Published : 06 Apr 2025, 06:52 PM
যুগ যুগ ধরেই বাংলাদেশে ধর্ষণ একটি জটিল সমস্যা যার সমাধানের জন্য বিভিন্ন আইন প্রয়োগ করা হলেও ধর্ষণের হার বেড়েই চলছে। আইন উপদেষ্টা ঘোষণা দিয়েছেন ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত এবং ৯০ দিনের মধ্যে ধর্ষকের বিচার করা হবে। সত্যি তা করা গেলে ভালো। কিন্তু ধর্ষণের মত অপরাধ যেন না ঘটে সেই চেষ্টাটা কি অধিকতর জরুরি নয়। এমন অপরাধকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলতে পারার প্রয়াস প্রয়োজন। বাংলাদেশে ধর্ষণের মতো ভয়াবহ সামাজিক অপরাধের অন্যতম কারণ হিসেবে অনেক বিশেষজ্ঞ যৌনশিক্ষার অভাবকে দায়ী করে থাকেন। সঠিক যৌনশিক্ষা থাকলে এই অপরাধ কমিয়ে আনা সম্ভব বলে গবেষণা ও পরিসংখ্যান ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু আমাদের সমাজে যৌনশিক্ষাকে এখনও ট্যাবু হিসেবে দেখা হয়, যা মূলত অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায়, পাঠ্যক্রমে যৌনশিক্ষা একটি উপেক্ষিত বিষয়। পাঠ্যক্রমে সরাসরি যৌনতা বা প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা খুবই সীমিত এছাড়া বাংলাদেশে যৌনশিক্ষা এখনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থার মূল ধারায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। জাতীয় শিক্ষাক্রমে ‘স্বাস্থ্য ও শারীরিক শিক্ষা’ নামে কিছু বিষয় থাকলেও সেখানে যৌনতা, সম্মতি, লিঙ্গ সমতা কিংবা যৌন সহিংসতা প্রতিরোধ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ সীমিত। ২০২৩ সালে ইউনিসেফ পরিচালিত একটি জরিপে দেখা গেছে, দেশের ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীর ৭০ শতাংশের মতো প্রজনন স্বাস্থ্য এবং যৌনতা সম্পর্কিত সঠিক তথ্য জানে না। এই জরিপে আরও উল্লেখ করা হয়, বেশিরভাগ শিক্ষার্থী মনে করে শিক্ষক বা অভিভাবকদের কাছ থেকে এসব বিষয়ে আলোচনা শোনা ‘লজ্জাজনক’, নিষিদ্ধ ও অননুমোদিত।
ব্র্যাকের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, স্কুলের শিক্ষকরা নিজেরাও যৌনতা, সম্মতি বা সম্পর্ক নিয়ে শিক্ষাদানের জন্য প্রস্তুত নন; বরং তারা এই বিষয় এড়িয়ে যান বা খুব সীমিত তথ্য দেন, যা শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে তোলে। ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের তথ্যমতে, যৌনতা ও সম্পর্ক বিষয়ক শিক্ষা না থাকায় দেশের অধিকাংশ তরুণ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়, যার ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ, যৌন সহিংসতা এবং ধর্ষণের মতো ঘটনা বাড়ছে।
এই তথ্যগুলো স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয়, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় যৌনশিক্ষার ঘাটতি রয়েছে এবং তা শুধুমাত্র পাঠ্যবই নয়, বরং সামাজিক মনোভাব এবং শিক্ষকের দক্ষতার মধ্যেও প্রতিফলিত হচ্ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যৌনশিক্ষার প্রসার ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা কমানোর ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। যুক্তরাজ্যে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) পরিচালিত একটি প্রোগ্রাম হচ্ছে রেইপ প্রিভেনশন অ্যান্ড এডুকেশন, যার প্রথম পদক্ষেপ হলো প্রথমবার ঘটে যাওয়া যৌন হয়রানি নির্মূল করা, সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং এর মাধ্যমে ধর্ষণকেই নির্মূল করা। নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনের মতো দেশে যৌনশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ভারতের রাষ্ট্রীয় কিশোর স্বাস্থ্য কর্মসূচি শুরু হয় ২০১৪ সালে, এটি কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ওপর গুরুত্ব দেয়। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা কমানোর প্রচেষ্টা রয়েছে।
যৌনশিক্ষার বিভিন্ন বিষয় ধর্ষণের হার কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এটি শুধু শারীরবৃত্তীয় শিক্ষা নয়, বরং সম্মতি, সম্পর্ক, লিঙ্গ সমতা, এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে। অনেক ধর্ষক ও নির্যাতিত ব্যক্তি যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়ে অজ্ঞ থাকার কারণে ভুল ধারণা পোষণ করে। যৌনশিক্ষা ব্যক্তি বিশেষকে বোঝায় যে যৌন সম্পর্ক শুধুমাত্র শারীরিক নয়, বরং এটি সম্মতি ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার বিষয়। এটি ধর্ষণকে স্বাভাবিক বা গ্রহণযোগ্য হিসেবে দেখার প্রবণতা কমায়।
