ছিলেন।
আইনজীবী আসাদ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, গত ৪ অগাস্ট পুলিশের গুলিতে শাহরিয়ার হাসান আলভী নিহত হয়। বাসা থেকে বের হয়ে রাস্তায় বের হলে পেটের এক পাশে গুলি ঢুকে পিঠ দিয়ে বের হয়। ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
শেখ হাসিনা, মেনন, ইনু ও মঞ্জু ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের নাম আছে।
আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, কামাল আহমেদ মজুমদার, তরীকত ফেডারেশনের নেতা সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারির নামও উল্লেখ আছে এতে।
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক মো. হারুন অর রশিদ, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ, সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, মিরপুর মডেল থানা সাবেক ওসি মুন্সী সাব্বির, যুবলীগ সভাপতি মাইনুল ইসলাম নিখিল, আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পদচ্যুত মেয়র আতিকুর রহমান, মিরপুর থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. হানিফ, ঢাকা উত্তরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইসমাইল মোল্লা এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাপ্পির বিরুদ্ধেও তদন্তের আবেদন করা হয়েছে।
সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও তাদের সদস্যসহ আনুমানিক ৫০০ জনের কথা বলা হয়েছে আবেদনে।
এর আগে শেখ হাসিনাসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে এই ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি অভিযোগ তদন্তের আবেদন জানানো হয়েছে এবং ইতোমধ্যে সেগুলোর তদন্তকাজ শুরু হয়েছে বলে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে এই ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, মীর কাসেম আলী, মুহাম্মাদ কামারুজ্জামান, আবদুল কাদের মোল্লা ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
আরও নানা মেয়াদে সাজা হয়েছে আরও কয়েকজনের।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জুলাইয়ে সংঘাতে মৃত্যুর ঘটনাটি ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করে এই ট্রাইব্যুনালে বিচারের কথা বলেছেন।