Published : 14 Mar 2025, 08:24 PM
পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের জেলা কক্সবাজারে ব্যবসা ও অর্থনীতির ব্যাপক সম্ভবনার কথা তুলে ধরে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য কী কী করণীয়, তা স্থানীয়দের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট ভাগ্যবান। কারণ তাদের একটি সমুদ্র আছে, যা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা করতে উদ্বুদ্ধ করে।”
শুক্রবার কক্সবাজারে বিআইএএম অডিটোরিয়ামে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। স্থানীয় ব্যবসায়ী, শিক্ষক, ছাত্র, এনজিওকর্মী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এ মতবিনিময় সভায় অংশ নেয়।
আলাপচারিতার বেশিরভাগ অংশ জুড়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন ইউনূস। উপস্থিত স্থানীয় সুধি সমাজও চট্টগ্রামের মানুষ ইউনূসের সঙ্গে স্থানীয় ভাষায় আলাপ চালিয়ে যান।
ইউনূস তার বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, “অর্থনীতিতে কক্সবাজারের বিরাট ভূমিকার সম্ভবনা রয়েছে। ইয়ান ক্যান করি করন যাইব, অন্নোরার মনত কী আছে, ইয়ান জানিবার লাই আইস্যি।”
[কক্সবাজারের বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সম্ভাবনা কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তা নিয়ে আপনাদের ভাবনা কী, তা জানতে এসেছি।
সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতির সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের একটি দীর্ঘ সমুদ্রতীর রয়েছে এবং চট্টগ্রামের সমুদ্রতীরের যে কোনো স্থানে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা সম্ভব। কক্সবাজারে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এটি কেবল একটি পর্যটন শহরই নয়, বরং অর্থনীতিরও কেন্দ্র হবে।
নেপাল এবং ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্সের’ কোনো সমুদ্র নেই, সে কথা তুলে ধরে ইউনূস পারস্পরিক সুবিধার্থে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, “আমরা ব্যবসা করতে পারলে সকলের ভাগ্য বদলে যাবে।”
কক্সবাজারের লবণ উৎপাদনকারীদের কাছে ইউনূস জানতে চান, বিদেশি আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে আগ্রহী কি না। কেননা কক্সবাজারের কৃষকদের উৎপাদিত লবণ রপ্তানি করার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি পাইলট ভিত্তিতে কক্সবাজারে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি বায়ুশক্তির (বায়ুপ্রবাহের শক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন) সম্ভাবনা সম্পর্কে খোঁজ নেন।
স্থানীয় জনগণকে ভবিষ্যতে সুযোগগুলো কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কক্সবাজার অর্থনীতির একটি ‘বৃহৎ শক্তি’ এবং এটি তথ্যপ্রযুক্তিরও একটি শহর হতে পারে।
তিনি স্থানীয় জনগণের কাছে তাদের ওপর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের প্রভাব জানতে চান।
কক্সবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মতবিনিময় সভায় মানুষ প্রধান উপদেষ্টার সামনে বিভিন্ন প্রস্তাব ও দাবি পেশ করেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে শুক্রবার দুপুরে কক্সবাজারে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সেখান থেকে পরে উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে যান তারা।
জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। মুহাম্মদ ইউনূস পরে আন্তোনিও গুতেরেসকে সঙ্গে নিয়ে উখিয়ায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেন।