Published : 06 Jun 2025, 09:22 PM
শিশুদের ঈদ আনন্দের সঙ্গী হতে প্রস্তুত হয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র।
শ্যামলীর শিশুমেলার পাশাপাশি বিজয় সরণির নভোথিয়েটার, সামরিক জাদুঘর, আগারগাঁওয়ের বিমানবাহিনী জাদুঘর, শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের পাশাপাশি সেবা দিতে মুখিয়ে আছে বিভিন্ন বিপণিবিতান ও রেস্তোরাঁয় গড়ে ওঠা ‘কিডজ জোন’।
শিশুমেলা
ঢাকার শাহবাগে শিশুদের জন্য যে বিশেষায়িত পার্ক ছিল, সেটি বন্ধ হয়ে আছে ছয় বছর ধরে। সংস্কারের নামে পার্কটি বন্ধ হওয়ার পর থেকে শ্যামলীর শিশুমেলাই হয়ে উঠেছে ছোটদের অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র।
সেখানে ১৭টি ফ্যামেলি রাইড ও ৭০টির বেশি কিডস রাইড রয়েছে।
শিশুমেলার ব্যবস্থাপক রাজিবুল চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদের সময় শিশুমেলা সপ্তাহের ৭ দিনই খোলা থাকে। সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে ঈদের দিন খোলা থাকবে বিকাল ৩টা থেকে।”
শিশুমেলায় বিভিন্ন রাইডের পাশাপাশি ভেতরেই রয়েছে রেস্তোরাঁ। পার্কটিতে প্রবেশে প্রত্যেককে গুনতে হবে ১০০ টাকা। আর প্রতিটি রাইডের জন্য দিতে হবে ৫০ টাকা করে। তিন বছরের কম বয়সের শিশুদের টিকেট কাটতে হবে না।
শিশুমেলায় দর্শনার্থীরা বেশি ভিড় জমান- মেরী গো-রাউন্ড, চুক চুক ট্রেন, হ্যানি সুইং, ক্রেজি কার, সোয়ান অ্যাডভেঞ্চার রাইডে।
বিনামূল্যে জাদুঘরে প্রবেশ
ঈদের দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ থাকবে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘর ও পুরান ঢাকার আহসান মঞ্জিল জাদুঘরে।
সেদিন বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত জাতীয় জাদুঘর এবং আহসান মঞ্জিল জাদুঘর খোলা থাকবে।
জাতীয় জাদুঘর ও শাখাগুলো বন্ধ থাকবে ৫ থেকে ১২ জুন। খোলার পর ১৩ জুন বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত গ্যালারি খোলা থাকবে।
পরদিন থেকে নিয়মিত সূচিতে চলবে জাতীয় জাদুঘর। সেখানে প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রবেশমূল্য ৪০ টাকা, শিশুদের ২০ টাকা।
চিড়িয়াখানা
ঈদের ছুটিতে রাজধানীতে ঘুরে বেড়ানো মানেই কারো কারো কাছে চিড়িয়াখানা। এজন্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষও ঈদের সপ্তাহে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়ে থাকে।
ঢাকার বাসিন্দাদের বিনোদনের কথা বিবেচনা করে ঈদের পর রোববার সাপ্তাহিক ছুটির দিনও খোলা থাকবে মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা।
আগামী ৭ জুন সারাদেশে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। সেদিন শনিবারও স্বাভাবিকভাবেই খোলা থাকবে চিড়িয়াখানা।
রোববার চিড়িয়াখানার সাপ্তাহিক ছুটি হলেও ঈদ উপলক্ষে সেদিনও খোলা রাখা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার।
বর্তমানে মিরপুর চিড়িয়াখানায় ৩ হাজার ৩০০টি প্রাণী রয়েছে, যাদের দেখতে ঈদের অবকাশে দর্শনার্থীরা ভিড় করবেন।
ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন এক থেকে আড়াই লাখ দর্শনার্থীর ভিড় হয় মিরপুর চিড়িয়াখানায়। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চিড়িয়াখানা খোলা থাকে। ৫০ টাকার টিকেট কেটে সেখানে দিনভর সময় কাটাতে পারেন দর্শনার্থীরা।
নভোথিয়েটার ও সামরিক জাদুঘর
রাজধানীর বিজয় সরণির নভোথিয়েটার খোলা থাকবে ঈদের পরদিন থেকে।
নভোথিয়েটার কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ঈদের পরদিন দুপুর ২টা থেকে যথারীতি নভোথিয়েটার খোলা থাকবে। প্রাঙ্গণে থাকা বিশেষ রাইডগুলো শিশুদের বাড়তি আনন্দ যোগাবে।
নভোথিয়েটারের পাশেই অবস্থান বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরের। ঈদ উপলক্ষে ৫ থেকে ৭ জুন পর্যন্ত সামরিক জাদুঘরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে ঈদের পরদিন নিয়মিত সূচিতে সামরিক জাদুঘর খোলা থাকবে।
শুক্রবার ও বুধবার ছাড়া সপ্তাহের অন্যান্য দিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সামরিক জাদুঘর খোলা থাকে। সেখানে বাংলাদেশিদের প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা।
বিমানবাহিনী জাদুঘর
আগারগাঁওয়ের মেট্রোরেল স্টেশনের পাশে বিমানবাহিনী জাদুঘর ঈদের দিনও খোলা থাকবে। সেদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত জাদুঘরটি খোলা থাকবে। তবে ঈদের পরদিন থেকে সেটি খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
জাদুঘরে সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা, আর সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য প্রবেশ টিকেট ফি ২৫ টাকা। এছাড়া ৩০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে জাদুঘরের উড়োজাহাজ কিংবা হেলিকপ্টারে ওঠার সুযোগ রয়েছে।
প্রস্তুত অন্যরাও
রাজধানীজুড়ে বিভিন্ন শপিংমল ও রেস্তোরাঁয় শিশুদের আনন্দ দিতে নানা রকম রাইডের ব্যবস্থা আছে।
মিরপুরের শেওড়াপাড়ার বাবুল্যান্ডের আইটি সহকারী ফারদিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শিশুদের জন্য নানা আয়োজন সাজিয়েছে তারা। খোলা থাকবে ঈদের দিন থেকেই।
ঈদের চার দিন পর্যন্ত বিশেষ যেসব আয়োজন থাকবে, তার মধ্যে আছে- কালার কার্নিভাল, কিডজ ট্যালেন্ট টাইম, ম্যাজিক শো।
ধানমন্ডি লেইক, হাতিরঝিল, রমনা পার্কও বিনোদনপ্রেমীদের আড্ডায় মুখরিত হবে। এর জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ তরফে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।