Published : 15 Jan 2025, 06:45 PM
ময়মনসিংহ নগরীতে ২০০ বছরের পুরনো হযরত শাহ সুফী সৈয়দ কালু শাহ (রহ) এর মাজার হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ‘লোক দেখানো মামলা’ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভক্তরা।
বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ সুফিবাদ ঐক্য পরিষদের নেতা এ অভিযোগ করেন। এ সময় তারা হামলা-ভাঙচুরের প্রতিবাদ করতে গিয়েও বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানান।
৮ জানুয়ারি রাত ১১টার দিকে একদল মাদ্রাসা ছাত্র থানার সামনের মাজারের বার্ষিক ওরশ শরিফ ও সামা কাওয়ালি অনুষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় নিরাপদে সরে গিয়ে শিল্পীরা রক্ষা পান।
এরপর রাত ৩টার দিকে আবার এসে তারা মাজারটিকে ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় মাজারের এক ভক্ত মামলা করেছেন। মঙ্গলবার এ ঘটনার প্রতিবাদে মাজারের সামনে সমাবেশ কর্মসূচি আহ্বান করলে জেলা প্রশাসন সেখানে ১৪৪ ধরা জারি করে।
যদিও প্রতিবাদকারীরা ১৪৪ ধারা জারি করার জায়গা থেকে কিছুটা দূরে পাটগুদাম র্যালির মোড়ে গিয়ে সমাবেশ করে। বিকালে শহরের ফিরোজ-জাহাঙ্গীর চত্বরেও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ সুফিবাদ ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজল দেওয়ান ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “দেশের কোথাও যেন এমন ঘটনা না ঘটে সেই লক্ষ্যে নজরদারি বাড়ানোসহ মাজার ভাঙচুরের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ১৭৯তম বার্ষিক ওরশ শরিফে যারা হামলা চালিয়ে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
তিনি বলেন, “এর প্রতিবাদ করতে গিয়েও আমরা পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছি। এতে উগ্রবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। শত শত বছর ধরে মাজার, মসজিদ, মন্দির পাশাপাশি থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করলেও এখন এ ধরনের হামলার ঘটনা পীড়াদায়ক।
“যারা সম্প্রীতি নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে, পুলিশ তাদের বাঁচানোর জন্য মাজার ভাঙচুরে ১৫০০ জনকে আসামি করিয়ে লোক দেখানো মামলা নিয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে একাত্মতা পোষণ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক গোকূল সূত্রধর মানিক বলেন, “জীবন ও রক্ত ঝরিয়ে আমরা নতুন দেশ পেয়েছি। সেই দেশে ভিন্ন মতাদর্শের মানুষ স্বাধীনভাবে চলাচল করবে সেটাই স্বাভাবিক। সেখানে কারো মতের বিরুদ্ধে গিয়ে হামলা-ভাঙচুর চালানো মোটেই কাম্য নয়। আমরা ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করছি।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ বাউল সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম আসলাম, মাজারে হামলা-ভাঙচুর তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম তরিকত, পীরবাবা খলিলুর রহমান চিশতী নিজামী, আকসান হাবীব সিদ্দিকী, মাসুদ ভূঞা চিশতী নিজামী।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ সদর মডেল থানার ওসি শরীফুল ইসলাম খান বলেন, “মাজারের লোকজন এসেই মামলা দিয়েছেন। আমরা মামলা তদন্ত করছি। তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলায় লোক দেখানো কোনো বিষয় নেই বলে মন্তব্য করেন ওসি।
ময়মনসিংহে মাজার ভাঙার প্রতিবাদে সমাবেশ ঘিরে ১৪৪ ধারা
ময়মনসিংহে কাওয়ালি বন্ধের পর ভাঙা হল ২০০ বছরের মাজারটিও, আতঙ্ক