Published : 27 Sep 2024, 12:10 PM
প্রায় ৪০ দিন ধরে বন্যার পানিতে ডুবে রয়েছে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার অর্ধেকের বেশি এলাকা ৷ ১১টি ইউনিয়নে এখনো পানিবন্দি অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। তারা শঙ্কায় আছেন দীর্ঘমেয়াদি জলাবদ্ধতার।
সাম্প্রতিক বন্যায় জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টিই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরই মধ্যে ১১ উপজেলা থেকে বানের পানি নেমে গেলেও জেলার দক্ষিণাঞ্চলের তিন উপজেলা মনোহরগঞ্জ, লাকসাম ও নাঙ্গলকোটে এখনো বন্যার পানি রয়েছে।
এর মধ্যে বর্তমানে পানির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি মনোহরগঞ্জে। এ উপজেলার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক এখনো পানিতে তলিয়ে রয়েছে। গ্রামীণ সড়কগুলোর কোথাও কোথাও হাটুসমান পানি রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন বানভাসি মানুষ।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজালা রানী চাকমা বলেন, বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে। তবে এখনো অনেক এলাকায় পানি আছে। কারণ এই উপজেলা জেলার অন্যান্য উপজেলা থেকে কিছুটা নিচু।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বানভাসিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৭ অগাস্ট এ উপজেলা বন্যার পানিতে প্লাবিত হতে শুরু করে। ৪০ দিন পরও সেভাবে পানি নামেনি। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের দুর্ভোগও বেড়ে চলেছে।
মনোহরগঞ্জ উপজেলার উত্তর হাওলা এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় আমাদের এলাকার অধিকাংশ বাড়িতে এখনো পানি আছে। এলাকার সব রাস্তাই পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এতে ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, “গত প্রায় ২০-২২ দিন ধরে থেমে থেমে হওয়া বৃষ্টিতে পানির পরিমাণ কিছুটা বাড়ে এবং বৃষ্টি না থাকলে পানি কমে- এভাবেই চলছে। বর্তমানে পানি নামছে, তবে সেটা অনেক ধীরগতিতে। ”
উপজেলার ডাবুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা শাহাদাত হোসেন বলেন, “প্রায় দেড় মাস ধরে আমরা পানিবন্দি। এই দুর্ভোগের কথা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। আমাদের আশপাশের সব গ্রামের মানুষও এখনো পানিবন্দি অবস্থায় আছে। ”
বিগত সময়ে অবাধে খাল-বিল ভরাট ও দখলের কারণেই তাদের এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
উপজেলার বাইশগাঁও এলাকার বাসিন্দা মো. সাইফুল আলম বলেন, অন্যান্য উপজেলাগুলোর তুলনায় এ উপজেলা বন্যা পরিস্থিতি খুবই খারাপ। দীর্ঘমেয়াদি জলাবদ্ধতার দিকে যাচ্ছে সার্বিক পরিস্থিতি। এর নেপথ্যে রয়েছে নদী-খাল দখল ও ভরাট।
মনোহরগঞ্জের ইউএনও উজালা রানী চাকমা বলেন, “সার্বিকভাবে পানি নামতে ধীরগতি থাকলেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আমরা বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে আছি। ”
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, “কুমিল্লার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। তবে মনোহরগঞ্জ, লাকসাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলার কয়েকটি এলাকায় এখনো পানি রয়েছে। দ্রুতই পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করছি।
“আমরা আগের মতোই বন্যাদুর্গতদের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন সবার সঙ্গে সমন্বয় করে এ নিয়ে কাজ করছে।”