Published : 30 Dec 2024, 09:40 PM
রাজশাহী নগরীতে এক নারী চিকিৎসক ও তার বাবাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় চিকিৎসকের মাকে আহত করা হয়।
সোমবার ভোরে নগরীর চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে এই অপহরণের ঘটনা ঘটে বলে পরিবার জানিয়েছে। এরপর সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় বাবাকে ফেলে গেছে অপহরণকারীরা। তবে নারী চিকিৎসককে তারা নিয়ে গেছে।
রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা থানার ওসি মতিয়ার রহমান বলেন, “এখন পর্যন্ত ওই চিকিৎসকের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।”
২৬ বছর বয়সী ওই চিকিৎসক রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ থেকে সবেমাত্র ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি-বিডিএস শেষ করেছেন। তার ষাটোর্ধ্ব বাবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
তাদের পরিবার নগরের চন্দ্রিমা আবাসিক এলাকায় নিজের বাসায় থাকত। পাঁচতলা বাসার দ্বিতীয় তলায় তারা থাকেন। সোমবার ভোরে এই বাসা থেকেই বাবা-মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
অপহরণের সময় নারী চিকিৎসকের মাকে (৫১) দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকিয়ে ও তালা দিয়ে আঘাত করা হয়। পরে আত্মীয়-স্বজনরা এসে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য তার স্বামী মসজিদে যান। এ সময় তিনি বাইরের ফটকে তালা লাগিয়ে চাবি সঙ্গে নিয়ে যান। তিনি বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর অপহরণকারীরা তার স্বামীকে জিম্মি করে। তারা চাবি নিয়ে এসে বাইরের ফটক খুলে ভেতরে প্রবেশ করে।
এ সময় অপহরণকারীরা তাকে ধরে দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে দেয়। মাথায় তালা দিয়ে আঘাত করে। এরপর তারা তাকে বিছানায় ফেলে গলা চেপে ধরেন। তিনি পড়ে গেলে বাবা ও মেয়েকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। তারা চলে যাওয়ার পর খবর পেয়ে আত্মীয়-স্বজন এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ওই নারী জানান, তার স্বামীর সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, মাইক্রোবাসে চালকসহ অপহরণকারীরা ছয়জন ছিলেন। তাকে তোলার পরেই মুখ বেঁধে ইনজেকশন দেওয়া হয়। তার চেতনা ফিরে এলে তাকে মহাসড়কের পাশে ফেলে দেওয়া হয়। পরে তিনি সলঙ্গা থানায় গিয়ে আশ্রয় নেন।
সলঙ্গা থানার এএসআই শফিউল ইসলাম বলেন, বেলা ১২টার দিকে ভেংড়ি এলাকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। একই মাইক্রোবাসে বাবা ও মেয়েকে অপহরণকারীরা তুলে নিয়ে এসেছিল। তারা মেয়েকে নিয়ে গেছে।
রাজশাহীর চন্দ্রিমা থানার ওসি মতিয়ার রহমান পরিবারের বরাতে বলেন, অপহরণের মূলহোতা হিসেবে তারা তানভীর খান তাজ রওশন আলম নামের একজনের নাম পেয়েছেন।
“কেউ বলছেন, এই ছেলের সঙ্গে নারী চিকিৎসকের বিয়ে হয়েছিল। কেউ বলছেন, বিয়ে হয়নি। তার নেতৃত্বেই ওই চিকিৎসককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে পরিবার বলছে।”
ওসি বলেন, “এই ঘটনায় পরিবার মামলা করতে চায়। এজাহার দিলে মামলা রেকর্ড করা হবে।”