Published : 14 Mar 2024, 05:44 PM
আড়াইশ ছুঁইছুঁই উদ্বোধনী জুটিতে দৃঢ় ভিত গড়ে দিলেন শাহাদাত হোসেন ও পারভেজ হোসেন। দুজনই পেলেন তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া। শেষে ঝড় তুলে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে বিশাল সংগ্রহে পৌঁছে দিলেন শেখ মেহেদি হাসান। এর জবাবে কোনো লড়াইও করতে পারল না ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে ১৬৫ রানে জিতেছে প্রাইম ব্যাংক। তাদের টানা দ্বিতীয় জয় এটি। ব্রাদার্স হেরেছে দুটি ম্যাচেই।
গাবতলীতে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে রাস্তা অবরোধ করে রাখায় তীব্র জ্যামে ব্রাদার্সের মাঠে পৌঁছতে দেরি হওয়ায় ম্যাচ থেকে এক ওভার কমিয়ে দেওয়া হয়। না হলে হয়তো লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ড নিজেদের করে নিতে পারত প্রাইম ব্যাংক।
পারভেজ ও শাহাদাতের সেঞ্চুরি এবং শেখ মেহেদির শেষের ঝড়ে ৪ উইকেটে ৩৮০ রান করে প্রাইম ব্যাংক। যা এই সংস্করণে বাংলাদেশের কোনো দলের তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। লক্ষ্য তাড়ায় ৯ উইকেটে ২১৫ রানে থামে ব্রাদার্স।
ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ১৫১ রান করেন পারভেজ। ১২৯ বলে ৯ চার ও ৮ ছক্কার ইনিংসে তার হাতেই ওঠে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
এছাড়া লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে পঞ্চম সেঞ্চুরিতে ১১১ বলে ১১৯ রান করেন শাহাদাত। পারভেজের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে তিনি যোগ করেন ২৪৬ রান।
লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম উইকেটে এর চেয়ে বড় জুটি আছে স্রেফ দুটি। ২০১৯ সালে আবাহনী লিমিটেডের হয়ে সৌম্য সরকার ও জহুরুল ইসলামের জুটি ছিল ৩১২ রানের। ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচে তামিম ইকবাল ও লিটন কুমার দাস গড়েন ২৯২ রানের বন্ধন।
জ্যামের কারণে মাঠে পৌঁছতে দেরি হওয়ায় তামিম ইকবাল তিন নম্বরে নামায় এদিন ওপেনিংয়ে সুযোগ পান প্রথম ম্যাচে পাঁচে খেলা পারভেজ। দ্বিতীয় ওভারে সালাউদ্দিন শাকিলের বলে তিন চারে শুরুতেই তিনি আভাস দেন ঝড় তোলার।
প্রথম ওভারে আবু জায়েদের বলে বাউন্ডারি মারা শাহাদাতও খেলতে থাকেন একই ছন্দে। ৫৬ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করেন তিনি। সেখান থেকে তিন অঙ্কে যেতে খেলেন স্রেফ ৩৯ বল। সেঞ্চুরির পর আর দুটি বাউন্ডারি মারেন তিনি। আবু জায়েদের বলে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার ইনিংস।
তিনে নেমে ১৫ বলে ১৬ রান করেন তামিম।
পঞ্চাশ করতে পারভেজ খেলেন ৫৮ বল। পরের পঞ্চাশে বাঁহাতি ওপেনার নেন ৪৮ বল। তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ঝড় বইয়ে দেন ব্রাদার্সের বোলারদের ওপর। সেঞ্চুরি থেকে দেড়শতে যেতে তার লাগে কেবল ২২ বল। মনির হোসেনের বলে মারেন ২টি ছক্কা। সালাউদ্দিনের ওভারেও দুবার বল উড়িয়ে পাঠান সীমানায়। ফিরতি ক্যাচ নিয়ে পারভেজকে থামান আবু জায়েদ।
পারভেজ ফিরলেও থামেনি প্রাইম ব্যাংকের ঝড়। ছয় নম্বরে নেমে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় স্রেফ ১৭ বলে ৪৫ রান করেন মেহেদি।
রান তাড়ায় ইতিবাচক শুরু করেন ইমতিয়াজ হোসেন ও আব্দুল মজিদ। উদ্বোধনী জুটিতে দুজন যোগ করেন ৫৭ রান। ৩৯ বলে ৩১ রান করে ফেরেন ইমতিয়াজ।
দ্বিতীয় উইকেটে রহমতউল্লাহ আলির সঙ্গে ৬২ রানের জুটি গড়েন মজিদ। ৭৬ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন ফেরেন এই ওপেনার। রহমতউল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ৪২ বলে ৩৭ রান।
শুরুর তিন ব্যাটসম্যান ত্রিশ ছোঁয়া ইনিংস খেললেও রানের চাহিদার সঙ্গে টক্কর দিতে পারেননি। পরের দিকের ব্যাটসম্যানরাও পারেননি আশা জাগানোর মতো কিছু করতে। ফলে বড় পরাজয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ব্রাদার্সকে।
৩টি করে উইকেট নেন প্রাইম ব্যাংকের দুই বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম ও সানজামুল ইসলাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ৪৯ ওভারে ৩৮০/৪ (শাহাদাত ১১৯, পারভেজ ১৫১, তামিম ১৬, জাকির ১৭*, মিঠুন ৭, মেহেদি ৪৫*; আবু জায়েদ ১০-০-৭০-৩, সালাউদ্দিন ৯-০-৮৫-১, জাকিরুল ১-০-১৫-০, রাহাতুল ৬-০-৩৫-০, মাহমুদুল ৬-০-৪০-০, মনির ১০-০-৮৩-০, রহমতউল্লাহ ৫-০-৩৪-০, ইমতিয়াজ ২-০-১৪-০)
ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৪৯ ওভারে ২১৫/৯ (ইমতিয়াজ ৩১, মজিদ ৫৬, রহমতউল্লাহ ৩৭, মাহমুদুল ২, রাহাতুল ৮, আসিফ ৩, জাকিরুল ৩, শাকিল ২৩*, মনির ৬, আবু জায়েদ ১৭, সালাউদ্দিন ১৪*; হাসান ৬-০-৩৩-০, নাজমুল ১০-১-৩৪-৩, সানজামুল ১০-০-৪০-৩, মেহেদি ১০-০-৪৬-১, রুবেল ৬-১-২৪-১, নাঈম ৩-০-১০-০, শাহাদাত ১-০-৮-০, জাকির ২-০-১২-০, পারভেজ ১-০-৪-০)
ফল: প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ১৬৫ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: পারভেজ হোসেন