Published : 28 May 2025, 02:57 PM
রাজধানীর হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন, আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদসহ চারজনকে ১০ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়েছে পুলিশ।
অপর দুই আসামি হলেন-আরাফাত ইবনে নাসির ওরফে শ্যুটার আরাফাত ও এম এ এস শরীফ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার এসআই রিয়াদ আহমেদ বুধবার তাদের রিমান্ডের আবেদন করেন বলে প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই মোকছেদুল ইসলাম জানান।
তিনি বলেন, ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদসহ চারজনকে মঙ্গলবার ঢাকা ও কুষ্টিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী।
মঙ্গলবার আইএসপিআরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ অভিযানে কুষ্টিয়া জেলা থেকে সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোল্লা মাসুদ ওরফে আবু রাসেল মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সুব্রত বাইনের দুই সহযোগী ‘শ্যুটার’ আরাফাত ও শরীফকে।
অভিযানে তাদের কাছ থেকে পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩ রাউন্ড গুলি ও একটি স্যাটেলাইট ফোন জব্দ করার কথা জানায় আইএসপিআর। গ্রেপ্তারের পর বুধবার তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
আইএসপিআর বলছে, এই চারজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন নাশকতার অভিযোগে মামলা রয়েছে।
“সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ সেভেন স্টার সন্ত্রাসী দলের নেতা এবং তালিকাভুক্ত ‘২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর’ অন্যতম।”
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, হত্যা, চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে সুব্রত বাইনের বিরুদ্ধে।
১৯৯১ সালে ঢাকার আগারগাঁও এলাকায় জাসদ ছাত্রলীগ নেতা মুরাদ হত্যার মধ্য দিয়ে তার সন্ত্রাস জীবনের উত্থান শুরু হয়।
২০০১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে, তাদের মধ্যে ঢাকার অপরাধ জগতের তখনকার প্রভাবশালী ‘সেভেন স্টার’ গ্রুপের প্রধান সুব্রত বাইনও ছিলেন।
২০০৩ সালের দিকে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর তৎপরতা বেড়ে গেলে সুব্রত ভারতে পালিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর কলকাতার স্পেশাল টাস্কফোর্স কারাইয়া এলাকা থেকে ২০০৮ সালের ১৩ অক্টোবর সুব্রতকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে কলকাতায় অস্ত্র ও অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলাও হয়। ওই মামলায় ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার গা ঢাকা দেন সুব্রত।
এরপর ২০০৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সের কর্মকর্তাদের ধাওয়া খেয়ে সুব্রত বাইন নেপাল সীমান্তের কাকরভিটা শহরে ঢুকে পড়েন। পরে নেপালের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের প্রায় তিন বছরের মাথায় ২০১২ সালের ৮ নভেম্বর সুড়ঙ্গ খুঁড়ে নেপালের কারাগার থেকে পালিয়ে ফের ভারতে অনুপ্রবেশ করেন সুব্রত বাইন।
একই বছরের ২৭ নভেম্বর কলকাতার বৌবাজারের একটি বাসা থেকে সুব্রতকে গ্রেপ্তার করে ভারতীয় পুলিশ। সেখানে ফতেহ আলী নাম নিয়ে ছদ্মবেশে অবস্থান করছিলেন তিনি।
সাদাকালো ছবির ভয়ঙ্কর গল্পের সেই সুব্রত যেভাবে হাজির
সুব্রত বাইন গ্রেপ্তার: দেড় মাস আগে বাসায় ওঠেন ব্যবসার কথা বলে
সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ গ্রেপ্তার কুষ্টিয়ায়, বাকি দুজন হাতিরঝিলে
কুষ্টিয়ায় সেনা অভিযানে 'শীর্ষ সন্ত্রাসী' সুব্রত বাইন গ্রেপ্তার