Published : 16 May 2025, 07:21 PM
শুরুর ধাক্কা সামলে নিক কেলি ও জো কার্টারের জুটি তখন জমাট। দুজনের আঁটসাঁট ব্যাটিংয়ে কোনোভাবে চিড় ধরাতে পারছিলেন না বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বোলাররা। হঠাৎ এনামুল হকের বাউন্সারে মাথায় আঘাত পেলেন কার্টার। মাঠ ছেড়ে গেলেন নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ অধিনায়ক। জুটিতে ছেদ পড়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে দ্রুত তিন উইকেট নিলেন হাসান মুরাদ। তবে কেলিকে থামাতে পারলেন না এই বাঁহাতি স্পিনার বা অন্য কেউ।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার দারুণ ব্যাটিংয়ে অপরাজিত সেঞ্চুরিতে দিন শেষ করেন কেলি। সঙ্গে কার্টারের পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংসে দুইশ ছাড়ায় নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ দলের লিড।
প্রথম ইনিংসের ১২ রানের ঘাটতি পুষিয়ে প্রথম আনঅফিসিয়াল টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ২০৪ রানে এগিয়ে কিউইরা।
আলোকস্বল্পতায় আগেভাগে খেলা বন্ধ হওয়া পর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২১৬ রান।
প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে দশম সেঞ্চুরি করে ১১৭ রানে অপরাজিত কেলি। চোটে মাঠ ছাড়ার পর আবার ফিরে ৫৮ রানে আউট হন কার্টার।
সকালে ৮ উইকেটে ২৪৯ রান নিয়ে দিন শুরু করে আর ১৯ রান যোগ করতে বাংলাদেশ ‘এ’ দল।
ছোট্ট লিড পাওয়া দলের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে মুরাদ ছাড়া কেউই তেমন ভালো বোলিং করতে পারেননি।
প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়া সৈয়দ খালেদ আহমেদ দ্বিতীয় ইনিংসেও ভালো শুরু করেন। তৃতীয় ওভারে দারুণ ডেলিভারিতে রিস মারিয়ুকে কট বিহাইন্ড করেন অভিজ্ঞ পেসার। তবে এরপর আর সুবিধা করতে পারেননি তিনি। অন্য দুই পেসার এনামুল ও ইবাদত হোসেন চৌধুরিও পারেননি জ্বলে উঠতে।
চাপ সামলে বড় জুটি গড়ে তোলেন কার্টার ও কেলি। স্বাগতিকদের হতাশায় ডুবিয়ে প্রথম সেশনের বাকি সময় নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন নিউ জিল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটের অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যান।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর ৭৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন কেলি। লিড একশ ছোঁয়ার আগে এনামুলের বাউন্সারে আঘাত পান কার্টার। মাঠেই শ্রুশ্রূষা নিয়ে ব্যাটিংয়ের জন্য দাঁড়িয়ে যান তিনি। এক ওভার পর আবার অস্বস্তি অনুভব করায় আর খেলা চালিয়ে নেননি কিউই অধিনায়ক।
৯৭ রানে ছেদ পড়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটির। শতরানের জুটি থামার পর নতুন ব্যাটসম্যানদের ক্রিজে থিতু হতে দেননি মুরাদ।
বড় শটের চেষ্টায় স্টাম্পড হন মোহাম্মদ আব্বাস। পরে দারুণ ডেলিভারিতে ম্যাট বয়েলকে বোল্ড করেন বাঁহাতি স্পিনার। তিন ওভার পর স্লিপে ক্যাচ দেন জশ ক্লার্কসন।
৩০ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারানোর পর আবার ব্যাটিংয়ে নামেন কার্টার। বিরতি পড়লেও একই ছন্দে খেলতে থাকেন ৩২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। ৫ চারে ১২৮ বলে পঞ্চাশ করেন তিনি।
কিছুক্ষণ পর তিন অঙ্কে পৌঁছান কেলি। ১২ চার ও ২ ছক্কায় কাঙ্ক্ষিত মাইফলক ছুঁতে ১৬৮ বল খেলেন ৩১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
কার্টার অবশ্য ফিফটির পর বেশি দূর যেতে পারেননি। নাঈম হাসানের বলে ছক্কা মেরে পরের বলে স্লিপে ধরা পড়েন সফরকারী অধিনায়ক। ৫ চার ও ১ ছক্কায় ১৩৮ বলে করেন ৫৮ রান।
দ্বিতীয় দফায় কেলির সঙ্গে তার জুটিতে আসে ৫২ রান।
দিনের বাকি অংশে আর উইকেট পড়তে দেননি কেলি ও মিচেল হে। ১৩ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৭ রানে অপরাজিত এই সফরে নিউ জিল্যান্ডের সাদা বলের অধিনায়ক। ১১ রান নিয়ে শেষ দিনের খেলা শুরু করবেন হে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ ১ম ইনিংস: ২৫৬
বাংলাদেশ ‘এ’ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২৪৯/৮) ৬৯.৩ ওভারে ২৬৮ (মুরাদ ১৫*, ইবাদত ১২, এনামুল ৫; ক্লার্ক ১৯-৩-৮৮-৩, আব্বাস ৮-০-৪২-১, লেনক্স ১৭.৩-৩-৩৯-১, ক্লার্কসন ১৫-৩-৪৪-৪, আশোক ১০-২-৫৫-১)
নিউ জিল্যান্ড ’এ’ ২য় ইনিংস: ৬৬ ওভারে ২১৬/৫ (মারিয়ু ৬, কার্টার ৫৮, কেলি ১১৭, আব্বাস ২, বয়েল ২, ক্লার্কসন ৫, হে ১১*; খালেদ ১০-০-৩০-১, এনামুল ৫-০-৪১-০, নাঈম ২২-৩-৪৭-১, ইবাদত ৯-২-৩৩-০, মুরাদ ১৯-১-৫১-৩, জয় ১-১-০-০)