Published : 30 Aug 2024, 10:29 PM
শিক্ষা ও শ্রমবাজারের মধ্যে ফারাক কমিয়ে এ দুইয়ের সম্পর্ক স্থাপন করা গেলে তা বেকারত্ব নিরসনে কাজে আসবে বলে মনে করেন তড়িৎ প্রকৌশলী ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক লেখক ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।
তিনি বলেছেন, “বর্তমানে মাইক্রো অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা একটা অভিযোগ করে যে, বাংলাদেশে চাকরির বাজারে প্রার্থী আছে, তবে যোগ্য প্রার্থী নেই। এর জন্য আমাদের শিক্ষার সঙ্গে শ্রমবাজারের সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে৷
“বাংলাদেশে শুধু ডাক্তারদের ইন্টার্নশিপ দেওয়া হয়, অন্য কাউকে দেওয়া হয় না। এখন সময় এসেছে, আমাদের বেকারদেরকে গণ-ইন্টার্নশিপ দেওয়ার। অন্তত ছয় মাস ছাত্রদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্টে রাখা, যাতে তাদের সাথে শ্রমবাজারের একটা সম্পর্ক তৈরি হয়৷”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার মিলনায়তনে রাষ্ট্রচিন্তা ও গ্রন্থিক প্রকাশনীর আয়োজনে এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ‘ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর’ আলী রিয়াজ থাকার কথা থাকলেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না।
'গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতি' বিষয়ক এ সেমিনারে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও শ্রমবাজারের মধ্যে সম্পর্ক তুলে ধরেন ফয়েজ আহমেদ।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ‘বেকারত্ব তৈরির কারখানা’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “নির্দিষ্ট করে বললে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আন্ডারে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী আছে৷ যাদের কর্মের যে অনিশ্চয়তা, এই অনিশ্চয়তা দূর করার জন্য আমাদেরকে পলিসি নতুন করে সাজাতে হবে এবং শিক্ষায় বিনিয়োগ করতে হবে। আমাদের শিক্ষা এবং দক্ষতাকে আমাদের টেকসই উন্নয়নের কৌশল হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
“জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে যে কলেজগুলো আছে, যে বিষয়গুলোর শ্রমবাজারে চাহিদা কম, সে বিষয়গুলোকে কনসেনট্রেট করে শ্রমবাজারে চাহিদা সম্পন্ন যে বিষয়গুলো আছে, সেই বিষয়গুলোর জন্য একটি কমিটি গঠন করা যেতে পারে। সেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব দিতে পারে, যাতে করে বিষয়গুলো একটা শ্রমক্ষমতা রূপান্তরে ভূমিকা রাখে।”
বাংলাদেশের বেকারত্ব নিয়ে তিনি বলেন, “মাইক্রো ইকোনমিকসের দৃষ্টিতে যদি আমরা আমাদের গ্রামীণ খাতগুলোকে দেখি, সেখানে অনেক কর্মী সংকটে ভোগে। আপনারা জেলা, বিভাগ কিংবা উপজেলা হসপিটালগুলোতে দেখবেন যে নার্স ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের অভাব আছে৷
“আজ ঢাকা শহর বাংলাদেশের সবচেয়ে দূষিত নগর, যেখানে মাথাপিছু ১০ হাজার জনে একজনও পরিচ্ছন্নতা কর্মী নেই। তাই এই খাতগুলোতে কর্মসংস্থান যে অভাব আছে, তা পূরণের মাধ্যমে এ দেশের বেকারত্ব নিরসন সম্ভব।”
সেমিনারে লেখক সহুল আহমেদ, লেখক ও সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ ও শিক্ষক নিয়াজ আসাদুল্লাহ বক্তব্য দেন৷