Published : 19 May 2025, 12:28 PM
ম্যাচের শুরুর আগে লাহোর কালান্দার্সের দুই নতুন তারকাকে স্বাগত জানালেন স্বত্বাধিকারী সামিন রানা । শ্রীলঙ্কান কিপার-ব্যাটার কুসাল পেরেরার হাতে ক্যাপ তুলে দিলেন সিকান্দার রাজা, সাকিব আল হাসানের মাথায় ক্যাপ পরিয়ে দিলেন অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি। এরপর সামিন রানা বললেন, “আমরা আরও একজনকে নিয়ে ঘোষণা দিতে চাই, চার বছর আগে যে আমাদের হয়ে পিএসএলে খেলেছে, এবার সে ফিরে আসছে, সালমান মির্জা…।”
কালান্দার্সে অভিষেকে দুই তারকা ভালো কিছু করতে পারেননি। তবে জ্বলে ওঠেন সেই সালমান। চার বছর পর পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) ফিরে চার উইকেট নিয়ে ম্যান অব দা ম্যাচ এই বাঁহাতি পেসারই!
৩১ বছর বয়সী পেসারকে গত বিপিএলে দলে নিয়েছিল দুর্বার রাজশাহী। তবে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। কালান্দার্সের হয়ে রোববার তার গতি, সুইং ও মুভমেন্টে নাকাল হন পেশাওয়ার জালমির ব্যাটসম্যানরা।
বৃষ্টিতে ১৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে কালান্দার্স তোলে ৮ উইকেটে ১৪৯ রান। ওপেনিংয়ে ৩৬ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলেন ফাখার জামান। তার উদ্বোধনী জুটির সঙ্গী মোহাম্মাদ নাইম করেন ১০ বলে ২২।
চারে নেমে ৮ বলে ১৭ করে রান আউট হন পেরেরা। সাতে নেমে সাকিব বোল্ড হন প্রথম বলেই। আসিফ আলি করেন ৬ বলে ১৮।
কঠিন রান তাড়ার চ্যালেঞ্জে জালমির ব্যাটিং জ্বালিয়ে দেন মূলত সালমানই। প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে প্রথম ওভারেই দেখা পান তিনি উইকেটের। ‘হিট উইকেট’ হয়ে ফিরে যান বিপজ্জনক সাইম আইয়ুব।
পরের ওভারে টানা দুই বলে তিনি বোল্ড করে দেন মোহাম্মাদ হারিস ও ম্যাক্স ব্রায়ান্টকে। সালমানের গতি ও মুভমেন্টের জবাবই ছিল না দুই ব্যাটসম্যানের। দুজনেরই দুটি করে স্টাম্প উপড়ে যায়।
পরে শেষ দিকে ফিরে তিনি আবার বোল্ড করে দেন ১২ বলে ২৪ রান করা আহমেদ দানিয়ালকে।
কৌতূহল জাগতেই পারে, এমন আগুনে বোলিং করা বোলার এতদিন ছিলেন কোথায়!
তার ক্যারিয়ারের পথচলা দেখে জানা যাচ্ছে, ২০২১ পিএসএলে দুটি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি কালান্দার্সের হয়ে। একটিতে ২ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন, আরেকটিতে চার ওভারে ৩৫ রান দিয়ে উইকেট ছিল দুটি।
এরপর বলতে গেলে একরকম হারিয়েই যান তিনি।
পাকিস্তানে স্বীকৃতি কোনো ধরনের ক্রিকেটেই তাকে দেখা যায়নি। তার পুনরুজ্জীবন ঘটে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটে। ২০২৩ সালের নভেম্বরে সেখানকার প্রো৫০ টুর্নামেন্টে মাউন্টেনিয়ার্সের হয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। একই দলের হয়ে কদিন পর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও পা রাখেন।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ছয় ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৩১ উইকেট, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তিন ম্যাচে দুটি। সব ম্যাচ জিম্বাবুয়ের মাউন্টেনিয়ার্সের হয়েই।
জিম্বাবুয়েতে পারফর্ম করেই পাকিস্তানের ক্রিকেটে ফেরার সুযোগ হয় তার। গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে গ্লোবাল সুপার লিগে লাহোর কালান্দার্সের হয়ে খেলে চার ম্যাচে শিকার করেন পাঁচ উইকেট।
সেই পথ ধরে গত মার্চে ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে লাহোর ‘বি’ দলের হয়ে সুযোগ পান। সাত ম্যাচ খেলে ওই আসরে ১১ উইকেট শিকার করেন ওভারপ্রতি সাতের কম রান দিয়ে।
এরপরও পিএসএলে ফিরতে অপেক্ষায় থাকতে হয় তাকে। স্থগিত হওয়া আসর আবার শুরুর পর অবশেষে তার অপেক্ষার অবসান। ফেরার ম্যাচেই এমন পারফর্ম করলেন যে, তাকে আর বাইরে রাখাই কঠিন হবে। এই ৩১ বছর বয়সে ক্যারিয়ারের পুনরুজ্জীবন হলো বলা যায়।
বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান এই ম্যাচ দিয়ে ক্রিকেটে ফিরেছেন প্রায় ছয় মাস পর। ব্যাটিংয়ে প্রথম বলে আউট হওয়ার পর বোলিংয়ে দুই ওভারে ১৮ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।
এই ম্যাচে ২৬ রানে জিতে প্লে-অফে খেলা নিশ্চিত করেছে কালান্দার্স। যদিও শীর্ষ দুইয়ে জায়গা করে নিতে পারেনি দলটি। এলিমিনেটর ম্যাচে তারা খেলবে বৃহস্পতিবার।