Published : 19 Jan 2025, 08:21 AM
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটসম্যান ভেঙে দিতে চান টেস্টে ব্রায়ান লারার ৪০০ রানের রেকর্ড! চোখ কপালে ওঠার মতোই ব্যাপার। যুক্তরাষ্ট্রের তো টেস্ট মর্যাদাই নেই! নিকট ভবিষ্যতে পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই। তবে ‘স্বপ্ন’ ব্যাপারটিই তো এমন, অনেক সময়ই যা ছাড়িয়ে যায় যুক্তির সীমানা। স্টিভেন টেইলর সযত্নে বুকে পুষছেন তেমন একটি স্বপ্নই।
তার বাবার অবশ্য বড় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তবে ছেলের মনে তিনি ঠিকই পুঁতে দিয়েছেন ক্রিকেটের বীজ। সেটিই পরে মহীরূহ হয়ে ছড়িয়েছে ডালপালা। মাত্র ৯ বছর বয়সে বড়দের ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করে সাফল্যময় পথচলায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটে অনেক অর্জন ও কীর্তিতে লেখা হয়েছে টেইলরের নাম।
সেই পথই তাকে নিয়ে এসেছে রংপুর রাইডার্সে আর বাংলাদেশের ক্রিকেটে। গ্লোবাল সুপার লিগে রংপুরের শিরোপা জয়ের স্বাদ পাওয়ার পর বিপিএলেও একই দলের হয়ে খেলতে এসেছেন টেইলর। চট্টগ্রামে শনিবার টিম হোটেলের লবিতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি শুনিয়েছেন ক্রিকেটের প্রেমে পড়া, ক্রিকেটার হওয়ার পেছনে বাবার ভূমিকা, লারার রেকর্ড ভাঙার বড় স্বপ্ন নিয়ে ছুটে চলাসহ ক্রিকেটেই আনন্দ খুঁজে পাওয়ার নানা স্মৃতি।
প্রথমবার বিপিএল খেলতে এসেছেন। এখন পর্যন্ত অভিজ্ঞতা কেমন?
টেইলর: মন্দ নয়! টুর্নামেন্টে দারুণ খেলছি আমরা। আমিও ভালো শুরু পাচ্ছি। শুধু ইনিংস টেনে নিতে পারছি না। গত রাতে (শুক্রবার) নিজের জাত দেখানোর ভালো সুযোগ পেয়েছিলাম। সেভাবে করতে পারিনি। তবে বিপিএল উপভোগ করছি।
দলের পারফরম্যান্সের কথা বললেন। টানা ৮ ম্যাচ জিতেছেন আপনারা। সার্বিক আবহ নিশ্চয়ই দারুণ!
টেইলর: দলের সবার বন্ধন দারুণ। আমরা সম্ভাব্য সব কিছু কাজে লাগিয়ে জেতার চেষ্টা করি। দিন শেষে ক্রিকেট খেলার কারণ এটাই। তবে নির্ভার হওয়ার সুযোগ নেই। তাই প্রতিদিন মাঠে নেমে নিজেদের সেরাটা দেখানোর চেষ্টা করি।
বিপিএলের আগে গ্লোবাল সুপার লিগ জিতেছেন। ফাইনালে ৬৮ রানের ইনিংস খেলেছেন। সৌম্য সরকারের সঙ্গে ১৩ ওভারে ১২৪ রানের জুটি হয়েছিল। ওই ম্যাচ, ওই মুহূর্তগুলো মনে পড়ে?
টেইলর: ওই ফাইনালের ব্যাপারে সবার আগে মাথায় আসে প্রথম ওভারের একটি ঘটনা। রিপ্লেতে বড় পর্দায় দেখাচ্ছিল যে, আমার ব্যাটের কানায় লেগেছে বল। আমি বলে দিতে পারি, একদমই ব্যাটে লাগেনি। আমি কোনো টেরই পাইনি। কেউই কিছু শুনতে পায়নি। কিন্তু স্নিকোমিটারে দেখাচ্ছে ব্যাটে লেগেছে। তাই স্নিকোমিটারে একদমই বিশ্বাস করি না (হাসি)।
এরপর ম্যাচে আমি আর সৌম্য বড় একটা জুটি গড়ি। আমার মনে হয়, প্রথম ওভার খেলার পরই দুজন বুঝতে পেরেছিলাম, এখানে ভালো কিছু করা সম্ভব।
সার্বিকভাবে গ্লোবাল সুপার লিগে খেলার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
টেইলর: খুব ভালো! বেশ কঠিনও ছিল। আর্দ্রতাপূর্ণ আবহাওয়া ছিল। এমন আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে বেশ কষ্ট হয়েছে। কয়েকজন অসুস্থও হয়ে পড়েছিল।
তবে সব মিলিয়ে ভালো টুর্নামেন্ট ছিল। আমরা দারুণ সময় কাটিয়েছি। মিকি (আর্থার) এটি নিশ্চিত করেছে যে, সবাই যেন একটা দল হয়ে থাকে। অনুশীলনে যা-ই করি না কেন, সেটার যেন একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে। যা এখন পর্যন্ত আমাদের দলে দারুণভাবে কাজ করছে।
অনুশীলনে আমরা দেখেছি সতীর্থদের সঙ্গে বেশ দুষ্টুমি করছেন। দলের কার সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব সবচেয়ে ভালো?
টেইলর: আমি বলব দুই সাইফের কথা- সাইফ হাসান ও সাইফ উদ্দিন। সাইফ উদ্দিনকে আগে থেকেই চিনি। সাইফ হাসানের সঙ্গে জিএসএলে পরিচয় হলো। দুজনই খুব ভালো বন্ধু। ওহ হ্যাঁ! সৌম্য সরকারের কথা না বললেই নয়! সে-ই সবার ওপরে।
আপনার ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের অভিজ্ঞতা অনেক পুরোনো । ২০১৫ সালে প্রথম ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন। সেই সময়ের ব্যাপারে যদি বলতেন…।
টেইলর: আমি মূলত জ্যামাইকায় চলে যাওয়ার একটা সুযোগ খুঁজছিলাম। ওই সময় আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) আইসিসি ডিভিশন থ্রি পর্যায়ে খেলি। সেখানে উগান্ডার কাছে হেরে যাওয়ায় ডিভিশন টুতে উঠতে পারিনি। ফলে দেড় বছরের মতো বিরতি পড়ে যায় আমাদের ক্রিকেটে।
তবে আমার ভাবনা ভিন্ন ছিল। পেশাদার ক্রিকেট খেলতে চাচ্ছিলাম। তাই বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বললাম যে, আমি জ্যামাইকায় চলে যেতে চাই। মা এতে খুশি ছিলেন না। তবে বাবা সবসময় সায় দিয়েছেন। কারণ তিনি নিজেও ক্রিকেটার ছিলেন। কখনও জ্যামাইকার হয়ে খেলেননি। তবে তিনি চেষ্টা করে গেছেন। কিছুটা রাজনীতিও ছিল। সেদিকে যেতে চাই না।
বাবা-ই জ্যামাইকায় যেতে সাহস দেন। তিনি বলেন যে, ‘স্বপ্নকে তাড়া করতে থাকো। যা হবে, দেখা যাবে।’ জ্যামাইকায় গিয়ে স্থানীয় ক্রিকেট খেলা শুরু করি। খুব দ্রুত কয়েকটি সেঞ্চুরি করি। তাই আমার নাম ছড়াতে থাকে।
অবশ্য এর আগেই আমার নাম কিছুটা ছড়িয়ে পড়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে তখন রান করছিলাম। পরপর দুই ম্যাচে বারমুডা ও কেইম্যান আইল্যান্ডসের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করায় অনেকে আমাকে চিনত। এমন নয় যে আমি অপরিচিত কেউ ছিলাম। শুধু আরও বড় পর্যায়ে রানের অপেক্ষা ছিল।
বাবাও ক্রিকেট খেলতেন বললেন। তার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের গল্পটা কেমন?
টেইলর: বাবার জন্ম ও বড় হওয়া পোর্টল্যান্ড জ্যামাইকায়। জ্যামাইকার উত্তর-পূর্ব দিকে এটি। তিনি পোর্টল্যান্ডের হয়ে স্থানীয় ক্রিকেট খেলেছেন। বাঁহাতি স্পিনার ছিলেন। পোর্টল্যান্ডের সেরা একাদশ নিয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন হয়েছে। সেখানে বাবার নাম ছিল।
আমি অবাকই হয়েছিলাম। আমার এখনও মনে হয়, তিনি তেমন ভালো ক্রিকেটার নন (হাসি)। মজা করলাম। তিনি আসলেই (ভালো ক্রিকেটার) ছিলেন। তবে এসব ছাপিয়ে তিনি আমার কাছে আমার বাবা। এটাই বড়।
কোর্টনি ওয়ালশ বা আর অন্যান্য সাবেক ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, ‘হ্যাঁ…হ্যাঁ! পোর্টল্যান্ড থেকে ছোটখাটো গড়নের একজন ছিল…।’ ওয়ালশের মতো একজন যদি বাবার কথা মনে রাখেন, তার মানে তিনি নিশ্চয়ই অন্তত চলনসই ক্রিকেটার ছিলেন!
তাহলে নিশ্চিতভাবেই আপনার ক্রিকেট যাত্রায় সবচেয়ে বড় প্রভাব বাবার?
টেইলর: অবশ্যই! শতভাগ। আমার ক্রিকেট শুরু করার পেছনে তিনিই মূল কারণ।
একটা অবধারিত প্রশ্ন, যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট হয়তো জনপ্রিয়তার দিক থেকে প্রথম দশটি খেলার মধ্যেও নেই। কিন্তু আপনি কেন ক্রিকেটকেই বেছে নিলেন? সিদ্ধান্তটা নিশ্চয়ই কঠিন ছিল?
টেইলর: তা তো বটেই। তবে আমি আমার বাবাকে ভালোবাসি। তার সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক। প্রতি রোববার তিনি ক্রিকেট খেলতে যেতেন। আমার বয়স ৩-৪ বছর হবে, তখন থেকেই নিয়মিত রোববারে বাবার সঙ্গে মাঠে যেতাম। মাও সঙ্গে যেতেন তখন। তবে ধীরে ধীরে খেলাটি থেকে তার আগ্রহ কমে গেছে।
আমি দেখতাম সাদা জার্সি, কেডস পরে প্রতি রোববারে বাবা ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছেন। কখনও কখনও সপ্তাহের মাঝেও তারা অনুশীলন করতেন। তাকে দেখতে দেখতেই আমি খেলাটির প্রেমে পড়ে যাই।
স্কুলজীবনে ফুটবল, বাস্কেটবল খেলেছি নিয়মিত। ট্র্যাক এন্ড ফিল্ডে রাজ্য পর্যায় পর্যন্ত গিয়েছি। এরপর আর ওদিকে এগোইনি। যেটা বললাম, ভালোবাসাটা ক্রিকেটেই ছিল সবসময়।
১৫ বছর বয়সে জাতীয় দলের হয়ে প্রথম সফর করেছেন, ১৬ বছর বয়সে অভিষেক। এরও আগে, মাত্র ৯ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের সিনিয়র ক্রিকেট লিগ খেলেছেন। এত অল্প বয়সে...!
টেইলর: সেটিই আমার প্রথম ম্যাচ ছিল। তখনও আমার সাদা জার্সিই ছিল না। নিয়মিত বাসায় পরার সাদা টি-শার্টের সঙ্গে ধূসর প্যান্ট পরে খেলতে নেমেছিলাম। ডিভিশন টু ক্রিকেট লিগ ছিল সেটি। আইল্যান্ডার ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলেছিলাম।
ওই দলে আমার খুব ভালো একজন বন্ধু ছিল। কয়েক বছর আগে মারা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট খেলতে সে আমাকে অনেক উৎসাহ দিয়েছে। বাবা চায়নি আমি (যুক্তরাষ্ট্রে) খেলি। তবে সে বাবাকে বলত, ‘ওকে আসতে দাও। আমাদের সঙ্গে খেলবে।’
প্রথম ম্যাচে আমি হয়তো জীবনের সেরা ক্যাচগুলোর একটি নিয়েছিলাম। শর্ট মিড উইকেটে সামনে ঝাঁপিয়ে... মাত্র ৯ বছর বয়সে। জীবনের প্রথম ম্যাচ। আমার খুব ভালো মনে আছে (হাসি)।
আপনার স্মৃতিশক্তি প্রখর! প্রতিটি ঘটনা খুব ভালোভাবে মনে রেখেছেন...
টেইলর: আমি আসলে মুহুর্তগুলো উপভোগ করেছি। আমি অনেক বড় ক্রিকেট পাগল।
সবসময় বাবার সঙ্গে খেলা দেখতাম। আমাদের ঘরে ডিশ নেটওয়ার্ক ছিল। তবে ২০০৬ সালে মা আমাকে ভারত ও ইংল্যান্ডের একটি ম্যাচ দেখতে দিতে চাচ্ছিলেন না। মাকে বললাম, আমাকে এই ম্যাচটি দেখতে দিতেই হবে। মা রাজি হচ্ছিলেন না। বাবার কাছে গেলাম। তিনি (ম্যাচ দেখার সাবস্ক্রিপশন) কিনে দিলেন।
কিন্তু টিভি ছিল মায়ের ঘরে। সেদিন ভোর ৪-৫টা পর্যন্ত খেলা দেখি। একপর্যায়ে আমাকে ঘর থেকে বেরই করে দেন তিনি (হাসি)।
আসলে অনেক কিছু মনে আছে। ক্রিকেট নিয়ে অনেক স্মৃতি এখনও তাজা। এসব অনেক আনন্দ দেয়।
ভক্ত হিসেবে ক্রিকেট দেখার সবচেয়ে পুরোনো স্মৃতি কোনটি?
টেইলর: সবচেয়ে পুরোনো... অ্যান্টিগায় ব্রায়ান চার্লস লারার ৪০০ রান। আমি টিভিতে সরাসরি দেখেছি। জীবনভর গল্প করার মতো স্মৃতি। সেদিন বাবাকে বলেছিলাম, ‘এই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়া ক্রিকেটার হতে চাই আমি।’ সেটি যুক্তরাষ্ট্রের হয়েই। একদিন হয়তো আমরা টেস্ট ক্রিকেট খেলব। সেদিন এটিই (৪০০ রানের রেকর্ড) লক্ষ্য থাকবে। একদম প্রথম দিন থেকেই এটি আমার স্বপ্ন, লারার রেকর্ড ভাঙব!
আবার আপনার ক্যারিয়ারে ফিরা যাক। ২০১৩ সাল...
টেইলর: পরপর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি…।
ঠিক তা-ই। টি-টোয়েন্টিতে দুই সেঞ্চুরির পর এক দিনের ক্রিকেটে নেপালের বিপক্ষে ১৬২ রানের ইনিংস। ওই বছরটা নিশ্চিতভাবেই স্মরণীয়?
টেইলর: আমি বলব, যুক্তরাষ্ট্রে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অগ্রগতির বছর সেটি। বিশ্বজুড়েই তখন টি-টোয়েন্টি জনপ্রিয় হতে শুরু করেছিল।
আমার প্রথম সেঞ্চুরি ছিল বারমুডার বিপক্ষে। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ। তবে আমরা জানতাম এই ম্যাচ জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হতে পারব। কারণ পরে আর্জেন্টিনা, কেইম্যান আইল্যান্ডসকে হারাতে পারব, বিশ্বাস ছিল।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামার সময় বৃষ্টি পড়ছিল। মনে আছে, প্রথম বল ব্যাটের খুব কাছ ঘেঁষে চলে গেল। ভাবলাম, এই উইকেট নিশ্চয়ই কঠিন হবে ব্যাটিং। পরের বল ইনসুইঙ্গার। ফ্লিক করে ছক্কা মেরে দিলাম। হেহ… খুব সহজ (হাসি)! এরপর ছন্দ পেয়ে যাই।
পরে কেইম্যান আইল্যান্ডসের সঙ্গে সম্ভবত ৫৫ বলে ১২১ রান (৬২ বলে ১২৭) করেছিলাম। বলব না সেগুলো আমার সেরা ইনিংস অথবা প্রতিপক্ষের বোলিংয়ের মান খুব ভাল ছিল। তবে ওই সময় রান করতে পারাটা অনেক এগিয়ে দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি করা যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র ব্যাটসম্যান আপনি। এটি কতটা আনন্দ দেয়?
টেইলর: বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ ছিল জিম্বাবুয়েতে, জার্সির বিপক্ষে। তাদের বিপক্ষে বেশ দুটি টি-টোয়েন্টি ও তিনটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছিলাম আমরা। টি-টোয়েন্টি শেষ করে ওয়ানডে খেলার সময় আমার কিটব্যাগ নামিবিয়ায় আটকে যায়। এখনও জানি না, কিটব্যাগটি আসলে কোথায়!
তাই বিভিন্ন ক্রিকেটারের কাছ থেকে ব্যাট, জুতা, হেলমেট, প্যাড ধার করতে হয় আমাকে। এসব দেখে তারা ভেবেছিল, আমি হয়তো দলের সবচেয়ে বাজে ক্রিকেটারদের একজন, যার কিনা ক্রিকেট সরঞ্জামই নেই!
আমার চেয়ে ভালো ক্রিকেটার অবশ্যই ছিল দলে। আমি রান করতে পারছিলাম না। ওই প্রস্তুতি ম্যাচগুলোতে রান করি। পরে স্পন্সরশিপও পেয়ে যাই। নিজস্ব সরঞ্জাম দিয়েই অনুশীলন করে বাছাইয়ের ম্যাচ খেলতে যাই।
জার্সির বিপক্ষে ছিল প্রথম ম্যাচ। আমি সেঞ্চুরি করি। তাদের প্রতিক্রিয়া অনেকটা এমন ছিল, ‘আরে! আমরা তো তোমাকে হালকাভাবে নিয়েছি। অন্যদের জন্য পরিকল্পনা সাজিয়ে বসে আছি।’ সঠিক সময়ে রান করাই এখন পর্যন্ত আমার সবচেয়ে ভালো ব্যাপার।
ক্রিকেটার হওয়ার পথে কোনো ক্রিকেটারকে আদর্শ মেনে বড় হয়েছেন?
টেইলর: দুজনের নাম বলব- ব্রায়ান চার্লস লারা ও ক্রিস্টোফার হেনরি গেইল।
আপনার সঙ্গে অ্যারন জোন্সও বিপিএল খেলছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আরও কয়েকজন বিভিন্ন লিগ খেলে। সহযোগী দেশগুলোর ক্রিকেটে এটি কতটা সাহায্য করে?
টেইলর: আশা করি, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটকে সহায়তা করবে। আমরা ভালো করতে পারলে যুক্তরাষ্ট্রের আরও ক্রিকেটার সুযোগ পাবে। উন্মুক্ত চাঁদ বিগ ব্যাশ খেলেছে। হয়তো ভালো করতে পারেনি। তবে সুযোগ পেয়েছে। একইভাবে আন্দ্রিয়েস হাউস আইএলটি-টোয়েন্টি, সিপিএল, নেপালের লিগেও খেলেছে। যত বেশি ক্রিকেটার বাইরের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলবে, তত ভালো হবে।
জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব অধ্যায় নিয়ে কিছু বলবেন? ২০১৩ সালে তারা আপনাকে সরিয়ে দেয়। ২০১৬ সালে দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব পেয়ে কিছুদিন পর আপনিই ছেড়ে দেন...
টেইলর: অধিনায়কত্বের ব্যাপারে বলব, আনন্দময় ছিল। ওই স্মৃতি আমার ভালো লাগে। সময়ে সময়ে উত্থান-পতন ছিল। তবে দিন শেষে একসঙ্গে থেকে ক্রিকেট খেলা ও ভালো কিছু করাই আমাদের লক্ষ্য। আমি এর বেশি কিছু বলব না (হাসি)।