Published : 22 Jun 2025, 04:20 PM
চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুলে গুলি করে ছয়জনকে হত্যার মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ২৯ জুন দিন রেখেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সেই সঙ্গে পলাতক আসামিদের পক্ষে এ মামলা লড়তে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একজন আইনজীবী ঠিক করে দেওয়ার আদেশ দিয়েছে আদালত।
রোববার প্রসিকিউশনের আবেদনে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেয়।
জুলাই অভ্যুত্থানের ঘটনায় এটাই প্রথম মামলা, যার অভিযোগ গঠনের শুনানি হতে যাচ্ছে।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে এদিন শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হোসাইন তামিম।
এই মামলার আসামি মোট আটজন। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার চারজনকে এদিন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন–পুলিশ পরিদর্শক আরশাদ, কনস্টেবল মো সুজন, কনস্টেবল ইমাজ হোসেন ইমন ও কনস্টেবল নাসিরুল ইসলাম।
আর পলাতক চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে নির্দেশ দিয়ে গত ৩ জুন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেওয়া হয়। এরা হলেন- ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম এবং রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় আসামিরা ‘নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে’ শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, মো ইয়াকুব, মো রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়াকে গুলি করে হত্যা করেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত ২৫ মে এ মামলার অভিযোগ আমলে নেয়।
ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সেদিন সাংবাদিকদের বলেন, চানখাঁরপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালেরও ‘সম্পৃক্ততা’ রয়েছে।
“যেহেতু তাদের বিরুদ্ধে সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটির তদন্ত চলছে, সেজন্য তাদেরকে এই মামলায় আসামি করা হয়নি। তবে নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনার যে ভূমিকা রয়েছে তাদের, সেটার বর্ণনা এই চার্জশিটে রয়েছে। কারণ শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে তার অধীনস্তরা মাঠ পর্যায়ে থেকে ওই নির্দেশনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতাকর্মীরা বাস্তবায়ন করেছেন।”
এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদনটি ৯০ পৃষ্ঠার। তদন্ত করতে তদন্ত সংস্থার সময় লেগেছে ৬ মাস ১৩ দিন।
তদন্ত প্রতিবেদনে ৭৯ সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। এছাড়া ১৯টি ভিডিও, পত্রিকার ১১টি রিপোর্ট, ২টি অডিও, বই ও রিপোর্ট ১১টি এবং ৬টি ডেথ সার্টিফিকেট সংযুক্ত করা হয়।
পুরনো খবর
চানখাঁরপুলে ৬ হত্যা: অভিযোগ আমলে নিল ট্রাইব্যুনাল, হাবিবকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা
জুলাই অভ্যুত্থান: ট্রাইব্যুনালে প্রথম আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল