Published : 19 May 2024, 08:55 PM
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন কবে- এই প্রশ্নে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের কাছ থেকে পাওয়া গেল নতুন একটি তারিখ।
আগামী অক্টোবরে এই সম্মেলন হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হয় চার দফা। কিন্তু নানা কারণে তা স্থগিত হয়।
রোববার চট্টগ্রামের একটি কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় নতুন এই সময় জানান হানিফ।
তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম মহানগরের আওতাধীন যেসব ইউনিট, ওয়ার্ড, থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কমিটি এখনও পর্যন্ত গঠন হয়নি, জুলাই মাসের মধ্যেই এগুলোর সম্মেলন ও কমিটি গঠন অবশ্যই করে ফেলতে হবে।
“অগাস্ট যেহেতু শোকের মাস, এ সময় আওয়ামী লীগের কোনো স্তরের সম্মেলন ও কমিটি গঠনের অবকাশ নেই। সেপ্টেম্বর মাসকে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি পর্ব হিসেবে ধরে নিয়ে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী অক্টোবর মাসে নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে আড়ম্বরপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে।”
সাবেক সিটি মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে সভাপতি ও আ জ ম নাছির উদ্দীনকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সবশেষ কমিটি গঠন হয় ২০১৩ সালের ১৪ নভেম্বর। সেবার সম্মেলন হয়নি, কমিটির ঘোষণা এসেছিল ঢাকা থেকে। তার আগে সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০০৯ সালে।
২০১৭ সালে মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর কমিটির সহসভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী পান ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব, কিন্তু সম্মেলন আর হয়নি।
২০২২ সালের ১ অক্টোবর, ৪ ডিসেম্বর ও ১৮ ডিসেম্বর তিন দফায় নগর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করলেও তা হয়নি। সবশেষ গত বছরের ৩১ জুলাই সম্মেলনের তারিখ ঠিক হয়। পরে তাও স্থগিত করা হয়।
নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা ও দক্ষতাকে প্রাধান্য দেওয়ার কথাও বলেন হানিফ। তিনি বলেন, “ব্যক্তির পছন্দ ও অপছন্দের বিষয়টি কখনও মুখ্য হতে পারে না। নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকতেই পারে। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা সাংগঠনিক শৃঙ্খলার মধ্যেই হওয়া উচিত।”
সংগঠনের বিভিন্ন ধাপ ও স্তরগুলোতে সমঝোতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে নেতৃত্ব বাছাই করলে দলীয় ঐক্য ও শৃঙ্খলা থাকে মত দিয়ে তিনি বলেন, “ভোটাভুটির বিষয়টি থাকলে কেনা-বেচা হওয়ার সুযোগ থাকে এবং পারস্পরিক বিভক্তি সৃষ্টিরও আশঙ্কা দেখা দেয়।”
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, “সাধারণ নির্বাচনগুলোতে আমাদের কোনো প্রবল প্রতিপক্ষ না থাকলেও দলীয় সাংগঠনিক ভিত্তি খুব একটা শক্তিশালী হয়নি। বরং নিজেদের মধ্যে কলহ, বিবাদ ও বিভক্তি বেড়েছে। আরও বেড়েছে দলের মধ্যে হাইব্রিডের প্রবল স্রোত।”
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন অক্টোবরে সম্মেলনের বিষয়ে বলেন, “মহানগর কমিটির আওতাধীন ২৭টি ইউনিট ও ২৯টি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন এখন পর্যন্ত হয়নি, ১৫টি থানার মধ্যে একটি থানায় সম্মেলন হয়েছে।
“এখন পর্যন্ত ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা আওয়ামী লীগের যে সসব কমিটির সম্মেলন হয়নি সেগুলো মূলত পরিস্থিতিগত কারণে নয়, স্থানীয় নেতৃত্বের অনীহা ও আন্তরিকতার অভাবের কারণে।”
স্থানীয় নেতৃত্ব ঐকমত্যে না পৌঁছলে জোর করে সম্মেলন চাপিয়ে দেওয়া যায় না দাবি করে তিনি বলেন, “স্থানীয় নেতৃত্ব যখন যেখানে সম্মেলন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আন্তরিক ছিলেন, মহানগর আওয়ামী লীগ সেক্ষেত্রে সর্বাধিক সহযোগিতা প্রদান করে গেছে।”
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, সুনীল কুমার সরকার, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, এম জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, উপদেষ্টা এ কে এম বেলায়েত হোসেন, শফর আলী, শেখ মাহমুদ ইছহাক, সংসদ সদস্য আবদুচ ছালাম ও মহিউদ্দিন বাচ্চু।