Published : 17 Apr 2023, 09:17 AM
স্মিতা পাতিল আর শাবানা আজমী ভারতের সবচেয়ে মেধাবী অভিনেত্রী হিসেবে স্বীকৃত; দুজনই মঞ্চে সাফল্যের পর ‘প্যারালাল’ সিনেমায় ‘আনপ্যারালাল’ হয়ে উঠেছিলেন; সাফল্য কুড়িয়েছেন বলিউডের বাণিজ্যিক সিনেমায়ও।
ক্যারিয়ারে মধ্যগগনে থাকা অবস্থায় ১৯৮৬ সালে মাত্র ৩১ বছর বয়সে অকালে মারা যান স্মিতা পাতিল। শাবানা আজমী এখনও অভিনয়ে সক্রিয়। দুজন একই সময়ে কাজ করেছিলেনই, তাদের রেষারেষিও ছিল আলোচনায়।
সেই রেষারেষির কথা আগে এড়িয়ে গেলেও স্মিতার মৃত্যুর প্রায় চার দশক পর সেই ‘শত্রুতা’ নিয়ে খোলামেলা কথা বললেন শাবানা। জানালেন, একসময় স্মিতার সম্পর্কে কিছু অপ্রীতিকর কথা বলেছিলেন তিনি, যা নিয়ে এখন তিনি অনুতপ্ত।
সম্প্রতি শাবানা এক সাক্ষাৎকারে স্মিতাকে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাববার বিষয়টি স্বীকার করে এমন অনুশোচনা প্রকাশ করেন বলে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে।
শাবানা বলেন, তাদের মতবিরোধ নিয়ে লেখা সংবাদ প্রতিবেদনগুলো সম্পূর্ণ কাল্পনিক নয়।
“স্বীকার করছি, আমি নির্দয় হয়েছিলাম স্মিতার প্রতি। আর সেটা নিয়ে আমার অনুশোচনাও হয়। ওর সম্বন্ধে অনেক শক্ত কথা বলেছি, যেগুলো না বললেই ভালো হত। আসলে তখন ভেসে গিয়েছিলাম।”
অনেক আগে এক সাক্ষাৎকারে চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ ভাট দুই অভিনেত্রীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, স্মিতা কখনোই শাবানাকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কথা স্বীকার করেননি। তবে শাবানা কিছুটা বিরক্ত ছিলেন স্মিতার সাফল্যে।
শাবানা স্বীকার করেছেন, অনেক সময় তাদের মতবিরোধ হয়েছে। মিডিয়া তাদের মুখোমুখি বসিয়ে লড়িয়ে দিয়েছে।
“একবার তো জাভেদ (শাবানার স্বামী জাভেদ আখতার) বলেই বসল, “কী বোকার মতো তোমাদের দু’জনকে লড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে! তোমাদের দু’জনের এত মিল, তোমাদের ব্যাকগ্রাউন্ডও এক। তোমাদের তো একটা ফোর্স হিসেবে কাজ করা উচিৎ’।”
তিক্ত সম্পর্ক থাকলেও ক্যামেরার সামনে এলে তার ছাপ দেখা যেত না বলেই দাবি করেন শাবানা।
“প্রতিযোগিতা থাকলেও আমাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ছিল। আমরা একে অন্যের পরিবারের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল ছিলাম।”
তিনি বলেন, স্মিতা পাতিলের বাবার সঙ্গে তার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। স্মিতার ছেলে প্রতীক বাব্বরের সঙ্গেও তার সুসম্পর্ক রয়েছে।
“ওর আর আমার মধ্যে টেনশন থাকলেও আমাদের ফ্যামিলিতে তার প্রভাব পড়েনি।”
মারাঠার বাম রাজনীতিক শিবাজীরাও গিরিধর পাতিল এবং সমাজকর্মী বিদ্যাতাই পাতিলের মেয়ে স্মিতা পুনের ফিল্ম ইনস্টিটিউটে পড়াশোনা করেই চলচ্চিত্রে আসেন। শ্যাম বেনেগালের সিনেমা দিয়ে অভিনেত্রী হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, গোবিন্দ নিহালিনীর মতো সেরা সব চলচ্চিত্রকারের সিনেমায় তাকে দেখা গিয়েছিল।
শাবানা আজমীর বাবা কবি কাইফি আজমী আর মা অভিনেত্রী শওকত আজমীও ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। তিনিও পুনের ইনস্টিটিউট থেকে শিখে-পড়েই অভিনেত্রী হিসেবে যাত্রা শুরু করেন।
ক্যারিয়ারজুড়ে ‘নারীবাদী অভিনেত্রী’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া স্মিতা একমাত্র সন্তান প্রতীককে জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান। স্মিতা ও অভিনেতা রাজ বাব্বরের একমাত্র ছেলে প্রতীকও অভিনয় করে প্রশংসিত।