Published : 11 May 2025, 05:13 PM
নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াদুদ পিন্টুর বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
জেলা শহরের জয়কৃষ্ণপুর এলাকায় শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে সুধারাম মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম জানান।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে পিন্টু আত্মগোপনে রয়েছেন। তার চারতলা বাড়িতে স্ত্রী ও দুই মেয়ে থাকে। এছাড়া সাতটি পরিবার ভাড়া থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ৭০-৮০টি মোটরসাইকেলে করে একদল তরুণ আবদুল ওয়াদুদ পিন্টুর বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালায়।
রোববার সকালে পিন্টুর বাড়ির সামনে কাঁচ ভাঙা তিনটি গাড়ি পড়ে থাকতে দেখা গেছে। নিচতলার বসার ঘরের দেয়ালে পোড়া দাগ। দুটি ফ্রিজ ও টেলিভিশনসহ আসবাবপত্র ভাঙাচোরা অবস্থায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। দ্বিতীয় তলার একটি বসার ঘর ও দুটি শোবার ঘরেও ভাঙা আসবাব ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। নিচ তলায় ভাড়ায় থাকা একটি পরিবারের বিভিন্ন কক্ষেও ভাঙচুর করা হয়েছে।
পিন্টুর স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা সাবরিনা মাহজাবিন জয়ন্তি বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি দুই মেয়েকে নিয়ে রাতের খাবার খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় ৭০ থেকে ৮০টি মোটরসাইকেলে করে একদল লোক তার বাড়িতে ঢোকে। তারা আগে সিসি ক্যামেরাগুলো ভেঙে ফেলে। এরপর ভবনের সামনের সব জানালা ভাঙচুর করে। পরে অনবরত লাথি দিয়ে দরজা খুলে ফেলে বাসার ভেতর ঢুকে নিচতলা ও দ্বিতীয় তলায় নির্বিচারে ভাঙচুর চালায়।
তিনি বলেন, “হামলা-ভাঙচুরের সময় দুই মেয়েকে নিয়ে একটি কক্ষের ভেতর ঢুকে কোনোরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছি। হামলাকারীরা প্রায় আধাঘণ্টা তাণ্ডব চালায়। এরপর নিচতলায় থাকা সোফায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়। তারা যাওয়ার পর প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আগুন নিভিয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পৃথক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।”
ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, “রাতে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর ছাত্র-জনতা শহরে আনন্দমিছিল করে। একই সময় অন্য একটি অংশ আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল ওয়াদুদ পিন্টুর বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালায়।
“হামলাকারীরা বাড়ির নিচতলায় সোফায় আগুন দিয়েছিল। তবে সেটি বাড়ির লোকজন নিভিয়ে ফেলেন। এ ঘটনার লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পর তারা শহরে আনন্দমিছিল করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল ওয়াদুদ পিন্টুর বাড়িতে হামলার ঘটনার সঙ্গে তাদের কেউ জড়িত নয়।