Published : 02 Oct 2024, 10:00 PM
আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী নীতিমালার একাধিক ধারা ভেঙে শাস্তি পেয়েছেন প্রাভিন জায়াবিক্রমা। সব ধরনের ক্রিকেট থেকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন শ্রীলঙ্কার বাঁহাতি স্পিনার।
গত সোমবার ছিল জায়াবিক্রমার ২৬তম জন্মদিন। সেদিনই তাকে নিষেধাজ্ঞা দেয় আইসিসি। তবে আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এই খবর জানায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থা।
মোট শাস্তি এক বছরের হলেও, এর শেষ ৬ মাস থাকছে স্থগিত। প্রথম ৬ মাসে নতুন করে আইসিসির নীতিমালা বিরোধী কিছু না করলে ২০২৫ সালের ১ এপ্রিল থেকে ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন তিনি।
গত অগাস্টে জায়াবিক্রমার বিপক্ষে দুর্নীতির অভিযোগ আনে আইসিসি। এর জবাবে নিজের অবস্থান জানানোর জন্য ১৪ দিন সময় পান তিনি। প্রাথমিকভাবে অস্বীকার করলেও পরে দায় স্বীকার করে নেন বাঁহাতি স্পিনার।
জায়াবিক্রমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো হলো- ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়ে কালক্ষেপণ না করে সেটি আইসিসিকে জানাতে ব্যর্থ হওয়া; ২০২১ লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে (এলপিএল) জুয়ারির পক্ষ হয়ে অন্য এক ক্রিকেটারকে ফিক্সিংয়ে রাজি করানোর প্রস্তাব পেয়েও সেটি আইসিসিকে জানাতে ব্যর্থ হওয়া এবং প্রস্তাব আসার ক্ষুদে বার্তাগুলো মুছে ফেলে তদন্তে বাধা দেওয়া।
২০২১ সালের এলপিএলের আগে জায়াবিক্রমার পুরোনো এক স্কুল বন্ধু তাকে অন্য আরেক ক্রিকেটারকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিতে বলেন। ওই ক্রিকেটার যদি ফিক্সিংয়ের প্রস্তাবে রাজি হন, তাহলে ওই ক্রিকেটার পাবেন ৬০ লাখ শ্রীলঙ্কান রুপি আর মাধ্যম হিসেবে কাজ করায় জায়াবিক্রমা পাবেন ৫০ লাখ রুপি।
এই প্রস্তাবে রাজি হননি জায়াবিক্রমা। ওই ক্রিকেটারকে তিনি কোনো প্রস্তাবও দেননি। তবে বন্ধুকে ওই ক্রিকেটারের মোবাইল নম্বর দেন। ফিক্সিংয়ের এই প্রস্তাব পাওয়ার বিষয়টি তিনি আইসিসি বা শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের এন্টি করাপশন কমিটির কাউকে না জানিয়ে চেপে যান।
পরে জায়াবিক্রমার ওই বন্ধু সরাসরি ওই ক্রিকেটারকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন। দ্বিতীয় কোনো কথা না শুনে সেটি ফিরিয়ে দেন ওই ক্রিকেটার এবং এই প্রস্তাবের কথা এন্টি করাপশন কমিটিকে জানিয়ে দেন। এভাবেই শুরু হয় জায়াবিক্রমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ও তদন্ত।
ঘটনার এখানেই শেষ নয়। তখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা তরুণ স্পিনার জায়াবিক্রমাকে তার বন্ধু প্রস্তাব দেন যে, জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর ছোট ছোট কিছু কাজ যেমন একটি 'নো' বল করলেও অনেক আয় করা সম্ভব। এই প্রস্তাবেও রাজি হননি জায়াবিক্রমা। তবে আবারও এন্টি করাপশন ইউনিটকে জানাতে ব্যর্থ হন তিনি।
পরে ওই বন্ধুর সঙ্গে কথোপকথন ও প্রস্তাব দেওয়া সকল বার্তা মুছে ফেলেন জায়াবিক্রমা। তাই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতিবিরোধী নীতিমালার ২.৪.৭ অনুচ্ছেদ ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়। তদন্তে তা প্রমাণিত হওয়ায় দেওয়া হয়েছে শাস্তি। তবে পরে দায় স্বীকার করে নেওয়ায় স্থগিত রাখা হয় শাস্তির শেষ ৬ মাস।
২০২১ সালের এপ্রিলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া জায়াবিক্রমা জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত ৫টি করে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। ২০২২ সালে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সবশেষ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন তিনি।
২০২১ সালের ওই এলপিএলে সেবারের চ্যাম্পিয়ন জাফনা কিংসে ছিলেন জায়াবিক্রমা। ওই আসরে এক ম্যাচ খেলে ২ উইকেট নেন তরুণ বাঁহাতি স্পিনার।