Published : 06 Jun 2025, 03:31 PM
ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়েছে বাস পরিবহন কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম থেকে আসা জোনাকি, সোহাগ ও সানিয়া ক্লাসিকের যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর হাট বাস টার্মিনালে অভিযান চালিয়ে এর সত্যতা পায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পরে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জামশেদ আলম রানার নির্দেশে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে নেওয়া অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
সানিয়া ক্লাসিক ও সোহাগ পরিবহনের কয়েকজন যাত্রীকে অতিরিক্ত ভাড়ার টাকা ফেরত দেয় সংশ্লিষ্ট বাসের সুপারভাইজাররা। প্রশাসনের এ অভিযানের প্রশংসা করেছেন যাত্রীরা।
অভিযানে র্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) মিঠুন কুমার কুণ্ডু, বিআরটিএ লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের মোটরযান পরিদর্শক প্রণব চন্দ্র নাগ উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা প্রশাসন, র্যাব ও বিআরটিএ যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে।
চট্টগ্রাম থেকে আসা রাকিব, সোহেল, আয়েশা, আব্দুল কাদেরসহ কয়েকজন যাত্রী জানায়, ভোলা জেলায় তাদের বাড়ি। চট্টগ্রাম থেকে তারা বাড়ির উদ্দেশে মজু চৌধুরীর হাট এসেছেন। সানিয়া ক্লাসিক ও সোহাগ পরিবহনের যাত্রী তারা। সাড়ে ৩০০ টাকার ভাড়া তাদের কাছ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে।
এ ছাড়া সানিয়া ক্লাসিকের টিকিট দিয়ে সোহাগ পরিবহণে যাত্রী উঠিয়েছে। আবার সোহাগ পরিবহণের টিকেট দিয়ে সানিয়া ক্লাসিকে যাত্রী উঠিয়েছে। নির্ধারিত ভাড়ার দ্বিগুণ নিয়েছে বাস কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই তাদেরকে আসতে হয়। প্রশাসনের অভিযান দেখে তারা দাঁড়িয়ে থাকা অতিরিক্ত টাকাগুলো ফেরত পেয়েছে। কিন্তু যারা চলে গেছে, তারা পায়নি।
বি শ্যামলীর মজু চৌধুরীর হাট কাউন্টারের ব্যবস্থাপক বলেন, “আগে আওয়ামী লীগের লোকজন প্রতি বাস থেকে ২০০ টাকা করে চাঁদা নিত। এখন মালিক সমিতির নামে টাকাগুলো নেয়। ঘটনাটি আমরা উপজেলা প্রশাসন ও র্যাবকে জানিয়েছি। তারা বলেছে, আর চাঁদা না দিতে।”
র্যাব-১১ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) মিঠুন কুমার কুণ্ডু বলেন, “যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়সহ বিভিন্ন অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল। এর ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসনসহ আমরা অভিযান চালিয়েছি। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া কয়েকটি গাড়ি চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ভাড়া বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।”
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জামশেদ আলম রানা বলেন, “চট্টগ্রাম থেকে মজু চৌধুরীর হাটে আসা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়েছে। সানিয়া নামে একটি পরিবহনের চট্টগ্রামের কাউন্টার কর্তৃপক্ষ এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এখানকার কাউন্টার না হওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। তবে যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত টাকা ফেরত নিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষ নিরাপদে ও নির্ভাজালে বাড়ি পৌঁছতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনীসহ মজু চৌধুরীর হাট লঞ্চঘাট থেকে মেঘনা নদী হয়ে ভোলা-বরিশাল নৌ-পথে দেশের ২১টি জেলার সহজে যাতায়াত করা যায়। ঈদসহ সরকারি ছুটিতে এ পথে যাত্রীদের উপচেপড়া ভীড় থাকে।