Published : 06 Jun 2025, 04:23 PM
ঈদযাত্রার শুরুতে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে ছেড়ে যাওয়া যানবাহনকে যানজটে পড়তে হয়নি। তবে ঈদের আগের দিন শুক্রবার সকাল থেকেই সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী এলাকায় যানজট তৈরি হয়েছে।
শুক্রবার সকালে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পোস্তগোলা এলাকায় দুর্ঘটনায় পড়ে একটি বাস। তাতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। যানজট তৈরি হয় যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ হয়ে গুলিস্তান, মানিকনগর পর্যন্ত। ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখো মানুষ।
শুক্রবার সকালে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ও আশপাশে বিভিন্ন পরিবহনের বাসের কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড় বাড়ে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় বাসে যেতে সায়েদাবাদ আসেন যাত্রীরা।
তবে গুলিস্তান এবং মতিঝিল এবং মানিকনগর থেকে সায়েদাবাদমুখী সড়কে যাত্রীরা সকাল থেকেই যানজটে পড়েন।
সায়েদাবাদ জনপথ মোড় থেকে গোলাপবাগ, মানিকনগর হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত যানবাহন থেমে থাকতে দেখা গেছে। এ অবস্থা ছিল গুলিস্তান থেকে আসা যানবাহনেরও। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারেও যানজট দেখা গেছে।
মানিকনগরে যানজটে থাকা সৌদিয়া পরিবহনের বাসের চালক আবদুল কুদ্দুস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকালে গাজীপুর থেকে চট্টগ্রাম যেতে বাস নিয়ে এসেছেন তিনি। সকাল ১০টার দিকে মুগদা এসেছেন। এরপর থেকেই যানজট।
“কমলাপুর থেকে মানিকনগর পর্যন্ত আসলাম দেড় ঘণ্টায়। সায়েদাবাদে নাকি যানজট। এ কারণে গাড়ি সামনের দিকে আগায় না। এক জায়গায় বসে আছি অনেকক্ষণ ধরে।”
লক্ষ্মীপুর থেকে আসা জোনাকি পরিবহনের বাসের চালক হাসানুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাতে বাস নিয়ে লক্ষ্মীপুর গেছেন তিনি। সেখানে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ফের ঢাকায় এসেছেন।
“তিন ঘণ্টায় শনির আখড়া পর্যন্ত আসছি। এরপর থেকে শুরু হইছে যানজট। এইটুকু পার হয়ে টার্মিনালে আসতে জান বাইর হয়ে গেছে।”
ঢাকার ইন্দিরা রোডের বাসিন্দা শামীমা সুলতানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রোববার সকালে একটি প্রাইভেটকারে করে নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে রওনা হন তারা। চাঁনখারপুল থেকে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে ওঠার পরপরই যানজটে পড়েন।
“আমরা ফ্লাইওভার ওঠার পরই যানজটে পড়ি। গাড়ি যেন নড়েই না, আমরা হানিফ ফ্লাইওভার থেকে নামতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। আবার শনির আখড়া গিয়ে ফ্লাইওভারে নামার পর দেখি পুরোই ফাঁকা।”
প্রায় আড়াই ঘণ্টা গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারে যানজটে আটকে থাকা ইমরান সুমন নামে একজন দুপুরে বলেন, আড়াই ঘণ্টায় তিনি হানিফ ফ্লাইওভার পার করতে পারেননি। গাড়ি নড়ছিলই না।
তিনি বলেন, “যারা পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যেতে চান, তারা হানিফ ফ্লাইওভার এড়িয়ে বিকল্প রাস্তায় যেতে পারেন। মিরপুর বসিলা ব্রিজের রাস্তায় যাওয়া যায়।”
ঢাকার সায়েদাবাদে গিয়ে দেখা গেছে বাসের অপেক্ষায় আছেন যাত্রীরা।
লক্ষ্মীপুর যেতে ঢাকার মিরপুর থেকে সায়েদাবাদ এসেছেন একটি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা এমদাদুল হক। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমাদের ওই লাইনে বাসের অভাব নাই। আর সায়েদাবাদ থেকে বাসের অগ্রিম টিকেট দেয় না। তারপরও কোনো সমস্যা হয় না, টার্মিনালে এসে টিকেট কিনে বাড়ি চলে যাই। যানজট বেশি থাকার কথা না। বাড়ি থেকে খুব ঝামেলা হওয়ার কথা না।
ঢাকার মুগদা এলাকার রেস্তরাঁকর্মী সোহেল মাহমুদ বলেন, বাসা থেকে এসে তিনি ৩০ মিনিট ধরে বাসের অপেক্ষায় আছেন।
“গাড়ি ২০ মিনিট পরপর ছাড়ে। কিন্তু যানজটের কারণে বাস আসতে পারতেছে না। এ কারণে এখানে বসে আছি।”
ঢাকা মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক, ওয়ারী জোন) বাবুল উদ্দিন সরদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকালে এক্সপ্রেসওয়েতে ঢাকামুখী একটি বাস দুর্ঘটনায় পড়লে যানজট সৃষ্টি হয়। বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজকের ওপরে উঠে গিয়েছিল। এ কারণে ঢাকামুখী যানবাহনগুলো আটকে যায়।
“এর প্রভাবে পরে দুদিকেই যানজট সৃষ্টি হয়। আমরা প্রথমে একটি রেকার দিয়ে বাসটি সরানোর চেষ্টা করি। না পেরে পরে আরেকটি রেকার নিয়ে দুপুর একটার দিকে বাসটি সরাতে পারি। এরপর থেকে যান চলাচল শুরু হয়েছে। আশা করি কিছুক্ষণের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”