Published : 30 May 2025, 09:13 PM
যুদ্ধাপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা।
শুক্রবার বিকাল ৫টায় রাজু ভাস্কর্যে ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা বিক্ষোভ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রামে ছাত্রশিবিরের হামলার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদও জানান।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, “আমরা দুটি কারণে দাঁড়িয়েছি। একটি হচ্ছে, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে আমাদের বন্ধুদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। হামলা চালিয়েছে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ছাত্রশিবির।
“আরেকটি হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুলকে তার যুদ্ধাপরাধের দায় থেকে খালাস করা হয়েছে। কোন প্রক্রিয়ায় তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে, তা পরিষ্কার না করে সরকারের যারা কর্তাব্যক্তি আছেন তারা এটিকে বিচারবিভাগের স্বাধীনতা হিসেবে বিবেচনা করছেন। তাকে বেকসুর খালাস দেওয়ার প্রতিবাদে আমরা সমাবেশ করছি।”
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক সুহাইল আহমেদ শুভ বলেন, “গত পরশু (বুধবার) ছাত্র ফ্রন্টের স্কুল বিষয়ক সম্পাদক বিশ্বজিৎ নন্দী রাতে বাসায় ফেরার সময় তাকে শিবিরের সন্ত্রাসীরা মব সৃষ্টি করে আটকে রাখে। পরবর্তীতে তাকে থানায় নিয়ে যেয়ে ক্ষমা চাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে পুলিশ। সেই পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আমরা ধিক্কার জানাই। তাকে আটকে রাখা হয় শুধু আজহারকে রাজাকার সাব্যস্ত করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার কারণে।”
যুদ্ধাপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামকে বেকসুর খালাস দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
ছয় বছরের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার আজহারের আপিল শুনে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত বিচারকের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ মঙ্গলবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে এ রায় দেয়।
ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দীন শুভ বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধকারী আলবদর বাহিনীর প্রধানকে মুক্ত করা হয়েছে। তার প্রতিবাদে দেশব্যাপী একাত্তরের পক্ষের শক্তি আন্দোলন সংগ্রাম করছে। এই আন্দোলনে একাত্তরের পরাজিত শক্তি জামায়াত-শিবির মব সৃষ্টি করছে, উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে। তারা এতেই ক্ষান্ত হয়নি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট ও চট্টগ্রামে শিবির হামলা করেছে।”
শিবিরের বিরুদ্ধে এক নারী শিক্ষার্থীকে লাথি দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “অভ্যুত্থান পরবর্তীতে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে মবের ইন্ধন দিচ্ছে জামায়াত-শিবির। বিভিন্ন হলগুলোতে তারা ছাত্রলীগের মত একক আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে।
“যারা একাত্তরের বিপক্ষে কাজ করেছে, পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছে, তাদের রাজনীতি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলতে দেওয়া যায় না।”
সমাবেশ শেষে তারা একটি মিছিল নিয়ে শাহবাগ হয়ে ফের টিএসসিতে যান।