Published : 07 Jun 2025, 11:53 AM
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল আজহার ১৯৮তম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কিশোরগঞ্জসহ দেশের দূর-দূরান্তের হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন।
শনিবার সকাল ৯টায় শুরু হওয়া ঈদ জামাত পরিচালনা করেন জেলা শহরের বড় বাজার মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
রেওয়াজ অনুযায়ী নামাজ শুরুর আগে বন্দুকের ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। এর মাধ্যমে ঈদগাহের সবাইকে নামাজের প্রস্তুতি নেওয়ার সংকেত দেওয়া হয়।
নামাজ শেষে দেশের সমৃদ্ধি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
জামাতে অংশগ্রহণ করতে সকাল থেকেই মানুষের আগমন শুরু হয় জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত শোলাকিয়া ঈদগাহে।
ঈদ জামাতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয় সরকারিভাবে। ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে এ দুটি ট্রেন আসে।
জামাত শেষে ট্রেন দুটি জামাতে অংশ নেওয়া মানুষদের নিয়ে আবার গন্তব্যে ফিরে যায়।
হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে ঈদের জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার কথা জানিয়েছেন শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ মিয়া জানান।
তিনি বলেন, “এমনিতেই কোরবানির আনুষ্ঠানিকতার কারণে দূর-দূরান্তের মানুষ না আসায় ঈদুল আজহার জামাতে অংশগ্রহণকারী কম হয়ে থাকে। এবারও তাই হয়েছে।”
ঢাকা রেঞ্জের পুলিশ সুপার কাজেম উদ্দীন বলেন, জামাত নির্বিঘ্ন করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। ওয়াচ টাওয়ারে পর্যবেক্ষণ, সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং ও ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন।
মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারী প্রতিষ্ঠার পর ১৮২৮ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্বপ্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির ওপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রথম অনুষ্ঠিত জামাতে সোয়া লাখ মুসুল্লি অংশগ্রহণ করেন বলে মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখি মাঠ’। সেখান থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে নাম পরিণত হয়েছে আজকের শোলাকিয়া মাঠে। বিশাল এই মাঠে মোট কাতার রয়েছে ২৬৫টি। প্রতি কাতারে পাঁচ শতাধিক মানুষ নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
এ ছাড়া কিশোরগঞ্জের অন্যান্য সব মসজিদেও শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।