Published : 05 Feb 2025, 07:43 PM
অতিরিক্ত শুল্কারোপ করায় যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে দ্বিতীয় দিনের মত ফল আমদানি বন্ধ রয়েছে।
বুধবার বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ফল আমদানিতে অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি পূরণ না হওয়ায় দ্বিতীয় দিনের মত বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের ডাকা ধর্মঘটে কোনো ফল বেনাপোলে বন্দরে ঢোকেনি।
বেনাপোল বন্দর আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, “বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন ২৯ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে আল্টিমেটাম দেয়, ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাড়তি শুল্ককর তুলে না নেওয়া হলে ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারি দেশের সব স্থলবন্দর ও নৌবন্দর দিয়ে ফল আমদানি বন্ধ থাকবে।”
তিনি বলেন, “এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের ফল আমদানি হত। অতিরিক্ত শুল্কারোপ করার পর সেটি ২০ থেকে ২২ ট্রাকে এসে দাঁড়িয়েছে।”
“রাজস্ব খাতেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে শুধুমাত্র ফল আমদানি থেকে ২৫ কোটি টাকার রাজস্ব আয় হত। বর্তমানে সেটা এসে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটিতে।”
বেনাপোল বন্দরের আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন বলেন, “চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি আমদানি করা তাজা ফলের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করেছে সরকার।
“যার প্রভাব পড়েছে বেনাপোলসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দরের উপরে। শুল্ককর বৃদ্ধির কারণে আমদানিকারকরা ফল আমদানিতে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছেন।”
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নূরউদ্দীন আহম্মেদ জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চাপিয়ে দেওয়া ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক তুলে না নেওয়ায় তারা ফল আমদানি বন্ধ রেখেছে। যদি আজকের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হয় পরবর্তীতে তারা বড় কর্মসূচিতে যাবেন।
ফল আমদানিকারক আব্দুল মান্নান বলেন, “সরকার হঠাৎ করে ফল আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্কারোপ করায় তার প্রভাব বাজারে পড়েছে। বাজারে ফলের দাম বেড়ে গেছে। রমজান মাসে ফলের দাম আরও বেড়ে যাবে।”
ফল ব্যবসায়ী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, “অতিরিক্ত সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণ করার পর ফল আমদানি কমে গেছে। বাজারে আমদানিকৃত ফলের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ফলের দামও বেড়েছে। যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।”
আমদানি কমলে ফলের বাজারে বড় ধরনের সংকটও তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার সুশান্ত পাল বলেন, “গত কয়েক মাস ধরে ফলের আমদানি কমে গেছে। এরপর সরকার আবার অতিরিক্ত শুল্কারোপ করেছে। এতে ব্যবসায়ীরা ফল আমদানি কমিয়ে দিয়েছে।
“আগে প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক ফল আমদানি হত। শুল্কারোপের পর মাত্র কয়েকদিনে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। এভাবে চললে রাজস্বের উপরে এর প্রভাব পড়বে।“