বাংলাদেশের সমাজে অনেক সময় সম্মতি (consent) নিয়ে পরিষ্কার ধারণা দেওয়া হয় না। অনেক পুরুষ মনে করেন, বিয়ের পর যৌন সম্পর্ক বাধ্যতামূলক, যা বিবাহিত ধর্ষণের (Marital Rape) একটি বড় কারণ।যৌনশিক্ষা শেখায় যে সম্মতি না থাকলে কোনো যৌন সম্পর্ক জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়া অপরাধ। তরুণদের বোঝানো হয় যে ‘না’ মানে ‘না’, এবং শরীরের ওপর ব্যক্তির নিজস্ব অধিকার রয়েছে। শিশুদের শেখানো হয় কীভাবে অবাঞ্ছিত শারীরিক স্পর্শকে চিহ্নিত করতে হবে এবং কার কাছে অভিযোগ জানাতে হবে। অনেক ধর্ষণমূলক ঘটনা ঘটে যৌনতা সম্পর্কে অজ্ঞতা ও বিকৃত কল্পনার কারণে।
অনেক তরুণ ইন্টারনেটের পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে যৌনতা শিখতে গিয়ে নারীকে অবমাননাকর দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করে, যা ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির প্রবণতা বাড়ায়। যৌনশিক্ষা সঠিক যৌন আচরণ শেখায়, যা একজনকে দায়িত্বশীল ও নৈতিকভাবে সচেতন করে তোলে। এটি পর্নোগ্রাফির বিকৃত ধারণাগুলোর বিপরীতে বাস্তবসম্মত যৌন শিক্ষার তথ্য দেয়, যা নারীদের প্রতি সহিংসতা কমাতে সাহায্য করে।
সমাজে প্রচলিত পুরুষতান্ত্রিকতা ধর্ষণের অন্যতম কারণ। অনেক পুরুষ মনে করেন, নারীর শরীর তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য। লিঙ্গ পরিচয় ও সমতা সম্পর্কে শিক্ষা না থাকলে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা পরিবর্তন করা কঠিন। যৌনশিক্ষা শেখায় যে নারীর শরীর তার নিজের এবং এটি কারও অধীন নয়। এটি লিঙ্গ সমতার গুরুত্ব বোঝায়, যা ধর্ষণের সংস্কৃতি (Rape Culture) প্রতিরোধে সহায়ক। বাংলাদেশে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নারীদের প্রতি যৌন হয়রানি, প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল এবং পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে ধর্ষণ সহিংসতা বেড়েছে।
যৌনশিক্ষা ডিজিটাল নিরাপত্তার গুরুত্ব শেখায়, যা নারীদের সাইবার অপরাধ থেকে রক্ষা করতে পারে। শিশুদের শেখানো হয় কীভাবে অপরিচিতদের থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে হবে। ধর্ষণের পর ধারণ করা ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইলের প্রবণতা কমাতে সহায়তা করে। অনেক অপরাধী আইনি দুর্বলতা বা সামাজিক অজ্ঞতার কারণে মনে করে, ধর্ষণের শাস্তি গুরুতর কিছু নয়। আবার অনেক ভুক্তভোগীও জানেন না কীভাবে ন্যায়বিচার চাইতে হয়।যৌনশিক্ষা ধর্ষণের শাস্তি সম্পর্কে জানায়, যাতে সম্ভাব্য অপরাধীরা ভয় পায়। ভুক্তভোগীদের জানানো হয় কীভাবে তারা অভিযোগ করতে পারে, ফলে ন্যায়বিচারের সম্ভাবনা বাড়ে। সামাজিক ও আইনি সচেতনতা তৈরি করে, যাতে ধর্ষণের ঘটনায় দোষীকে শাস্তি দেওয়া হয় এবং ভুক্তভোগী দোষারোপের শিকার না হন।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের একটি প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যৌনশিক্ষা প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতিবাচক আত্মসম্মানবোধ এবং সুস্থ সম্পর্ক গঠনের দক্ষতা বৃদ্ধি করে, যা ডেটিং সহিংসতা এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে সহায়তা করে।‘‘জার্নাল অফ অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ’ প্রকাশিত একটি নিবন্ধে তিন দশকের গবেষণার পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে, সমগ্রব্যাপী যৌনশিক্ষা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সূচকে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং এটি স্কুল-ভিত্তিক প্রোগ্রাম হিসেবে তরুণদের যৌন স্বাস্থ্য ও সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বিভিন্ন উপায়ে যৌন শিক্ষাকে বাংলাদেশের একটি সংস্কৃতির একটি অংশ করা যেতে পারে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য উপায়গুলো হলো:
বাংলাদেশে যৌনশিক্ষাকে পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে বাধ্যতামূলক করা হলে এবং এটি উপযুক্তভাবে কার্যকর করা হলে ধর্ষণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেতে পারে। যৌনশিক্ষাকে বিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান বা নৈতিক শিক্ষা বইয়ের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
