Published : 24 Jun 2025, 08:30 PM
সব দাবি পূরণ না হওয়ায় ক্লাস বর্জন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
এদিন চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অধ্যক্ষ ডা. মো. কামরুল আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শ্রেণিকক্ষে না ফেরার সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন তারা।
আবাসনসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা গত ২৮ মে থেকে ক্লাস বর্জন করছেন। তাদের আন্দোলনের মধ্যে গত শনিবার অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কলেজ বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বৈঠকের পর শিক্ষার্থীদের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিরাপদ বিকল্প আবাসন এবং নতুন হল নির্মাণের লক্ষ্যে চলমান আন্দোলনে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সোমবার প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তারা।
“সেই মিটিংয়ে স্যার আমাদেরকে জানান, সরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য ১৯টি হল নির্মাণের যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জন্য দুটি হলের বাজেটের সমপরিমাণ অর্থ বরাদ্দ রাখা হবে।
”জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য একনেক সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবগুলোর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজের হল নির্মাণের ব্যাপারটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে, এই মর্মে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। আমাদের গতকালের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে আমরা মনে করি।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবারের বৈঠকের পর পরবর্তী পরিকল্পনা নির্ধারণে কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন তারা।
তবে সবশেষ ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ব্যাচ কে-৮২ এর আবাসনের ব্যবস্থা না হওয়ায় তারা শ্রেণিকক্ষে ফিরতে চান না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এতে বলা হয়, ”পরিত্যক্ত ঘোষিত চতুর্থ তলা খালি করে সেখানে থাকা কে-৭৮ থেকে কে-৮১ পর্যন্ত ব্যাচের শিক্ষার্থীদের হলের তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকিপূর্ণ রুমে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কে-৮২ ব্যাচের আবাসন ব্যবস্থা এখনও অনিশ্চয়তায়।
“আজ বৈঠকে আমরা কর্তৃপক্ষকে কে-৮২ ব্যাচের আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করলে উনি আমাদের কাছে ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস ব্যক্ত করলেও সুস্পষ্ট কোনো সমাধান দিতে পারেননি। তাই আমরা ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্ত বহাল রাখছি।”
কলেজ কর্তৃপক্ষ শিগগির কে-৮২ এর আবাসনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করবে বলে তারা আশা প্রকাশ করে বলেন, তাহলে আন্দোলন স্থগিত করে ক্লাসে ফিরে যাবেন তারা।
নিরাপদ ক্যাম্পাস ও আবাসনসহ পাঁচ দফা দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করে আসছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষাথীরা।
তাদের আন্দোলনের মধ্যেই শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। রোববারের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বলা হয়। শিক্ষার্থীরা হল না ছেড়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
একই সঙ্গে দাবি দাওয়া নিয়ে আলোচনাও চালিয়ে যাচ্ছেন। এর অংশ হিসেবে রোববার সকালে কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষার্থীরা।
বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, ওই আলোচনা থেকে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার কোনো ‘আশ্বাস পাওয়া যায়নি’৷ এ কারণে হোস্টেল না ছেড়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
পরদিন সোমবার শিক্ষার্থীদের সাত সদস্যের একটি দল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূর জাহান বেগমের সঙ্গে দেখা করতে সচিবালয়ে যান। তাদের সঙ্গে অধ্যক্ষও ছিলেন। তবে তারা উপদেষ্টার পরিবর্তে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ওই বৈঠকের পর শিক্ষার্থীদের তরফে বলা হয়েছিল, মঙ্গলবার অধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর চলমান কর্মসূচির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
আলোচনা 'ফলপ্রসূ': ঢাকা মেডিকেল শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরবেন কি না
স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে সচিবালয়ে ঢাকা মেডিকেলের শিক্ষ
নিরাপদ আবাসন সংকটে ঢাকা মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা
হল ছাড়বেন না ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা
ঢাকা মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ, হোস্টেল ছাড়ার নির্দেশ