Published : 20 Dec 2024, 09:22 PM
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের একটি কক্ষ থেকে ‘মাদক সেবনরত’ অবস্থায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এক বিদেশি শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩১৬/বি কক্ষ থেকে আশির্বাদ যাদব নামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুষ্টিয়া) ইলেক্ট্রনিক অ্যান্ড ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ওই শিক্ষার্থীকে মাদকসহ আটক করে হল প্রশাসন।
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান বলেন, “মাদকবিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ইনফরমারদের তথ্যমতে ৩১৬/বি তে অভিযান চালিয়ে তাকে হাতেনাতে ধরি।"
আশির্বাদ যাদব ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুষ্টিয়া) শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র। তার বাড়ি নেপালের কাঠমান্ডুতে।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, হলের ওই কক্ষ থেকে গাঁজার গন্ধ পেয়ে কয়েকজন হল প্রাধ্যক্ষকে জানায়। পরে প্রাধ্যক্ষ স্যার হলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ওই কক্ষে অভিযান চালায় এবং তাকে গাঁজাসহ হাতেনাতে আটক করে। এ সময় তার কাছে চার প্যাকেট গাঁজা ও গাঁজা খাওয়ার সরঞ্জাম পাওয়া গেছে।
মীর মশাররফ হোসেন হলের ৩১৬/বি কক্ষটিতে থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বাস্কেটবল খেলোয়াড় মুহাম্মদ কামরুল।
কামরুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেপ্টেম্বর মাসেই আমি হল ছেড়ে দিয়েছি। আমার রুমে কিছু জিনিসপত্র থাকায় আমার এক বন্ধুকে চাবি দিয়ে আসি। এ ঘটনার ব্যাপারে আমি কিছুই জানতাম না।
“আমি একজন বাস্কেটবল খেলোয়াড়। বিজয় দিবস উপলক্ষে একটা টুর্নামেন্টে আমি এখন পুরান ঢাকা অবস্থান করছি।”
আটকের পর আশির্বাদ যাদব সাংবাদিকদের বলেন, “গতকাল রাতে কুষ্টিয়া থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে জাবির মার্কেটিং বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী খালেদ সিয়ামের সঙ্গে যোগাযোগ করে মীর মশাররফ হোসেন হলে রাত্রি যাপনের জন্য আসি।
“পরে খালেদ সিয়াম আমাকে হলের ৩১৬/বি কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করে। ওই কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী কামরুল থাকে। বাস্কেটবল খেলতে গিয়ে আমরা তিনজন পূর্বপরিচিত।"
এ বিষয়ে জানতে খালিদ সিয়ামের মোবাইল ফোনে একধিকবার যোযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
তবে প্রাধ্যক্ষ মাহমুদুর রহমান বলছেন, “খালেদ সিয়ামকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছে। তিনি এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত নন বলে জানিয়েছেন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, আশির্বাদ যাদবকে মাদকসহ পাওয়া গেছে। আমরা তাকে এইভাবে ছেড়ে দিতে পারি না। তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তির করেছি।
“এছাড়া যে কক্ষে মাদক পাওয়া গেছে সে কক্ষে যে থাকেন এবং এ ঘটনায় যাদের নাম এসেছে তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য হল প্রশাসনকে বলেছি।"
আশুলিয়া থানার এসআই মাহমুদুল হাসান বলেন, “জব্দ করা মাদকের পরিমাণ প্রায় ১০ গ্রাম হবে। আপাতত আমরা তাকে থানায় নিয়ে যাচ্ছি। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”