বিষয়টি শুধুমাত্র জীববিজ্ঞান বা স্বাস্থ্যশিক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সম্মতি, লিঙ্গ সমতা, সম্পর্কের নৈতিকতা এবং যৌন সহিংসতা প্রতিরোধের মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিভিন্ন শিক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে যৌনশিক্ষার কনটেন্ট নির্ধারণ করা প্রাথমিক পর্যায়ে ভালো স্পর্শ-খারাপ স্পর্শ, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা। মাধ্যমিক পর্যায়ে বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তন, সম্মতি ও লিঙ্গ সমতা এবং উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সম্পর্ক, যৌনতার দায়িত্বশীলতা, যৌন সহিংসতা প্রতিরোধ, ডিজিটাল নিরাপত্তা।
শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। যৌনশিক্ষা বিষয়ে প্রশিক্ষিত শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। বিদ্যমান শিক্ষকদের এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে সচেতন করা প্রয়োজন, যাতে তারা লজ্জা বা সংকোচ ছাড়াই বিষয়টি আলোচনা করতে পারেন।
ধর্মীয় ও সামাজিক সংবেদনশীলতা বিবেচনায় রাখতে হবে। যৌনশিক্ষা প্রদান করতে গিয়ে যেন সমাজের রক্ষণশীল অংশের প্রতিরোধের শিকার না হয়, সেজন্য উপস্থাপনার ভাষা ও কনটেন্ট সাংস্কৃতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। যৌনশিক্ষাকে ‘নৈতিক ও স্বাস্থ্য সচেতনতা’ হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে, যাতে এটি নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া কমে। কিশোর-কিশোরীদের জন্য সেক্স এডুকেশন অ্যাপ এবং অনলাইন কোর্সের ব্যাবস্থা করা। শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করা যেতে পারে, যেখানে তারা যৌন স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাবে।
আইন প্রয়োগ ছাড়াও সরকার আরো কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচারণা চালানো একটি অন্যতম উপায়। টিভি, রেডিও, সোশ্যাল মিডিয়া ও সিনেমার মাধ্যমে যৌনশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা।
পরিবারভিত্তিক যৌনশিক্ষা কর্মসূচি চালু করা যেতে পারে। অভিভাবকদের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া যাতে তারা নিজেদের সন্তানদের নিরাপদ যৌন আচরণ ও সম্মতির ব্যাপারে শেখাতে পারেন।
মোবাইল হেল্পলাইন ও পরামর্শকেন্দ্র চালু করা যেতে পারে। ধর্ষণ বা যৌন হয়রানির শিকার শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারিভাবে মানসিক ও আইনি সহায়তার জন্য একটি হেল্পলাইন থাকা উচিত।
ধর্ষণের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করতে হবে। ধর্ষণের অভিযোগ তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে হবে। ধর্ষকদের সামাজিকভাবে কলঙ্কিত করার জন্য প্রচারণা চালাতে হবে, যেন এ ধরনের অপরাধ করার আগে অপরাধীরা ভয় পায়।
ধর্ষণের কারণ নিয়ে গবেষণা ও তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। সরকার ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান যৌন সহিংসতা এবং ধর্ষণের কারণ নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করতে পারে, যা ভবিষ্যতে নীতিনির্ধারণে সহায়ক হবে।
ধর্মীয় নেতা ও কমিউনিটির সঙ্গে সমন্বয় সংগঠিত করা। মসজিদ, মন্দির ও গির্জায় লিঙ্গ সমতা, সম্মতি ও নারীর অধিকার নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে, যাতে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো যৌনশিক্ষার বিরুদ্ধে প্রচারণা না চালায়। পুলিশ ও বিচারব্যবস্থায় যৌন সহিংসতা প্রতিরোধমূলক প্রশিক্ষণ দেয়া।পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির ঘটনায় সংবেদনশীলতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার, যাতে তারা ভুক্তভোগীদের দোষারোপ না করে।
বাংলাদেশে ধর্ষণ প্রতিরোধে কঠোর শাস্তির পাশাপাশি সচেতনতামূলক শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যৌনশিক্ষাকে যদি পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে বাধ্যতামূলক করা হয় এবং এটি শুধুমাত্র শারীরবৃত্তীয় জ্ঞানে সীমাবদ্ধ না রেখে সম্মতি, লিঙ্গ সমতা, এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে ধর্ষণের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা সম্ভব।
সমাজে যৌনশিক্ষা নিয়ে লজ্জা ও ট্যাবু ভেঙে এটিকে অপরিহার্য শিক্ষার অংশ হিসেবে গ্রহণ করা জরুরি। গবেষণা ও পরিসংখ্যান বলছে, সঠিক যৌনশিক্ষা না থাকলে ধর্ষণের হার কমানো কঠিন। তাই এখনই সময় বাংলাদেশে একটি সুসংগঠিত ও বৈজ্ঞানিক যৌনশিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার, যাতে সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা কমিয়ে একটি সুরক্ষিত পরিবেশ তৈরি করা যায়।