Published : 04 Apr 2025, 04:49 PM
রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘস্থায়ী হলে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেছেন, দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকটের যদি মীমাংসা না হয়, তাহলে সমগ্র অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে।
শুক্রবার ব্যাংককে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন বলে বাসস জানিয়েছে।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে স্থায়ী প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমারের আরো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, “রাখাইন রাজ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে রাখাইন রাজ্যে আসন্ন দুর্ভিক্ষের বিষয়ে ইউএনডিপি’র সতর্কবার্তার মধ্যে, রাখাইন থেকে আরও বাস্তুচ্যুতি বন্ধ করার জন্য জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে রাখাইনে একটি মানবিক চ্যানেল স্থাপন করা যেতে পারে।”
সরকারপ্রধান বলেন, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, বিশেষ করে রাখাইনের বিরোধপূর্ণ পক্ষগুলোর মধ্যে সমাধানের জন্য বিমসটেক সংলাপ চালাতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠেয় ‘রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি সম্পর্কিত উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে’ বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করে।
থাই প্রধানমন্ত্রী ও সম্মেলনের চেয়ারপারসন পায়োংতার্ন সিনাওয়াত্রা, বিমসটেকের মহাসচিব রাষ্ট্রদূত ইন্দ্রা মণি পান্ডে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিমসটেকের জন্য ৪ প্রস্তাব
এদিকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বিমসটেক সম্মেলনে বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশনের (বিমসটেক) জন্য চারটি প্রস্তাব রেখেছেন।
যুবসমাজের শক্তিকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশি তরুণরা সামনে থেকে এতটা ইচ্ছা এবং কর্মপ্রচেষ্টা দেখাচ্ছে; এমনকি শাসনব্যবস্থায় দীর্ঘস্থায়ী কিছু ধারণা সংস্কার করার জন্যও প্রস্তাব করেছে।
অধ্যাপক ইউনূস কৃষিকাজ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিশেষ করে এই অঞ্চলের বিশাল ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর সাথে সংযোগ স্থাপনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং এ সম্পর্কিত ‘ফোর আইআর’কে আরো অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছেন।
সরকার প্রধান বিমসটেক দেশগুলোকে জ্ঞানের ক্ষেত্রে জোরালো পদক্ষেপ নিতে সম্পদ তৈরি, উদ্ভাবন এবং তা উন্মুক্ত করার সুপারিশ করেছেন।
তিনি এমন একটি ইকো-সিস্টেম প্রতিষ্ঠারও প্রস্তাব করেছেন যেখানে সরকার ছাড়াও অন্যান্য সংস্থাগুলো জনস্বাস্থ্য বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা জলবায়ু অভিযোজন- জরুরি অবস্থা এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিমসটেকের সাথে হাত মিলিয়ে কাজ করতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “সময় আমাদের পক্ষে নেই। আমাদের কেবল পরিবর্তন আনতে হবে না, রূপান্তর করতে হবে। এজন্যই বাংলাদেশ তিনটি শূন্যের বিশ্বকে এগিয়ে নিতে চায়: শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য কার্বন।”
শীর্ষ সম্মেলন শেষে বাংলাদেশ আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করবে।