Published : 30 May 2024, 10:12 PM
কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে করা মামলায় বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়নি।
বৃহস্পতিবার শুনানি পিছিয়ে যাওয়ার পর আগামী ১৩ জুন নতুন তারিখ দিয়েছেন ঢাকার মহানগর হাকিম সাদ্দাম হোসেন।
ইশরাকের আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জাহিদুল ইসলাম আরেফী ওরফে মিঞা আরেফী নামে একজনকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘উপদেষ্টা’ পরিচয় দিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করিয়ে ‘বাংলাদেশের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আসছে’ বলার ঘটনায় এই মামলা হয় ইশরাকের বিরুদ্ধে।
মিয়া আরেফীও এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশের দিন পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পর বিএনপি কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সংবাদ সম্মেলনের ভিডিওতে দেখা যায়, মিঞা আরেফী ইংরেজিতে বক্তব্য দিচ্ছেন, তার হাতের ডান দিকে বসে আছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন।
আরেফী দাবি করেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ‘হামলার’ কঠোর ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র, ৩ নভেম্বরের পর আওয়ামী লীগ আর ‘ক্ষমতায় থাকতে পারবে না’। যুক্তরাষ্ট্র এবার পুলিশ ও আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনীর ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় আলোচনা। যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের কোনো প্রতিনিধি নয়াপল্টনে গিয়েছিলেন কি না, এমন প্রশ্নে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফেন ইবেলি বলেন, ওই ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কেউ নন। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস থেকে কারও যাওয়ার তথ্য পুরোপুরি ‘মিথ্যা’।
পরের দিন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হন আরেফী।
৩০ অক্টোবর পল্টন থানায় এই ঘটনায় মামলা করেন মহিউদ্দিন শিকদার নামের এক ব্যক্তি। গোপালগঞ্জের ছেলে মহিউদ্দিন নিজেকে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
তিনি সে সময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে বন্ধুত্ব সম্পর্ক- তার অবনতি ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের নাম ব্যবহার করে সরকারবিরোধী শক্তিকে উসকে দিতে এবং সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করার অভিপ্রায়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।”
পল্টন থানার ওসি সালাহউদ্দীন মিয়া জানান, দণ্ডবিধির ৪১৯ ও ১০৯ ধারায় এই মামলা করা হয়। মামলায় অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকেও আসামি করা হয়েছে।
গত ১৯ মে ১২ মামলায় ইশরাকের জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন তার আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন।
১১টি মামলায় জামিন দিলেও পল্টন থানার রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠান।
গত ২৬ মে মামলার ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন এবং আরও কোনো ব্যক্তি এই ঘটনায় জড়িত আছে কি না, তা জানতে বিএনপি নেতাকে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করে পুলিশ।
ইশরাকের উপস্থিতিতে এই শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণে তাকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা যায়নি।