Published : 04 Jun 2025, 01:02 AM
মানবিক সহায়তা তহবিলে ‘সংকট দেখা দেওয়ায়’ রোহিঙ্গা শিশুদের পাঠদানে নিয়োজিত এক হাজার ১৭৯ জন শিক্ষকের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে ইউনিসেফ।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, “বিশ্বে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের তহবিলে যে সংকট দেখা দিয়েছে, তাতে আমরা কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।
“রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার জন্য কিন্ডারগার্টেন, গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ এ নিয়োজিত স্থানীয় জনগোষ্ঠীর (হোস্ট কমিউনিটি) এক হাজার ১৭৯ ব্যক্তির সঙ্গে ইউনিসেফের অংশীদারদের থাকা চুক্তি বাতিল করা হচ্ছে।”
এদের মধ্যে ইংরেজি, বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান ও অংকনের শিক্ষকরা আছেন তুলে ধরে ইউনিসেফ বলছে, “ঈদ ও এর পরের ছুটি (২৯ জুন পর্যন্ত) শেষে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বাকি কর্মীদের কাজে ফেরাটা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করবে নতুন অর্থায়ন নিশ্চিত হওয়ার ওপর।”
বিবৃতিতে বলা হয়, "আমাদের চলমান কর্মসূচিগুলো চালিয়ে নিতে, সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় থাকা শিশুদের জরুরি সহায়তা নিশ্চিত করতে এবং অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং সময়ে শিশুদের কল্যাণে আমাদের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখার জন্য এসব সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
“আমরা আশাবাদী যে অতি দ্রুত বাড়তি তহবিল পেলে আমরা গুরুত্বপূর্ণ সেবাগুলো পুনরায় চালু করতে এবং আরও বড় পরিসরে চালিয়ে নিতে পারব।”
এর আগে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এসে ইউনিসেফের কক্সবাজার কার্যালয়ের প্রধান কর্মকর্তা (চিফ অব ফিল্ড অফিস) এঞ্জেলা কার্নে বলেছিলেন, "শিখন কেন্দ্রগুলো আপাতত জুনের শেষ নাগাদ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। কিন্তু এরপর কেন্দ্রগুলো খুলবে কিনা, তা নির্ভর করবে নতুন করে তহবিল পাওয়ার ওপরে।
“যদি শিক্ষা কার্যক্রম ফের শুরু হয়, তাহলে গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ আওতাভুক্ত স্থানীয় পর্যায়ের শিক্ষকরা (বাংলাদেশি নাগরিক) চাকরিতে থাকবেন না।"
এদিকে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের খবরে স্থানীয় শিক্ষকরা কয়েকদিন ধরেই উখিয়ায় আন্দোলন করছেন। তারা সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার যান চলাচল ব্যাহত করছেন।
তাদের দাবি, রোহিঙ্গাদের রেখে স্থানীয়দের চাকরি থেকে সরানো হচ্ছে। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয়রা আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
স্থানীয়দের চাকরির দাবিতে আন্দোলনকারী সাফফাত ফারদিন চৌধুরী দাবি করেন, “হোস্ট এরিয়া উখিয়া মগের মুল্লুক নয়, যখন যা খুশি সিদ্ধান্ত নেবেন। হোস্ট কমিউনিটির টিচারদের অন্যায়ভাবে অপসারণের চেষ্টা করা হলে আমরা ছাড় দেব না। সব কিছুর ফান্ড থাকে; হোস্ট কমিউনিটির বেলায় ফান্ড থাকে না, এই খেলা বন্ধ করতে হবে।”
এ ব্যাপারে ইউনিসেফ কর্মকর্তা এঞ্জেলা কার্নে বলেন, “এখানে কোনো বৈষম্য নেই, এটা শুধু তহবিল সংকটের কারণে নেওয়া সিদ্ধান্ত। আমাদের এখানে তিন হাজারের বেশি বাংলাদেশি স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষক কাজ করেন, যেখান থেকে শুধু গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ ভুক্তরা থাকছেন না।”