Published : 07 Jun 2025, 04:02 PM
সিটি করপোরেশনের বেঁধে দেওয়া ১২ ঘণ্টার মধ্যেই কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, “ঢাকার দুইটা সিটি করপোরেশন ১২ ঘণ্টার মধ্যে এবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার চ্যলেঞ্জ নিয়েছে। আমরা আশা করছি আজকে রাতের মধ্যেই পুরো ঢাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সিটি করপোরেশনের যে কার্যক্রম সেটা সম্পন্ন হবে।”
শনিবার বেলা পৌনে ২টায় ঢাকার কলাবাগান শিশু পার্ক সংলগ্ন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনে (এসটিএস) কোরবানির পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “কোরবানির পরে শহরগুলোতে বিশেষ করে যে বর্জ্যগুলা হয়, সেটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাটাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়ায়। কারণ এটা যদি সঠিক সময়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না করা হয়, পঁচে দুর্গন্ধ বের হয় এবং অনেক ধরনের রোগবালাইয়েরও কারণ হয়ে থাকে।
“ইতোমধ্যে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, বিভিন্ন গাড়িতে বোঝাই করে বর্জ্যগুলো নিয়ে আসা হচ্ছে। আশা করি, এই বর্জ্যের কারণে ঢাকার মানুষের ঈদ আনন্দ কোনভাবেই ব্যাহত হবে না।”
নির্ধারিত জায়গায় কোরবানি দেওয়ার আহ্বান জানালেও নগরবাসী তাতে সাড়া দেয়নি, এক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের নজরদারির ঘাটতি রয়েছে কি-না এবং এতে বর্জ্য অপসারণে দেরি হবে কি-না জানতে চাইলে আসিফ মাহমুদ বলেন, “এটা দুঃখজনক, কারণ আমরা প্রত্যাশা করি আমাদের নাগরিকরা অবশ্যই নিয়ম মেনে চলবেন এবং নির্ধারিত স্থানে কোরবানি দিলে সেটা আমাদের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাটা খুব সহজ হত।
“তবে আমাদের দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রায় ১০ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োজিত আছেন। আমরা বিশ্বাস করি যে, কিছুটা নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলেও এ সময়ের মধ্যেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পন্ন করতে পারব।”
বর্জ্য অপসারণে নির্ধারিত ১২ ঘণ্টা সময় সকাল ১০-১১টা থেকে শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ সময় দক্ষিণ সিটির প্রশাসক শাহজাহান মিয়া বলেন, “আমরা কথা দিয়েছিলাম যে ১২ ঘণ্টার ভেতরে আমাদের যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করে ফেলব। ১২টার পর থেকে আমাদের বর্জ্য সংগ্রহ শুরু হয়ে গেছে।”
ঢাকায় এ বছর প্রায় সাত লাখ পশু কোরবানি হতে পারে, তাতে ৫০ হাজার টনের মত বর্জ্য তৈরি হবে। সেভাবেই দ্রুততম সময়ে অপসারণের চ্যালেঞ্জ নিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন।
এ কাজে নিয়োজিত থাকবেন প্রায় ২০ হাজার ২৬৭ পরিচ্ছন্নতাকর্মী, যাদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
দ্রুত ও নির্ধারিত সময়ে বর্জ্য অপসারণে দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রায় ১৩ লাখ ৯০ হাজার প্লাস্টিক, পলিব্যাগ ও বায়োডিগ্রেডেবল ব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া হটলাইন চালু রাখা হবে যাতে নাগরিকরা বর্জ্য সংক্রান্ত তথ্য দিতে পারেন।
তার পর বেলা আড়াইটার দিকে আগারগাঁও বিজ্ঞান জাদুঘর সংলগ্ন এলাকায় বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম উদ্বোধনকালে উপদেষ্টা বলেন, “দুই সিটি করপোরেশনের বর্জ্য অপসারণ যথাসময়ে শেষ করতে পারবো আশা করি। দুই সিটির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা অনেক পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।”
উত্তর ও দক্ষিণের প্রশাসকের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, “আজকের মধ্যে সিংহভাগ অপসারণ সম্ভব হবে। আজকের মধ্যে শতভাগ অপসারণ সম্ভব হতো যদি নির্ধারিত স্থানে কোরবানির বিষয়টি সবাই মেনে চলত।”
তিনি মনে করেন, বর্জ্য অপসারণে মানুষের ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। নিয়ম মেনে চললে স্থানীয় সরকারের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সহজ হয়ে যায়।
উত্তরের প্রশাসক এজাজ হোসেন বলেন, বেলা পৌনে ২টা পর্যন্ত উত্তর সিটিতে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।
“প্রতিটি ওয়ার্ডে মনিটরিং করছি। টিম ভালোভাবে কাজ করছে। আমরা আশা করছি, উত্তর সিটিতে প্রায় ২০ হাজার টন বর্জ্য আমরা সময়মতো ডাম্পিং করতে পারবো। দক্ষিণ সিটিতেও ২০ হাজার টন হতে পারে, সব প্রস্তুতি রয়েছে।”
আরও পড়ুন: