Published : 17 Aug 2024, 10:11 AM
ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ জুটির পাল্টা আক্রমণ থামিয়ে প্রথম ইনিংসে লিড নিতে পারল দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের ব্যাটিংয়ে দেখা গেল উন্নতির ছাপ। তাদের ব্যবধান বাড়তে থাকল আরও। শুরুতে এইডেন মার্করাম ও পরে কাইল ভেরেইনার ফিফটিতে দল পৌঁছে গেল শক্ত অবস্থানে।
গায়ানা টেস্টের নাটকীয় প্রথম দিনে ১৭ উইকেটের পতনের পর শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে উইকেট পড়েছে ৮টি। প্রথম ইনিংসে ১৬০ রানে গুটিয়ে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা ১৪৪ রানে থামিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেটে ২২৩ রান নিয়ে প্রোটিয়ারা শেষ করেছে দ্বিতীয় দিন।
দুই ইনিংস মিলিয়ে সফরকারীরা এগিয়ে আছে ২৩৯ রানে।
প্রথম দিনের চেয়ে প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামের পিচের অবস্থা একটু বদলেছে এ দিন। সুইং ও সিম মুভমেন্ট মিলেছে এ দিনও। তবে আগের দিনের চেয়ে কম, ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো হয়ে উঠেছে একটু।
৭ উইকেটে ৯৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ দিনের শুরুতেই হারায় দুই উইকেট। জোমেল ওয়ারিক্যানকে ফিরিয়ে ম্যাচে প্রথম উইকেটের দেখা পান কাগিসো রাবাদা। আরেক প্রান্ত নান্দ্রে বার্গার ফিরিয়ে দেন জেডেন সিলসকে। ১৬ বল খেলে রান করতে পারেননি ওয়ারিক্যান, সাত বলে শূন্য করেন সিলস।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার মতোই প্রতিরোধ গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ জুটি। শেষ ব্যাটসম্যান শামার জোসেফ যদিও জীবন পান প্রথম বলেই। এরপর তিনি পাল্টা আক্রমণ চালান। ১৫ রানে আরেকবার জীবন পান তিনি স্লিপে। অভিজ্ঞ জেসন হোল্ডারও গুরুত্বপূর্ণ কিছু রান করেন।
এই জুটি থামে ৪০ রানে। চারটি চার ও এক ছক্কায় ২৪ রান করা জোসেফকে এলবিডব্লিউ করে ইনিংস শেষ করেন কেশাভ মহারাজ।
৩৩ রানে দিন শুরু করা হোল্ডার অপরাজিত থাকেন ৫৪ রানে। ম্যাচের প্রথম দুই ইনিংসের একমাত্র ফিফটি যা।
আগের দিনের চার উইকেটের সঙ্গে আর কোনো উইকেট যোগ করতে পারেননি ভিয়ান মুল্ডার। বাঁহাতি পেসার নান্দ্রে বার্গার নেন তিন উইকেট।
দ্বিতীয় ইনিংসেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের নতুন বলের দুই বোলার সিলস ও হোল্ডার বেশ ভালো বোলিং করেন। তবে সেই পরীক্ষায় উতরে যান দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার এইডেন মার্করাম ও টনি ডি জর্জি। কার্যকর জুটি গড়ে তোলেন তারা।
প্রথম ইনিংসে ৭৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল প্রোটিয়ারা। এবার উদ্বোধনী জুটিতেই আসে ৭৯ রান।
ডি জর্জিতে ৩৯ রানে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন দ্বিতীয় স্পেলে ফেরা সিলস। দ্বিতীয় উইকেটে মার্করাম ও ট্রিস্টান স্টাবস গড়েন ৪১ রানের জুটি।
লড়িয়ে ব্যাটিংয়ে মার্করাম ফিফটি করেন ১০৩ বলে। তবে এর পরপরই তাকে বিদায় করেন গুডাকেশ মোটি।
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস একটু টালমাটাল হয় পরের সময়টায়। ২৪ রান করা স্টাবসকে আউট করার পর ডেভিড বেডিংহ্যামকে শূন্যতে থামান সিলস। প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে চার রানেই আটকে দেন মোটি।
১৯ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার রান হয়ে যায় ৫ উইকেটে ১৩৯।
ম্যাচ তখন বলা যায় সমতায়। সেটিই দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে হেলে পড়ে পরের জুটিতে। দুর্দান্ত লড়াইয়ে দারুণ জুটি গড়ে তোলেন কাইল ভেরেইনা ও ভিয়ান মুল্ডার।
রক্ষণের সঙ্গে আক্রমণের মিশেলে ৮৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন তারা। ৭ চারে ৭১ বলে ৫০ রান করে দিন শেষ করেন কিপার-ব্যাটসম্যান ভেরেইনা। দুটি করে চার ও ছক্কায় ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন মুল্ডার।
তৃতীয় দিনে উইকেটে ব্যাটিংয়ের জন্য আরও ভালো হয়ে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য কিছুটা আশা তাই আছে বটে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার লিডও তো বড় হচ্ছে ক্রমেই!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ১৬০
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪২.৪ ওভারে ১৪৪ (আগের দিন ৯৭/৭) (হোল্ডার ৫৪*, ওয়ারিক্যান ০, সিলস ০, জোসেফ ২৫; রাবাদা ১৬-৪-৪০-১, বার্গার ১২-২-৪৯-৩, মুল্ডার ৯-২-৩২-৪, মহারাজ ৫.৪-২-৮-২)।
দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: ৭০ ওভারে ২২৩/৫ (মার্করাম ৫১, ডি জর্জি ৩৯, স্টাবস ২৪, বাভুমা ৪, বেডিংহ্যাম ০, ভেরেইনা ৫০*, মুল্ডার ৩৪*; সিলস ১৬-৪-৫২-৩, হোল্ডার ১২-৪-২৪-০, জোসেফ ১৫-১-৫১-০, মোটি ২২-৫-৬১-২ ওয়ারিক্যান ৪-২-১০-০, হজ ১-০-৯-০)।