Published : 04 Mar 2025, 09:24 PM
ভাস্কর নভেরা আহমেদ এবং প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলামকে নিয়ে দুটি ভিন্ন ডকুফিল্ম নির্মাণ করেছেন পরিচালক অনন্যা রুমা।
সিনেমা দুটি হল ‘নভেরা: এক্সপিডিশন টু নস্টালজিয়া' ও ‘মনির: টেল অব টু কান্ট্রিস’।
‘নভেরা: এক্সপিডিশন টু নস্টালজিয়া' তথচিত্রে ফুটে উঠেছে ভাস্কর নভেরার শিল্পকর্ম ও ব্যক্তিজীবনের কথা।
নভেরা আহমেদ, যার নাম জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নকশাপ্রণেতা হিসেবে। সেই নভেরার শিল্পকর্মের কথা ২২ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই সিনেমায় তুলে ধরেছেন রুমা।
রুমা বলেছেন, তিনি গত ডিসেম্বরে ইউরোপ ভ্রমণে যান স্পেনে থাকা চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলামের উপর নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য ডকুফিল্মের শুটিং করতে। সেখানে গিয়ে সেটা সম্পূর্ণ করে তিনি গিয়েছিলেন ফ্রান্সে।
জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে প্যারিসে তিনি গিয়েছিলেন নভেরার মিউজিয়াম দেখতে। সেখানেই তাৎক্ষণিকভাবে স্বল্পদৈর্ঘ্য ডকুফিল্ম তৈরি করার পরিকল্পনা করেন রুমা।
তিনি নভেরার সমাধি থেকে মিউজিয়াম ঘুরে দেখেছেন। যে কাজে তাকে সহায়তা করেছেন নভেরার স্বামী গ্রেগরি দ্য বুনস।
“তিনি এখনো আগলে রেখেছেন নভেরার স্মৃতিবিজড়িত মিউজিয়ামটি।”
এই ডকুফিল্মটি তৈরি করতে ‘নভেরা বিভুঁইয়ে স্বভূমে’ বইয়ের লেখক আনা ইসলাম সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছেন বলে জানিয়েছেন রুমা।
তিনি জানিয়েছেন, চলতি বছর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নভেরা আহমেদকে নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্রটি প্রদর্শিত হবে। বাংলা, ইংরেজি ও ফ্রেঞ্চ ভাষায় দর্শকেরা এটি উপভোগ করতে পারবেন।
২০১৫ সালের ৬ মে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত টানা ৪৫ বছর প্যারিসে বসবাস করেন নভেরা আহমেদ। এর মধ্যে একবারও দেশে ফেরেননি এই ভাস্কর।
‘মনির: টেলস অব টু কান্ট্রিস’ নামের ডকুফিল্মটিতে উঠে এসেছে চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলামের জীবনের নানা ঘটনা, তার শিল্পকর্ম, ব্যক্তিগত জীবনের নানা দিক।
১৯৪৩ সালে চাঁদপুরে জন্ম নেওয়া মনিরুল পড়াশোনা করেছেন ঢাকার আর্ট কলেজে। ১৯৬৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু ।
তিন বছর বাদে বৃত্তি নিয়ে স্পেনে পাড়ি জমান, এরপর থেকে সেখানেই বসবাস। সময় করে বছরের কয়েকটি মাস থাকেন বাংলাদেশেও।
স্পেন, তুরস্ক, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মনিরুল ইসলামের একক ও যৌথ চিত্রপ্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্পেনের সম্মানসূচক ‘রয়েল স্প্যানিশ অর্ডার অব মেরিট’ পুরস্কার অর্জন করেছেন চিত্রশিল্পী মনিরুল। ১৯৯৭ সালে তিনি স্পেনের রাষ্ট্রীয় পদক, ২০১০ সালে স্পেনের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা দ্য ক্রস অব দ্য অফিসার অব দ্য অর্ডার অব কুইন ইসাবেলা পুরস্কার, ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশে একুশে পদক ছাড়াও শিল্পকলা একাডেমি পদকসহ বিভিন্ন পদক ও সম্মাননা পেয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে ডকুফিল্ম দুটির বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিসতিয়াগো, চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম, অভিনেতা-নির্মাতা গাজী রাকায়েত, সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী, সিঁথি সাহা, রেইনবো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের চেয়ারম্যান আহমেদ মুজতবা জামালসহ অনেকে।