Published : 13 Sep 2022, 08:46 PM
প্রয়াত লোকসাধক শাহ আবদুল করিমের ৫০টি গান নতুন সংগীতায়োজনে প্রকাশ হতে যাচ্ছে।
স্বাধীন মিউজিকের অ্যাপ এবং ইউটিউব চ্যানেলে গানগুলো অক্টোবর থেকে প্রকাশ হওয়া শুরু হবে।
সঙ্গীত প্রযোজনা সংস্থাটি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনই বিস্তারিত কিছু জানাতে না চাইলেও বেশ কিছু গান ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে।
গানগুলোতে কণ্ঠ দিচ্ছেন আসিফ আকবর, মেহের আফরোজ শাওন, ইমরান মাহমুদুল, কনাসহ এই সময়ের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পীরা।
এছাড়া একটি ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কিছু শিল্পীকে চূড়ান্ত করা হয়েছে, যাদের দিয়ে অন্তত ১৫টার মতো গান রেকর্ড করানো হচ্ছে। বাকি ৩৫টির মতো গানে কণ্ঠ দেবেন খ্যাতিমান শিল্পীরা।
স্বাধীন মিউজিকের মহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শাহ আবদুল করিমের ৫০টি গান আমরা নতুন সংগীতায়োজনে করার কাজ করছি। আশা করছি, অক্টোবর থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতে পারব। গানগুলোতে কণ্ঠ দিচ্ছেন দেশের খ্যাতনামা সঙ্গীতশিল্পীরা।”
এ বিষয়ে আরও জানতে চাইলে তিনি বলেন, “শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত জানানো হবে।”
প্রায় দেড় হাজারের মতো গানের স্রষ্টা প্রয়াত লোকসাধক শাহ আবদুল করিম ২০০৯ সালে ১২ সেপ্টেম্বর মারা যান।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে তার ৪৭২টি গান সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয় কপিরাইট অফিস। প্রয়াত লোকসাধকের পরিবারের পক্ষ থেকে গানগুলোর কপিরাইট সুরক্ষা নিয়ে কাজ করছে জুয়েল মোর্শেদের প্রতিষ্ঠান জেডএম স্টুডিও।
জুয়েল মোর্শেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শাহ আবদুল করিমের ৪৭২টি গানের কপিরাইট সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই গানগুলো এখন কেউ বিনা অনুমতিতে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করতে পারবে না।”
স্বাধীন মিউজিক গানগুলোর প্রাপ্য রয়্যালিটি দেবে বলে জানান তিনি।
শাহ আবদুল করিমের গানের রয়্যালিটি কত জমা হল?
কপিরাইট সংরক্ষণের কারণে অনেকেই ধারণা করেছিল গানগুলো হারিয়ে যাবে উল্লেখ করে জুয়েল মোর্শেদ বলেন, “এতদিন শিল্পীর পরিবারকে বঞ্চিত করে তার গানগুলো বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্লাটফর্মে ব্যবহার হয়েছে। সেটি নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। কিন্তু শাহ আবদুল করিমের গানের কথা, সুর ঠিক রেখে যে কেউ গানগুলো অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন। ফলে গানগুলো করার ক্ষেত্রে কোনো নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়নি। কপিরাইট সংরক্ষণের ফলে গানগুলোর বাণিজ্যিক ব্যবহার থেকে শাহ আবদুল করিমের পরিবার লাভবান হবেন।”
শাহ আবদুল করিমের জন্ম ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলাধীন ধল-আশ্রম গ্রামে। তার বাবা ইব্রাহিম আলী ও মা নাইওরজান।
মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহচর্য পেয়েছিলেন শাহ আবদুল করিম, কাগমারী সম্মেলনে তিনি সঙ্গীত পরিবেশনও করেন।
২০০১ সালে একুশে পদক লাভ করেন শাহ আব্দুল করিম।
তার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে- বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে, আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম, গাড়ি চলে না, আমি কূলহারা কলঙ্কিনী, কেমনে ভুলিবো আমি বাঁচি না তারে ছাড়া, কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু, বসন্ত বাতাসে সইগো, আইলায় না আইলায় নারে বন্ধু, মহাজনে বানাইয়াছে ময়ুরপঙ্খী নাও, আমি তোমার কলের গাড়ি, সখী কুঞ্জ সাজাও গো, জিজ্ঞাস করি তোমার কাছে, মানুষ হয়ে তালাশ করলে, আমি বাংলা মায়ের ছেলে প্রভৃতি।
৬টি গানের বই প্রকাশিত হয়েছে শাহ আবদুল করিমের। যার মধ্যে রয়েছে- আফতাব সংগীত, গণ সংগীত, কালনীর ঢেউ, ভাটির চিঠি, কালনীর কূলে, দোলমেলা।