Published : 12 Jun 2024, 08:32 PM
ভূমি সংক্রান্ত কাজে নাগরিকদের হয়রানি কমতে শুরু করেছে দাবি করে ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, হয়রানি বন্ধে সময় চেয়েছেন।
চট্টগ্রামে বুধবার এক আলোচনা সভার পর মন্ত্রীর কাছে ভূমি অফিসগুলোতে হয়রানি বন্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানতে চাওয়া হয়েছিল।
এসময় তিনি বলেন, “হয়রানির অভিযোগ রয়েছে একথা আমরাও স্বীকার করছি। কিন্তু হয়রানি কমা শুরু করেছে। একটু সময় দেন আমাদেরকে। এগুলো আপনারা তুলে ধরবেন। আমি ওয়েলকাম করি।”
ভূমি সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়ামে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: স্মার্ট ভূমিসেবা ও ভূমি ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক এই আলোচনা সভা হয়।
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জমি-জলাশয় ভরাট করে বাড়িঘর তৈরি হলে ভবিষ্যতে যে ভুগতে হবে, সভায় সেটিও বলেন।
সভার প্রধান অতিথি মন্ত্রী বলেন, যেভাবে মানুষ জমি, পুকুর ভরাট করে ঘর তৈরি করছে তাতে আজ থেকে ৫০ বছর পর আর কোনো কৃষি জমি অবশিষ্ট থাকবে না।
“আমাদের দেশের কৃষিজমিতে বড় বড় বিল্ডিং বানিয়ে মানুষ ঘর তৈরি করছে। কিন্তু শুধু ঘর থাকলে হবে না আপনাকে দু’বেলা ভাতও খেতে হবে। তাই কৃষি জমি, নদী ও পুকুর সংরক্ষণের বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।”
ভূমিমন্ত্রী বলেন, “ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পদ্ধতি উদ্ভাবনের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু দেশের মানুষ যদি স্মার্ট ভূমিসেবা সম্পর্কে না জানে তাহলে আমাদের একার পক্ষে এটা অনেক সময়সাপেক্ষ হয়ে উঠবে।
“আমরা যারা শিক্ষিত তারাও ভূমির অনেক বিষয়ে জানি না। তাই নবম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে ভূমি সংক্রান্ত বেশকিছু বিষয় রাখা হয়েছে। যাতে অন্তত কেউ নবম শ্রেণি পযর্ন্ত পড়লে ভূমি সংক্রান্ত কিছু ধারণা পাওয়া যাবে।”
তিনি বলেন, “ভূমি সপ্তাহ উদযাপনের পরেও সারাবছর অফিসে ভূমিসেবা বিষয়ক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়া জরুরি। একদম জেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত সব জায়গায় ভূমি সংক্রান্ত সকল বিষয় হাতে কলমে শেখানো হবে। অনলাইনের মাধ্যমে একজন গ্রাহক যাতে ঘরে বসে ভূমিসেবা নিতে পারে সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”
সহকারী কমিশনারদেরকে (ভূমি) সেবা নিতে যাওয়া নাগরিকদের সম্মান দিয়ে কথা বলার আহ্বান জানান।
“তাদের সমস্যাগুলো মনোযোগ সহকারে শুনে কীভাবে তা সমাধান করা যায় সে ব্যাপারে পরামর্শ দেবেন এবং আপনারা জনগণের কাছে স্মার্ট ভূমিসেবার বিষয়টি ভালো করে বুঝিয়ে বলবেন। ফলে অদূর ভবিষ্যতে ভূমি সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা একেবারে কমে যাবে। জনগণকে খুব প্রয়োজন ছাড়া ভূমি অফিসে যেতে হবে না। তারা ঘরে বসেই সকল সেবা অনলাইনের মাধ্যমে পেতে পারে।”
বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনের যৌথ আয়োজনে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) এমদাদুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আ স ম মাহতাব উদ্দিন, অতিরিক্ত ডিআইজি প্রবীর কুমার রায় প্রমুখ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
আলোচনা সভার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।
এ সময় এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমাদের যে টোটাল ডিজিটাল সার্ভে, এই সার্ভেটা আমরা ৭ বছরের একটা পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি যে, এটা কমপ্লিট করতে পারব। আমরা আশা করি, দ্রুত গতিতে আমরা এগোনোর চেষ্টা করছি।
“আমরা এত ইমোশনাল হচ্ছি না যে, সেখানে ভুল ঢুকুক। কারণ ভুল ঢুকলে সাফার করবে পিপল। সেজন্য আমরা নির্ভুলভাবে যাওয়ার জন্য, আমাদের সকল সিকিউরিটিকে ঠিকঠাক রেখে কাজ করতে হচ্ছে।”