কর্মস্থলে ফেরা: কুমিল্লায় বাস সংকটে যাত্রী ভোগান্তি

কোরবানির ঈদের লম্বা ছুটির পর একসঙ্গে অনেক মানুষ কর্মস্থলে ফেরার কারণে কুমিল্লায় পরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

তীব্র গরমের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত যানবাহন না পাওয়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসস্ট্যান্ডে কিংবা মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা।

শুধু কুমিল্লা শহর নয়; ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জাঙ্গালিয়া ও শাসনগাছা বাস টার্মিনাল, পদুয়ার বাজার, বিশ্বরোড, আলেখারচর বিশ্বরোড ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র।

কেউ কেউ তিন থেকে চার ঘণ্টা আগে বাসের টিকেট করেও বাস পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন।

কাউন্টার কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদের ছুটি শেষ দিন হওয়ায় ঢাকাগামী যাত্রী বেশি। একই সঙ্গে অনেকেই কুমিল্লা ছেড়ে যাওয়ায় এই ধরনের চাপ পড়েছে।

এ ছাড়া মহাসড়কের কোথাও কোথাও যানজট এবং জটলা থাকায় যাত্রীবাহী বাসের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। শনিবার বিকালে এই সঙ্কট আরো প্রকট হয়ে ওঠেছে।

এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুমিল্লার শাসনগাছা, জাঙ্গালিয়া ও ক্যান্টনমেন্ট বাস কাউন্টার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নয় দিনের ছুটির পর পেশাজীবী মানুষ ছুটছেন কর্মস্থলের উদ্দেশে। ঢাকার উদ্দেশে। যাত্রীদের চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত বাস না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বাস পাচ্ছেন না যাত্রীরা। নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর থেকে যেসব বাস ছেড়ে আসছে সেগুলোও পরিপূর্ণ।

কুমিল্লা থেকে গার্মেন্টস কর্মী আব্দুল হাকিম ঢাকায় যাবেন। অপেক্ষা করছেন আলেখারচর বিশ্বরোড এলাকায়। তিনি বলছিলেন, “এক ঘণ্টা ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু বাস পাচ্ছি না। আগামীকাল অফিস খোলা, ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলাম। এখন ঢাকায় ফেরার পথে চরম ভোগান্তি। এর মধ্যে আবার তীব্র গরমে অসহ্য লাগছে।”

ঢাকায় ব্যবসা করেন মোহাম্মদ আক্তার হোসেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আলেখারচর বিশ্বরোড এলাকায় অপেক্ষা করছেন এক ঘণ্টা ধরে। বাস না পেয়ে বলেন, “আগামীকাল অফিস-আদালত খোলা। এজন্য ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ। বাস পাচ্ছি না। অন্য কোনো যানবাহনও পাচ্ছি না। কখন গাড়িতে উঠতে পারব, বলতে পারছি না। তীব্র গরমে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

এশিয়া লাইনের বাসচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, “কুমিল্লায় যাত্রীর চাপ প্রচন্ড। আমরা ঢাকা থেকে খালি আসছি, কুমিল্লার যাত্রীদের ঢাকা পৌঁছানোর জন্য। তারপরও যাত্রীর চাপ কমছে না। লম্বা ছুটি শেষে আগামীকাল অফিস খোলা। এজন্যই সবাই ঢাকার দিকে ছুটছে।”

সন্ধ্যার মধ্যে পরিস্থিতি হয়তোবা কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে বলে জানান তিনি।

হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি ও কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার মো. খায়রুল আলম বলেন, “দীর্ঘ ছুটির পর হঠাৎ করে মানুষ একযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে। যার কারণে বাসের সংকট। সন্ধ্যার মধ্যেই এই সমস্যাটা কেটে যাবে। দাউদকান্দি টোল প্লাজা সবগুলো পয়েন্টে টোল আদায় করছে। মহাসড়কে এই মুহূর্তে কোনো যানজট নেই।”