Published : 03 Jun 2025, 06:21 PM
হায়দ্রাবাদের তেলেঙ্গনায় ‘মিস ওয়ার্ল্ড’য়ের ৭২তম আসরের উদ্ভোধনী দিনে, মঞ্চে লাল গাউন পরে দশর্কদের মাঝে র্যাম্পে হেঁটে আসছেন এক বাংলাদেশি তরুণী। ক্যাটওয়াকের ছন্দে নাচছে গাউনের পেছনে রিকশার হুডের মতো আচ্ছাদন। আর পুরো পোশাকে রিকশা পেইন্টের আদলে নকশা করা।
আর এভাবেই ১০ মে এই বছরের বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতার প্রথম দিনে বাংলেদেশের প্রতিনিধিত্ব করা মডেল আকলিমা আতিকা কনিকা সবার দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছিলেন।
পোশাকটির নকশাকর শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির ফ্যাশন শিক্ষার্থী রাইসা আমিন শৈলী।
আর এই পুরো আয়োজনের পেছনের কারিগর হিসেবে কাজ করেছেন এদেশের ফ্যাশন উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত আজরা মাহমুদ।
চূড়ান্ত পর্বের কাছাকাছি থেকে ফিরে আসলেও, কনিকার নেই কোনো আক্ষেপ। বরং বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতার মতো জায়গায় নিজ দেশের নাম তুলে ধরতে পেরেছেন, তাতেই পূর্ণতা অনুভব করছেন তিনি।
‘আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্প (এএমটিসি)’ আয়োজিত সম্মেলনে বসে সাংবাদিকদের সামনে এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন।
‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতায় নানান রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি কখনও হচ্ছিলেন উচ্ছাসিত কখনও চোখ ভিজছিল জলে।
কনিকা বলেন, “আমি যখন ওই মঞ্চে পা রাখি, তখন আমি শুধু একজন প্রতিযোগী ছিলাম না- আমি ছিলাম বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের প্রতিনিধি। প্রতিটি পদক্ষেপ, হাসি, শব্দে আমি আমার জাতির গর্ব বহন করেছি।”
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সম্মাননা দেওয়া হয় কনিকার পোশাক পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত প্রধান ফ্যাশন ডিজাইনার মেহরুজ মুনিরকে। এছাড়াও সম্মাননা জানানো হয় অনান্য প্রতিভাবান ডিজাইনার রাইসা আমিন শৈলী, ফারদিন বায়েজিদ, বিশ্বজিৎ ও তৃষাকে; তারা কনিকার পোশাক পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
এই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ফটোগ্রাফার নাইমুল ইসলাম, সিনেমাটোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান শেখর, এডিটর পলাশ বিশ্বাস এবং কোরিওগ্রাফার আসাদ খান- এরা সবাই কনিকাকে পরিপাটি করে তোলা সৃজনশীল দলের সদস্য।
কনিকার স্টাইলিস্ট ও ইমেজ আর্কিটেক্ট হিসেবে পুরো সময় ছিলেন এফা তাবাসসুম। এই অনুষ্ঠানে তাঁকেও সম্মানিত করা হয়।
“এই যাত্রা কখনই আমার একার ছিল না” বলেন কনিকা, “এই প্রয়াস পূর্ণতা পেয়েছে আমার মেন্টর, সৃজনশীল দল, বন্ধু আর আমার ওপর যারা আস্থা রেখেছেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। আজ আমার এই উপস্থিতিতে বলতে গেলে আপনাদের সবারই প্রতিচ্ছবিই প্রতীয়মান হয়েছে।”
`মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’য়ের জাতীয় পরিচালক আজরা মাহমুদ এই সম্মেলনে বলেন, “আকলিমার জন্য আমি ভীষণ গর্বিত। তিনি বাংলাদেশের পরবর্তী প্রজন্মের নারীদের প্রতীক— সাহসী, সহানুভূতিশীল এবং আন্তর্জাতিক মনোভাব–সম্পন্ন।”
এদিন নিজের ভবিষ্যত ভাবনার কথাও জানিয়েছেন কনিকা।
তিনি বলেন, “আমি এখন আমার দুটি প্রকল্প ‘বিউটি উইথ এ পার্পাস’ এবং ‘ইয়ং মাইন্ড ম্যাটার্স’–এ মনোযোগ দেব। এই দুটি প্রকল্প, তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য ও উন্নয়নে কাজ করে থাকে। এই প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে আমি সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নানা প্রচারণা চালাব। পাশাপাশি নতুন উদ্যোগও নিব; যাতে করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চলার পথকে সুগম হতে পারে।”