Published : 27 Jan 2025, 11:00 PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ মহানগর ও জেলা কমিটি নিয়ে ‘অসন্তোষের’ মুখে আট নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন।
কমিটি ঘোষণার পরদিন সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা।
সেইসঙ্গে ঘোষিত ১৮৭ সদস্যের জেলা ও ১৩৮ সদস্যের মহানগর আহ্বায়ক কমিটি পূণর্বিবেচনার দাবি জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আগের কমিটির সমন্বয়ক জি কে ওমর।
পদত্যাগ করেছেন ময়মনসিংহ জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক তানজিয়া নাজনীন নীতু, সংগঠক আহসান উল্লাহ, কাওসার হাসান রিয়াদ, সদস্য আতিক হাসান, সৈয়দ সাইদুল, মহানগর কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব তানজিনা ইমি, সদস্য মির্জা সুলতানা আফরিন এবং উম্মে হাবিবা।
লিখিত বক্তব্যে জি কে ওমর বলেন, “অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে কারা কাজ করছে এবং কারা অভ্যুত্থানের চেতনাবিরোধী কাজ করেছে, তা বিবেচনায় না নিয়ে রোববার ঢাকা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা এবং মহানগরের কমিটি প্রকাশ করা হয়েছে।”
আন্দোলনের সময় শহরে যারা নেতৃত্বে দিয়েছে, তারা এই কমিটিতে সর্বোচ্চ উপেক্ষিত বলে দাবি করেন জি কে ওমর।
তিনি বলেন, “ময়মনসিংহে কমিটি দেওয়ার আগে একাধিকবার ফোনে এবং ১১ জানুয়ারি সশরীরে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধির টিমলিডার লুৎফর রহমানকে এ জেলার সার্বিক পরিস্থিতি এবং টিমের অন্য প্রতিনিধিদের বিষয়ে জানানো হয়েছিল।
“কিন্তু যারা ৫ অগাস্ট পরবর্তীতে জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ না করে, বিভিন্ন অপকর্ম যেমন- বিআরটিসি অফিসে হামলা, আওয়ামী দোসরদের থানা থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা, ইউএনও অফিসে চাঁদাবাজি, ডিআইজি অফিসে হামলা, খুনি আসামিকে ছাড়ানোর জন্য মধ্যরাতে বিভাগীয় কমিশনারকে ফোন দিয়ে সুপারিশ করার প্রস্তাব, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে শহরের দুটি মারামারির ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে দিয়ে কমিটি করা হয়েছে।”
জি কে ওমর বলেন, “আগে থেকে অভিযোগগুলো জানানোর পরও টিমলিডার তাদের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নিয়ে কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করেছেন। এ ছাড়া কমিটিতে বিভিন্ন সংগঠনের পদধারী ছাত্রনেতাদের বিনা অনুমতিতে পদায়ন করা হয়েছে।
“তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের প্রতি ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর কমিটি পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আশা করি, কেন্দ্র বিষয়টি পুনর্বিবেচনায় নেবেন। কারণ, এরকম বিতর্কিত লোকদের সঙ্গে আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।”
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহের আশিকুর রহমান এবং ফুয়াদ খান বক্তব্য দেন।
পদত্যাগ করা মির্জা সুলতানা আফরিন বলেন, “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অনেকেই নীতিবিরোধী অনেক কাজে জড়িয়ে পড়ছেন; যা আমাদের সঙ্গে যায় না। দুর্দিনে ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করলেও কমিটিসহ অন্যান্য জায়গায় সুবিধা নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি পক্ষ।
“যার কারণে পদত্যাগ করলাম। সংগঠনের প্রয়োজনে অগ্নিকন্যা হয়ে সমসময় ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করে যাব।”
সদ্য ঘোষিত ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সদস্যসচিব আলী হোসেন বলেন, “কমিটি ঘোষণার পর ময়মনসিংহের সর্বস্তরের মানুষ আমাদের স্বাগত জানাচ্ছেন। আমরাও শহীদ সাগরের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করেছি।
“তবে আমাদেরই একটি পক্ষের ১৫ থেকে ২০ জন কমিটির বিরুদ্ধে প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে; যা কোনভাবেই কাম্য নয়। তারা অপপ্রচার করছেন। আমরা চাই সকলে একসঙ্গে জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করে স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করতে।”